প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তির আনন্দ ১৮ জনের
৮ জুলাই ২০১৮ ১৩:৫২ | আপডেট: ৮ জুলাই ২০১৮ ২০:৪৬
এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ৪১তম আসর বসছে রোববার (৮ জুলাই)। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরস্কার প্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
এবারের আসরে ২৫টি বিভাগে ৩১ জনকে দেয়া হচ্ছে পুরস্কার। যার মধ্যে ১৮ জন (আজীবন সম্মাননা বিভাগটি ছাড়া) প্রথমবারের মতো পাচ্ছেন দেশীয় চলচ্চিত্রের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা।
৪১তম আসরে আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন দেশীয় চলচ্চিত্রের দুই কিংবদন্তি অভিনয়শিল্পী ববিতা ও ফারুক।
এবারের আসরে ‘আয়নাবাজি’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয় সম্মান উঠতে যাচ্ছে নির্মাতা অমিতাভ রেজার হাতে। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করে দিলেন তিনি। মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি পেয়ে আনন্দিত অমিতাভ সারাবাংলাকে বলেন, ‘রাষ্ট্রের স্বীকৃতি নিশ্চয়ই আনন্দের। পরিচালক হিসেবে এই পুরস্কারটি পেয়ে আমি খুবই খুশি। সিনেমা নির্মাণ করি মানুষের জন্য। আমার প্রথম সিনেমা অনেক দর্শক দেখেছে বলে মনে করি। দর্শকের ভালো লাগার মতো আরও অনেক সিনেমা নির্মাণ করতে চাই। আশা করছি আগস্টে নতুন সিনেমার ঘোষণা দেব।’
প্রধান নারী চরিত্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেয়া হয়েছে যৌথভাবে। ‘অস্তিত্ব’ সিনেমার জন্য নুসরাত ইমরোজ তিশা এবং ‘শঙ্খচিল’ সিনেমার জন্য কুসুম শিকদার হয়েছেন সেরা অভিনেত্রী। আর এ দুজনেই পুরস্কারটি পাচ্ছে প্রথমবারের মতো।
পার্শ্বচরিত্রের অভিনেতা বিভাগেও দুজন হয়েছেন সেরা। তাদের মধ্যে অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু এর আগে ‘শঙ্খনাদ’ সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেও অভিনেতা আলীরাজ ‘পুড়ে যায় মন’ ছবির জন্য প্রথমবার পেলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
তানিয়া আহমেদ প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেন ‘কৃষ্ণপক্ষ’ সিনেমার জন্য। পার্শ্বচরিত্রের নারী অভিনেত্রী হিসেবে এই পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। আনুম রহমান খান সাঁঝবাতি প্রথমবার শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথমবার পেয়েছেন পুরস্কার।
শ্রেষ্ঠ গায়ক ও গায়িকা দুজনেই প্রথমবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তারা হলেন গায়ক ওয়াকিল আহমেদ ও গায়িকা মেহের আফরোজ শাওন।
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ঘ্রাণ (প্রযোজক এস এম কামরুল আহসান), শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘জন্মসাথী’ (প্রযোজক একাত্তর মিডিয়া লি: ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর) প্রথমবার পাচ্ছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
প্রথমবারের জন্য মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি আরও যারা পেয়েছেন তারা হলেন রুবাইয়াত হোসেন (শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা- আন্ডার কনস্ট্রাকশন), অনম বিশ্বাস ও গাউসুল আলম (শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার-আয়নাবাজি), ইকবাল আহসানুল কবির (শ্রেষ্ঠ সম্পাদক-আয়নাবাজি), রাশেদ জামান (শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক- আয়নাবাজি), শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা বিভাগে যৌথভাবে সাত্তার (নিয়তি) ও ফারজানা সান (আয়নাবাজি) এবং মানিক (শ্রেষ্ঠ মেকাপম্যান- আন্ডার কনস্ট্রাকশন)।
দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন এমন অনেকেই আছেন এবারের বিজয়ী। ‘আয়নাবাজি’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী এর আগে ‘মনপুরা’ সিনেমার জন্য পয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ‘চোরাবালি’ সিনেমার জন্য প্রথমবার খল চরিত্র বিভাগে পুরস্কার পেয়েছিলেন শহীদুজ্জামান সেলিম। এবারের আসরে দ্বিতীয়বারের মতো সেলিম পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তাও সেই খল চরিত্রেই, ‘অজ্ঞাতনামা’ সিনেমার জন্য।
গত ৪ এপ্রিল তথ্য মন্ত্রণালয় নাম ঘোষণা করে ২০১৬ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তদের চূড়ান্ত তালিকা। সর্বাধিক ৭টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে ‘আয়নাবাজি’। শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক, শ্রেষ্ঠ সম্পাদক, শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক এবং শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা। এছাড়া ৪টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে নাদের চৌধুরী পরিচালিত ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’। তিনটি করে পুরস্কার জিতেছে তৌকির আহমেদের ‘অজ্ঞাতনামা’ এবং গৌতম ঘোষ পরিচালিত যৌথ প্রযোজনার সিনেমা ‘শঙ্খচিল’।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৬ পেলেন যারা:
যৌথভাবে আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন চলচ্চিত্রের দুই কিংবদন্তি অভিনয় শিল্পী ববিতা ও ফারুক।
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র: অজ্ঞাতনামা, প্রযোজক ফরিদুর রেজা সাগর।
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: ঘ্রাণ, প্রযোজক এস এম কামরুল আহসান।
শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: জন্মসাথী, প্রযোজক একাত্তর মিডিয়া লি: ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
শ্রেষ্ঠ পরিচালক: অমিতাভ রেজা চৌধুরী, আয়নাবাজি।
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা প্রধান চরিত্র: চঞ্চল চৌধুরী, আয়নাবাজি।
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী প্রধান চরিত্র: যৌথভাবে তিশা, ছবি- অস্তিত্ব ও কুসুম শিকদার, ছবি- শঙ্খচিল।
শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রাভিনেতা: যৌথভাবে আলীরাজ, ছবি- পুড়ে যায় মন ও ফজলুর রহমান বাবু, ছবি- মেয়েটি এখন কোথায় যাবে।
শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রাভিনেত্রী: তানিয়া আহমেদ, কৃষ্ণপক্ষ।
শ্রেষ্ঠ খল-অভিনেতা: শহীদুজ্জামান সেলিম, অজ্ঞাতনামা।
শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী: আনুম রহমান খান সাঁঝবাতি, শঙ্খচিল।
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক: ইমন সাহা, মেয়েটি এখন কোথায় যাবে।
শ্রেষ্ঠ গায়ক: ওয়াকিল আহমেদ, ছবি- দর্পণ বিসর্জন, গান- অমৃত মেঘের বারি।
শ্রেষ্ঠ গায়িকা: মেহের আফরোজ শাওন, ছবি- কৃষ্ণপক্ষ, গান- যদি মন কাঁদে।
শ্রেষ্ঠ গীতিকার: গাজী মাজহারুল আনোয়ার, ছবি- মেয়েটি এখন কোথায় যাবে, গান- বিধিরে ও বিধি।
শ্রেষ্ঠ সুরকার: ইমন সাহা, গান- বিধিরে ও বিধি।
শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার: তৌকীর আহমেদ, অজ্ঞাতনামা।
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: রুবাইয়াত হোসেন, আন্ডার কনস্ট্রাকশন।
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: অনম বিশ্বাস ও গাউসুল আলম, আয়নাবাজি।
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক: ইকবাল আহসানুল কবির, আয়নাবাজি।
শ্রেষ্ঠ শিল্পনির্দেশক: উত্তম গুহ, শঙ্খচিল।
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: রাশেদ জামান, আয়নাবাজি।
শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ, আয়নাবাজি।
শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা: যৌথভাবে সাত্তার, ছবি- নিয়তি ও ফারজানা সান, ছবি- আয়নাবাজি।
শ্রেষ্ঠ মেকাপম্যান: মানিক, আন্ডার কনস্ট্রাকশন।
সারাবাংলা/পিএ