Tuesday 07 Oct 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তাহসানের সুরের অধ্যায়ের শেষ প্রহর!

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
৭ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:০৩

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সুরের মায়াজালে আবিষ্ট করেছেন এক প্রজন্মকে। তার গানে প্রেম এসেছে নিভৃতে, বিচ্ছেদে ভেসেছে অশ্রু, আবার ফিরে এসেছে আশার আলো। সেই প্রজন্মের অনেকের কাছেই তাহসান খান শুধু একজন সংগীতশিল্পী নন, জীবনের এক নরম অধ্যায়। কিন্তু সময়ের স্রোতে এবার যেন এক নতুন পর্বে পা রাখছেন এই প্রিয় শিল্পী— যেখানে সুর ধীরে ধীরে পেছনে সরে যাচ্ছে, জায়গা নিচ্ছে নীরবতা।

সম্প্রতি রাজধানীর একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন তাহসান। সেখানে উঠে আসে তার সংগীতজীবন নিয়ে ভাবনা। কিছুটা দ্বিধা, কিছুটা সতর্কতার সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত নই, এই বিষয়ে কথা বলার এটা সঠিক মঞ্চ কিনা। মানুষ এখন মঞ্চে বলা কথার একটা অংশ কেটে নিয়ে অন্য মানে বানিয়ে ফেলে।’

বিজ্ঞাপন

তবুও থামেননি। মৃদু হেসে যোগ করলেন, ‘আমার ভাই একবার বলেছিলেন, সংগীতশিল্পীদের জন্য ইন্ডাস্ট্রিতে সময়কাল খুব সীমিত। কেন তুমি ঝুঁকি নিচ্ছ? আমি তখন চাকরি ছেড়ে অ্যালবাম বানাতে গিয়েছিলাম। সে কথা আজও মনে পড়ে।’

সেই ঝুঁকি নিয়েই তাহসান আজকের তাহসান। ‘অন্যনাভাবে ভালোবাসা’, ‘চাই না আমি হতে’, ‘ইরশাদ’ কিংবা ‘আলো’—এসব গানের সুরে একসময় তরুণদের জীবনের মানে খুঁজে পাওয়া যেত। কিন্তু শিল্পীর সময়ের সীমাবদ্ধতার কথা যেন এবার নিজেই মেনে নিচ্ছেন তিনি।

‘আমি এটাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়েছিলাম,’ বলেন তাহসান, ‘শিল্পীর মেয়াদকাল হয়তো কম, কিন্তু শিল্প টিকে থাকে তার বিদায়ের পরেও।’

তার কথার ভেতরে যেন লুকিয়ে আছে এক মৃদু বিদায়ের ইঙ্গিত। হয়তো এ বিদায় সম্পূর্ণ নয়, বরং এক নতুন রূপান্তরের শুরু। তাহসান বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে, আমি ততদিনই কাজ করব, যতক্ষণ মানুষের ভালোবাসার শিখরে থাকব। কারণ এই ক্যারিয়ারে রিটায়ারমেন্ট বলে কিছু নেই, আছে ‘ভুলে যাওয়া’। ভুলে যাওয়ার ক্ষতটার চেয়ে ভালোবাসা নিয়ে বিদায় নেওয়াই ভালো।’

তার এই কথাগুলোতে পাওয়া যায় পরিণত এক শিল্পীর আত্মসমর্পণ—সময়ের কাছে, অনুভবের কাছে। যে জানেন, আলোচনার নয়, ভালোবাসার স্মৃতিতেই একজন শিল্পী বেঁচে থাকেন দীর্ঘদিন।

তাহসান হয়তো এখন গানের জগৎ থেকে একটু সরে দাঁড়াবেন। কিন্তু তার সৃষ্ট সুরগুলো? সেগুলো তো এখনও বাজে কারও হেডফোনে, ভেসে আসে কোনো বৃষ্টির বিকেলে, কারও নিঃসঙ্গ রাতের সঙ্গী হয়ে।

হয়তো এ কারণেই বলা যায়— তাহসানের সুর থামলেও, তার অনুভবের প্রতিধ্বনি এখনো চলমান। তার মতো শিল্পীরা কখনো ‘বিদায়’ নেন না; তারা শুধু মৃদুস্বরে বলে যান— ‘এবার একটু থামি।’

সারাবাংলা/এফএন/এএসজি

তাহসান খান সংগীতশিল্পী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর