শিরোপা–জয়ের স্বপ্ন…ঝলমলে আলো…বিশ্বমঞ্চের উত্তেজনা— আর সেই মঞ্চেই বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ হয় গর্বের সাথে। তিনি তানজিয়া জামান মিথিলা। মিস ইউনিভার্স–এর এবারের আসরে তিনি আশা জাগিয়েছিলেন, আলো ছড়িয়েছিলেন— কিন্তু শেষ পর্যন্ত মুকুট উঠেছে মেক্সিকোর ফাতিমা বশের মাথায়। তবু মুকুট হারিয়েও ভাঙেননি মিথিলা। বরং আরও দৃঢ়, আরও আত্মবিশ্বাসী, আরও পরিণত হয়ে উঠেছেন।
জামদানির শাড়ি, শাপলা ফুল— বাংলাদেশের সৌন্দর্য আর ঐতিহ্যকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরেছিলেন তিনি। ন্যাশনাল কস্টিউম রাউন্ডে দর্শকদের দৃষ্টি থমকে যায় তার দিকে। আরও এক ধাপ এগিয়ে— ফাইনাল রাউন্ডে সেরা ৩০–এ জায়গা করে নেন মিথিলা। আর ক্লোজডোর ইন্টারভিউয়ে— ১২১ দেশের প্রতিযোগীর মধ্যে পঞ্চম হয়েছিলেন তিনি! হ্যাঁ— সেখানে ফাতিমাকেও পেছনে ফেলেছিলেন!
দর্শকদের ভালোবাসাই তার সবচেয়ে বড় অর্জন— পিপলস চয়েজে দারুণ করেছিলেন তিনি। তাই মুকুট না পেলেও, হতাশ নন মোটেও। এক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানালেন— থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফেরার আগেই জানিয়ে দিলেন তার নতুন পথচলার ঘোষণা— “এবার নিয়মিত অভিনয়ে মন দেব।” “সিনেমায় সিরিয়াসলি কাজ করতে চাই।”
এখন পর্যন্ত তার অভিনয় ছিল একটি মাত্র ছবিতে— ‘রোহিঙ্গা’, পরিচালক হায়দার খান। দেশীয় সিনেমাতেও পেয়েছেন বেশ কিছু প্রস্তাব— কিন্তু মিথিলার স্পষ্ট কথা— ‘ভুল প্রজেক্ট নয়, ভালো গল্প দিয়ে অভিষেক চাই।’
১৯ দিনের ক্যাম্প তাকে বদলে দিয়েছে— সময় ব্যবস্থাপনা, শৃঙ্খলা, যোগাযোগ দক্ষতা, নিজেকে উপস্থাপনের কৌশল— সবই শিখেছেন নতুনভাবে। সিস্টারহুড— বন্ধুত্ব, সম্পর্ক, সংহতি— এসবও ছিল তার যাত্রার বড় অভিজ্ঞতা। আর সবচেয়ে বড় অনুভূতি— “মিস ইউনিভার্স আমাকে নতুন একজন মানুষ বানিয়েছে।
এদিকে বিতর্কের ঝড় বইেছে পুরো আয়োজনজুড়ে— দুই বিচারকের পদত্যাগ, নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন, মেক্সিকোর ফাতিমাকে অপমানের অভিযোগ— সব মিলিয়ে উত্তপ্ত ছিল পরিবেশ। তবু সবকিছু পেছনে ফেলে, ২৫ বছর বয়সী সমাজকর্মী ফাতিমা জিতেছেন শিরোপা।
মিথিলা হয়তো মুকুট পাননি— কিন্তু তিনি পেয়েছেন সম্মান, অভিজ্ঞতা, উন্নতি আর সবচেয়ে বড় কথা— বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা। এখন প্রশ্ন শুধু একটাই— বাংলাদেশের বড় পর্দায়… কখন ঝলমল করবেন তানজিয়া জামান মিথিলা?
কারণ তার গল্প— এখনও শুরুই হলো।