পাকিস্তানি শোবিজে তারকাদের পারস্পরিক মন্তব্য সবসময়ই আলাদা আগ্রহ তৈরি করে। বিশেষ করে যখন সেই মন্তব্য আসে নাতাশা বেইগের মতো শক্তিশালী, আত্মবিশ্বাসী একজন কণ্ঠশিল্পীর কাছ থেকে— আর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন নাদিয়া খান, যিনি একসময় টেলিভিশন স্ক্রিনের নিরঙ্কুশ প্রিয়মুখ ছিলেন।
নাতাশা বেইগ— হুনজা উপত্যকা থেকে দেশের প্রিয় কণ্ঠ…
কোক স্টুডিওর শিকওয়া/জওয়াবে শিকওয়া—এ গাওয়া সেই গায়িকা নাতাশা বেইগ এখনো অনুরাগীদের মুগ্ধ করে রাখছেন। তার কণ্ঠের আলাদা টেক্সচার, পাহাড়ি সুরের মিশেল এবং শক্তিশালী এক্সপ্রেশন তাকে একদম আলাদা জায়গায় দাঁড় করিয়েছে।
তার সাম্প্রতিক OST ‘জিন কি শাদি উনকি শাদি’ সামাজিক মাধ্যমে বেশ সাড়া ফেলেছে।
কিন্তু হঠাৎ প্রশ্ন— নাদিয়া খান পছন্দ করেননি নাকি গানটি?
একজন ভক্ত টিকটকে প্রশ্ন করেন— ‘নাদিয়া খান গানটি পছন্দ করেননি, এ নিয়ে আপনার কী মত?’ প্রশ্নটি ছিল সরাসরি, আর নাতাশাও দিলেন একেবারে নিজের মতো করে, মেপে বলা তবুও সৎ উত্তর।
নাতাশা বলেন— ‘ছোটবেলা থেকে আম্মুর কারণে নাদিয়া খানকে চিনি। তাকে সবসময় সুন্দর, জনপ্রিয়, বহুমুখী তারকা হিসেবে দেখেছি। কিন্তু তিনি তাদের একজন, যারা স্টারডমটা সুন্দরভাবে ধরে রাখতে পারেননি। সময়ের সঙ্গে তার জনপ্রিয়তা কমেছে— চার্মও হারিয়েছেন। তার বর্তমান ফেজটি ভালো যাচ্ছে না, তবে আমি এখনো তাকে পছন্দ করি।’
তার মন্তব্যের ভেতর সম্মান, অতীতের প্রশংসা, তবে সাম্প্রতিক সময়ের আচরণ বা অবস্থার প্রতি খোলামেলা সমালোচনা— সবই ছিল ব্যালান্সড।
এদিকে, নাতাশার কথার পরই মন্তব্যের বন্যা। কেউ লিখেছেন— ‘নাদিয়া খানকে একটু শান্ত হতে হবে।’ আরেকজন বলছেন— ‘অতিরিক্ত কাজ করলে মানুষ অতিরিক্তই লাগে।’ অনেকে আবার মনে করছেন, ‘নাদিয়া খান নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের প্রতি অযথা কঠোর হয়ে পড়েছেন।’
অন্যদিকে কেউ কেউ নাতাশাকেও রেহাই দেননি— ‘সমালোচনা নিতে জানেন না বলেই এমন বলছেন।’ অর্থাৎ, দুইপক্ষের সমর্থকই যথেষ্ট সক্রিয়।
নাদিয়া খান পাকিস্তানের বিনোদনজগতের একদা ‘মর্নিং শো কুইন’। দীর্ঘদিনের জনপ্রিয়তা, অগণিত ভক্ত— কিন্তু ডিজিটাল যুগে আলোচনার কেন্দ্র বদলায় দ্রুত, ট্রেন্ডও বদলায় মুহূর্তে। এ কারণে অনেক তারকাই হঠাৎ করে সমালোচনার মুখে পড়েন বা জনপ্রিয়তার গ্রাফ নিচে নেমে যায়। নাতাশার মন্তব্য সেই বাস্তবতাকেই যেন সামনে এনে দিল।
তারকাদের জন্য বার্তা— শান্ত থাকা, শিখে চলা আর বদলে যাওয়া। নাতাশা নিজের কথার শেষে বলেছেন— ‘আমি চাই সব তারকাই যেন তাদের স্টারডমটা ভালোভাবে ধরে রাখতে পারে।’ এ যেন অভিজ্ঞ শিল্পীর কাছ থেকে জুনিয়র কিংবা সিনিয়র— সবাইকে দেওয়া এক আন্তরিক বার্তা।
নাতাশা বেইগ ও নাদিয়া খান—দুই জনই নিজ নিজ জায়গায় প্রতিষ্ঠিত, আলোচিত, জনপ্রিয়। একজনের মন্তব্যে আরেকজনের সমালোচনা হলেও এটি শোবিজ জগতের স্বাভাবিক অংশ।
তবে এসব আলোচনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়— স্টারডম শুধু পাওয়া নয়, ধরে রাখাও এক ধরনের শিল্প।
আর দর্শকরা? তারা সবসময়ই গল্প শুনতে ভালোবাসে—তারকাদের আলো-ছায়ার গল্প।