আমার দিকে তাকালে গান মনে করতে পারতেন: স্বাগতা
২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৮:৫২
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক
‘প্রত্যেকটা আলোকিত মঞ্চের পেছনে থাকে অন্ধকার। স্বপ্নটা ওই রকম। জীবনটাও ওই রকম’- সঞ্জীব চৌধুরীর ঠোঁটে এ সংলাপ শুনতে পাই যেখানে, সেখানে তিনি অভিনেতা। ওই নাটকে সঞ্জীবের সহশিল্পী ছিলেন জিনাত শানু স্বাগতা। সঞ্জীবের জন্মবার্ষিকীতে স্বাগতা খুলে বসলেন স্মৃতির ডালি
‘সুখের লাগিয়া’ নামে একটি নাটকে অভিনয় করতাম। সেটা ছিলো ২০০৫-০৬ এর দিকে। ওটা আমার দ্বিতীয় নাটক। প্রথম নাটক আব্দুল্লাহ আল মামুনের ‘এক জনমে’। সুখের লাগিয়া সঞ্জীবদারও প্রথম নাটক। সঞ্জীব দার সঙ্গে পরিচয়টা তার আগেই হয়ে গেছে। কীভাবে? তিনি ও বাপ্পা মজুমদার একসঙ্গে গান করতেন। আর বাপ্পা দা আমার পাড়াতো ভাই। পাশের বাসায় থাকেন। বাপ্পা মজুমদারের বাবা-মা গান করেন। আমার বাবাও গান করতেন। যেহেতু সংগীত পরিবার আমাদের, আগে থেকেই তাই যোগাযোগ ছিলো।
বাবার মাধ্যমেই সঞ্জীব দাকে প্রথম চিনি। তারপর আস্তেধীরে কখন যে তার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিলো, সেটা নিজেও জানি না। সেটা হয়তোবা ওই নাটক করার সময় অথবা অন্য কোনো একটা সময়ে। যে বন্ধুত্বটা, আমরা যখন একসঙ্গে অভিনয় করেছি সেখানে রিফেক্টেড হয়েছে। মানুষ হিসেবে তিনি অসাধারণ ছিলেন!
ভীষণ মিস করি ওই মানুষগুলোকে। ওই সময় আমার বন্ধু ছিলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন, তিনি নেই। সঞ্জীব দা আমার বন্ধু ছিলেন। আমার বাবাও কিন্তু আমার বন্ধু ছিলেন। বন্ধুদেরকে হারিয়েছি, বা হারাচ্ছি যতো দিন যাচ্ছে!
সঞ্জীব দা আমাকে মাঝে মধ্যে কনসার্টে নিয়ে যেতেন। কারণ সব লিরিক আমার মুখস্ত থাকতো। আমার মুখের দিকে তাকালে তিনি গান মনে করতে পারতেন।
এতো সুন্দর সুন্দর লেখা তার কাছ থেকে পেয়েছি! দলছুটের লাস্ট যে অ্যালবাম ছিলো- জোসনাবিহার। ওখানে একটা গান আছে- ‘ধরতে গিয়ে হেরে গেছি, দেখতে গিয়ে থেমে গেছি, হাত বাড়ালেই কেউ নেই, একা নিজে।’ দিস ইজ লাইফ! তিনি একটা লাইনের মধ্যে পুরো জীবনকে বলতে পেরেছেন।
গান-কবিতা এসব নিয়েই সঞ্জীব দার সঙ্গে কম্যুনিকেট হতো। কারণ আমি লিরিকফ্রেন্ডলি মানুষ। ছোটবেলা থেকেই লিরিকের মধ্যে বেড়ে উঠেছি তো! তিনি সেটা বুঝতেন, অনেক লিরিক শেয়ার করতেন আমাদের সঙ্গে। আমরা শুনতাম। আগে থেকেই এই ফ্রেন্ডশিপ ছিলো বলেই একসঙ্গে অভিনয় করতে কোনো কষ্ট হয়নি। তখন নিজেকে অভিনেত্রী হিসেবে দাবি করতাম কম। প্রচুর গান গাইতাম। সংগীতশিল্পী ছিলাম। সে কারণে সঞ্জীব দার সঙ্গে অভিনয় করতে ভীষণ ভালো লেগেছিলো।
সঞ্জীব দা চলে গেছেন। কিন্তু তিনি তো কিংবদন্তি। তার মেয়ের নামও রেখে গেছেন কিংবদন্তি। দিস ইজ অ্যামেজিং!
সারাবাংলা/কেবিএন