উত্তমের মেকআপ ঘর
২৪ জুলাই ২০১৮ ১৪:৪৯
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক ।।
প্রথমবার আছড়ে পড়েছিল ঝড় ২৪ জুলাই ১৯৮০তে। এনটি-ওয়ান স্টুডিওতে ‘নায়কের’ বড় সাধের মেকআপ রুমে। ৩৮ বছর আগে, সিনেমাপ্রেমীদের কষ্টে ভাসিয়ে মাত্র ৫৮ বছর বয়সে চলে গিয়েছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার।
আর দ্বিতীয় ঝড়টি হয়েছিল ২০১৮-তে, এপ্রিল মাসে। প্রায় ৯০ বছরের পুরনো, ১২ বিঘা জমি জুড়ে গড়ে ওঠা স্টুডিওর অহঙ্কার-অলঙ্কার হিসেবে বিরাজমান উত্তমকুমারের মেকআপ রুম। এই ঘরে বসেই ‘নায়ক’ মেকআপ করেছেন ‘সব্যসাচী’, ‘সন্ন্যাসী রাজা’, ‘আলো আমার আলো’, ‘কমললতা’, ‘জতুগৃহ’ সহ আরও অনেক ছবির।
উত্তম প্রয়াণে আজ (২৪ জুলাই) ৩৮ বছর ধরে সেই স্মৃতিই বয়ে চলেছে মহানায়কের এই সাজঘর। এপ্রিলের ঝড়ে তা ভেঙে পড়লেও এখন নতুন সাজে গড়ে উঠছে। জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
১০ বাই ১২ ফুট মাপের সেই ঘরের অ্যাসবেস্টসের ছাদের নীচে দেয়া হয়েছে ফলস সিলিং। দেয়ালে দুধ সাদা প্যারিস। কাঠের জানালা রাঙানো হয়েছে সাদা রঙে। মেঝেতে বসেছে সাদা টাইলস। রং করা হয়েছে ‘নায়ক’-এ ব্যবহৃত সেই খাট, টেবিল, চেয়ার, আয়না, আলনা, ইজি চেয়ার। খাটের সামনে রাখা মহানায়কের খড়ম। নতুন সাজে যা উন্মোচিত হবে মঙ্গলবার। মহানায়কের ৩৮ তম মহাপ্রয়াণে। ‘নায়ক’-এর ছবিতে ফুল-মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে, উত্তম অনুরাগীদের জন্য আজ থেকেই আবার অবারিত উত্তমের সাজঘর।
স্টুডিও মালিক রামলাল নন্দীর কথায়, ‘ওঁর শেষ ছবি ‘‘ওগো বধু সুন্দর’’র শুটিং হয়েছিল টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে। কিন্তু উনি মেক-আপ করতেন এখানেই। সেই ১৯৮০ সালের পর থেকে আজ পর্যন্ত ওর মেক-আপ রুম একান্ত ওরই রয়ে গিয়েছে। একটা সেগুন কাঠের খাট, টেবিল ইজি চেয়ার, সে দিন থেকে নিয়মিত আমার কর্মীরা ওর ছবিতে ফুল মালা দেয়। জল মিস্টি দিয়ে ধুপ দেয়। কোনও বছরে ব্যাতিক্রম হয়নি।
স্টুডিও জুড়ে রয়েছে প্রায় ২৫ টি মেক-আপ রুম। কিন্তু আর কোনো নায়ক নায়িকার জন্য কখনও এমন দৃষ্টান্ত গড়ে ওঠেনি। সুচিত্রা সেনের জন্য আলাদা মেকআপ রুম নেই? রামলাল বাবুর কথায় ‘না’। উনি যখন শুটিং করতেন, তখন ১৫-২০ দিনের জন্য আলাদা থাকত তার ঘর। কিন্তু সংরক্ষণ কিছু করা নেই, যা রয়েছে উত্তম কুমারের জন্য।
কেমন ছিল সেই সময় এই মেকআপ রুমের পরিবেশ? তখন কার না পা পড়েছে এই ঘরে। সুচিত্রা-সুপ্রিয়া-সাবিত্রী-মাধবী-সৌমিত্রবাবু সকলেই আসতেন। সামনের বাগানে আড্ডা জমাতেন। বিকেল হলেই মুড়ি বাদাম চা কফির অর্ডার হতো। বললেন রামলাল।
সারাবাংলা/পিএ