একটি মৃত্যু কাছে টানলো সবাইকে
২৬ জুলাই ২০১৮ ১৩:০৬
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক ।।
‘মৃত্যু সব সময় দূরেই ঠেলে দেয়না, কাছেও নিয়ে আসে’। ‘ডুব’ সিনেমা মুক্তির সময় পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং প্রযোজক এই লাইনটি প্রায়ই বলতেন।
ঢাকাই সিনেমা জগতের এই লাইনটির যথার্থ মিল পাওয়া গেল বলিউড জগতে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বলিউড সুপারস্টার শ্রীদেবীর মৃত্যুর পর কেমন কাছাকাছি চলে এলেন দুই ঘরের চার সন্তান।
বলিউডের নামকরা প্রযোজক বনি কাপুর। তার প্রথম স্ত্রী মোনা সুরি, মারা যান ২০১২ সালে। বনি-মোনা দম্পতির সন্তান অর্জুন কাপুর ও অনুশুলা। বনির দ্বিতীয় স্ত্রী শ্রীদেবী। জাহ্নবী কাপুর ও খুশি কাপুর হলেন বনি-শ্রীদেবী দম্পতির সন্তান।
শ্রীদেবী মৃত্যুর আগে দুই ঘরের সন্তানদের একসঙ্গে দেখা যায়নি কখনো। কিন্তু শ্রীদেবী মৃত্যুর পর এখন অর্জুন কাপুন, অনুশুলা, জাহ্নবি এবং খুশি থাকছেন একসঙ্গেই। কীভাবে বনি কাপুরের চার সন্তান একসঙ্গে হলেন, সেই কথাই সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ৬২ বছর বয়সী বনি।
স্পটবয়কে দেয়া সাক্ষাৎকারে বনি বলেন, ‘আমি আমার চার সন্তানের জন্য সত্যি খুব সৌভাগ্যবান। তারা একে অপরকে অনেক ভালবাসে এবং তারা যে একসঙ্গে হয়েছে, তার জন্য আমি আনন্দিত। এটা আসলে যে কোনো সময়ই হতে পারত। কিন্তু বিষয়টি ঘটলো একটা অপ্রত্যাশিত ঘটনার পর। এই চারজনের সঙ্গেই আমার রক্তের সম্পর্ক। তারা এখন আমার সঙ্গে আছে, আমার এখন অনেক আনন্দ।’
চার সন্তানকে একসঙ্গে কাছে পাওয়ার গল্পে বনি কাপুর সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন বড় ছেলে অর্জুনের প্রতি। তিনি জানান, ‘আমি চারজনের কাছেই কৃতজ্ঞ। তবে হ্যাঁ, অর্জুনকে একটু বেশি ধন্যবাদ, কারণ সে চারজনের মধ্যে সবেচেয় বড়।’
শুধু অর্জুন নয়, বনি কাপুর অনুশুলার প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। ‘শ্রীদেবীর মৃত্যুর পর অর্জুন ও অনুশালা আমাকে, জাহ্নবী ও খুশিকে মানসিকভাবে অনেক সাহায্য করেছে। শ্রীদেবীর মৃত্যুর পর অর্জুন দুবাই গিয়েছিল আমার পাশে থাকতে। আর মুম্বাইতে ছিল অনুশুলা। সে জাহ্নবি ও খুশির পাশে ছিল। তাদের ধারণা ছিল যে তারা একসঙ্গে থাকলে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু তা হয়নি। আর এখন তাদের বাবাকে প্রয়োজন। আমি নিশ্চই তাদের ঘিরে থাকব।’ জানান বনি কাপুর।
অর্জুনের ভাষ্য মতে চারজন একসঙ্গে থাকার বিষয়টা মূলত তার বাবার পাশে থাকার জন্যই। এ বিষয়ে গত মাসে টুইটারে তার মনের ভাব জানিয়েছেন অর্জুন কাপুর। অর্জুন লিখেছিলেন, ‘জীবনের প্রতিটি সেকেন্ডে আমি আর অনুশুলা আমাদের মা’কেই বয়ে বেড়াচ্ছি। তার আশা ছিল আমরা যেন আমাদের বাবার পাশে থাকি।’
তবে অর্জুনের মধ্যে তার সৎ বোন জাহ্নবি ও খুশির জন্য আছে ভালোবাসা, স্নেহ ও সম্মান। জাহ্নবির পোশাক নিয়ে টুইটারে মাঝেমধ্যেই সমালোচনার ঝড় উঠতো। তখন অর্জুন বিভিন্ন মন্তব্যের মাধ্যমে জাহ্নবির পাশে ছিল। শেষ ‘ধড়ক’ সিনেমার জন্যও জাহ্নবিকে শুভ কামনা জানিয়েছেন অর্জুন, করেছেন প্রশংসা। আর অনুশুলাকে হাতছাড়া করছে না জাহ্নবি ও খুশি। ছবিতে, ভ্রমণে, আড্ডায় তিনজনকে পাওয়া যাচ্ছে একসঙ্গে।
আর এভাবে দীর্ঘ বছরের দূরত্ব ঘুচলো চার ভাই বোনের। কিন্তু এই মিলন ঘটলো জীবনের বিনিময়ে। একটি মৃত্যু কাছে টেনে নিয়ে এলো সবাইকে।
সারাবাংলা/পিএ/টিএস