কমল-ফিরোজা : জন্ম যাদের একই দিনে
২৮ জুলাই ২০১৮ ১৬:৩৪
এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
কমল দাশগুপ্ত। বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথিতযশা সুরকার, সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক। অন্যদিকে ফিরোজা বেগম প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী। নজরুল সঙ্গীতের সম্রাজ্ঞী। কমল দাশগুপ্ত এবং ফিরোজা বেগম, দুজনের মধ্যে আছে বেশকিছু মিল। প্রথমত তারা দুজনই গানের মানুষ। বাংলা সঙ্গীত জগতের দুই অনন্য সাধারন প্রতিভা। একজন সুরের জাদুকর অন্যজন কন্ঠের মায়াজালে মোহিত করেছেন সবাইকে। কমল দাশগুপ্তের হাত ধরে নজরুল সঙ্গীতে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন ফিরোজা বেগম।
দ্বিতীয়ত কমল দাশগুপ্ত এবং ফিরোজা বেগম স্বামী স্ত্রী। ১৯৫৫ সালে ফিরোজা বেগম আর কমল দাশগুপ্ত বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন।
তৃতীয় মিল হচ্ছে কমল দাশগুপ্ত আর ফিরোজা বেগমের জন্মদিন একই মাসের একই তারিখে। কমল দাশগুপ্ত জন্মগ্রহণ করেন ১৯১২ সালের ২৮ জুলাই, যশোরে। অন্যদিকে ফিরোজা বেগমের জন্ম ১৯৩০ সালের ২৮ জুলাই, গোপালগঞ্জে।
কমল দাশগুপ্ত ও ফিরোজা বেগমের দুই পুত্র শাফিন আহমেদ ও হামিন আহমেদ। বাবা-মায়ের জন্মদিনে তাদের আনন্দও আর সবার চেয়ে কিছুটা বেশি। ২৮ জুলাইকে বাংলা সংগীতের এক মহান দিবস বলে মত দিয়েছেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘মাইলস’-এর এই দুই সদস্য। বলেছেন, কমল দাশগুপ্ত ও ফিরোজা বেগমের জন্মদিনটি একই দিনে। এইদিনটি বাংলা সংগীতের এক মহান দিবস। তারা যেখানেই থাকুন তাদেরকে জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা!
কমল দাশগুপ্ত ভজন সঙ্গীতের সুর দিয়ে প্রথম জীবনে আলোচনায় আসেন। অসংখ্য হিন্দি ভজন, সন্তু কবীরের ভজন, যুথিক রায়ের কণ্ঠে মীরার ভজন ও গোবিন্দ দাসের ভজনে সুর করেছিলেন কমল। এছাড়া, তার জনপ্রিয় বাংলা গানের সংখ্যাও অনেক। ‘কত দিন দেখিনি তোমায়’, ‘ভালোবাসা মোরে ভিখারি করেছে’, ‘পৃথিবী আমারে চায়’, ‘এমন বরষা ছিল সেদিন’, ‘দুটি পাখি দুটি তীরে’, ‘গভীর নিশীথে ঘুম ভেঙে যায়’, ‘আমার যাবার সময় হলো’, ‘তুমি হাতখানি যবে রাখো মোর হাতের পরে’, ‘ঘুমের ছায়া চাঁদের চোখে’, ‘আমি বনফুল গো’ প্রভৃতি জনপ্রিয় গানের সুরকার তিনি।
কমল দাশগুপ্ত চলচ্চিত্রে রবীন্দ্রসংগীত ব্যবহার করেছেন। এছাড়াও, সিরাজউদ্দৌলা নাটকে কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গেও কমল দাশগুপ্ত সংগীত পরিচালনা করেছিলেন।
ফিরোজা বেগমের শুরুটাও কমলদাশগুপ্তের হাত ধরেই। ১৯৪০ পরপর কমল দাশগুপ্তের তত্ত্বাবধানে বিখ্যাত গ্রামোফোন কোম্পানী এইচএমভি থেকে তার উর্দু গানের রেকর্ড হয়। এ রেকর্ডের ‘ম্যায় প্রেম ভরে, প্রীত ভরে শুনাউ’ আর ‘প্রীত শিখানে আয়া’ শিরোনামের দুটি গান সেসময় বেশ জনপ্রিয় হয়। এর আগে মাত্র দশ বছর বয়সেই প্রথম অল ইন্ডিয়া রেডিওতে গান পরিবেশন করে পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশ) পরিচিতি পেয়ে যান ফিরোজা।
ফিরোজা বেগমের জন্ম ১৯৩০ সালের ২৮ জুলাই ফরিদপুরের গোপালগঞ্জ মহকুমার (বর্তমান জেলা) রাতইল ঘোনাপাড়া গ্রামের এক মুসলিম জমিদার পরিবারে। তার বাবার নাম খান বাহাদুর মোহাম্মদ ইসমাইল এবং মায়ের নাম বেগম কওকাবুন্নেসা। শৈশবেই তার সঙ্গীতের প্রতি অনুরাগ জন্মে। ১৯৫৪ সাল থেকে কলকাতায় বসবাস করতে শুরু করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন।
সারাবাংলা/টিএস/পিএম