দেশের হলে দেশি ছবি নেই
২ আগস্ট ২০১৮ ১৮:০৬
এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
গেলো জুলাই মাসের ২০ তারিখে মুক্তি পেয়েছিলো ‘সুলতান’। ২৭ তারিখে এসেছে ‘ভাইজান এলো রে’। আগামীকাল শুক্রবারে (৩ আগস্ট) দেখানোর জন্য প্রস্তুত আছে ‘ফিদা’। তিনটি ছবির মধ্যে মিল হলো এর সবকটিই ভারতীয় ছবি। এছাড়া এই তিন সপ্তাহে কমপক্ষে তিনটি হলিউডি সিনেমা প্রদর্শিত হয়েছে দেশের সিনেমা হলে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো জুলাইয়ের ২০ থেকে ৩ আগস্ট- এই তিন সপ্তাহে দেশের একটি ছবিও মুক্তি পায়নি। সবেধন নীলমনি হয়ে যে একটি ছবি চলেছে মফস্বলের হলগুলোতে, সেই ‘পোড়ামন ২’ মূলত গেলো ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমা।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বিষয়টিকে বাংলা চলচ্চিত্রের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন। সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে তিনি বলছেন, ‘বিদেশি সিনেমাগুলোর সঙ্গে দেশিয় সিনেমা টক্কর দিতে ভয় পাচ্ছে। ফলে বারবার তাদেরকে মুক্তির তারিখ পিছিয়ে দিতে হচ্ছে। কলকাতার ছবিগুলো বাংলাদেশের বাজারকে মাথায় রেখে নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু যেগুলো দেশিয় তার বাজার শুধুই বাংলাদেশ। ফলে আমাদের ছবিগুলো বাজেট থাকে কম। আর কম বাজেটের ছবিগুলো এখন আর হল মালিকরা চালাতে চায় না।’
আরও পড়ুন : আবারও বাহামায় বিবার-বল্ডউইন
গুলজার দাবী করছেন, ‘সাফটায় আওতায় যে ছবিগুলো আসছে, তার বেশিরভাগই অবৈধ। তাছাড়া বাংলাদেশ থেকে যে ছবিগুলো যাচ্ছে তার বেশির ভাগই পুরনো ছবি। ফলে আমদানী-রপ্তানীর সঠিক নিয়ম মানা হচ্ছে না। সরকারের উচিত হবে দ্রুত এ দিকটিতে দৃষ্টি দেয়া।’
গুলাজরের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। তিনি মনে করছেন, এমন অসম বিনিময় বাংলাদেশের সিনেমা সংস্কৃতির জন্য আশংকাজনক। সারাবাংলাকে তিনি বলেছেন, ‘সাফটা আইনে শিক্ষামূলক সিনেমা আসার কথা উল্লেখ রয়েছে। অথচ আসছে সুলতান-ভাইজানের মতো নিম্নমানের বাণিজ্যিক সিনেমা। এটা খারাপ। বাংলা সিনেমা বাঁচাতে হলে এমন অসম বিনিময় এখনই বন্ধ করতে হবে।’
বেশ কয়েকটি যৌথ প্রযোজনার সিনেমা পরিচালনা করেছেন অনন্য মামুন। যুক্ত আছেন সিনেমা আমদানিতেও। তার কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিলো আমদানী করা সিনেমা বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য কি আদৌ হুমকি? উত্তরে মামুন বলেছেন, ‘এটা বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য অবশ্যই হুমকি। আমদানি করে আপনি ইন্ডাস্ট্রি বাঁচাতে পারবেন না। আপনার নিজস্ব ছবি লাগবে। অবশ্যই কোয়ালিটি ছবি। নাহলে গোটা বাজারটাই দখল করে ফেলবে অন্যকেউ।’
আরও পড়ুন : নায়ক না হয়ে আসছেন শাকিব
এদিকে আসছে সপ্তাহে (১০ আগস্ট) মুক্তি পাবে দেশিয় ছবি ‘ফিফটি ফিফটি লাভ’। শেষ তিন সপ্তাহে যে তিনটি ভারতীয় সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, মানের দিক থেকে এই ছবিটি এদের ধারে কাছেও নেই। ফলে ছবিটি নিয়ে খুব একটা আশা করছেন না কেউ।
অনন্য মামুন বলছেন, ‘এই পরিস্থিতি নিয়ে সব পক্ষকেই সরকারের সঙ্গে বসে কর্ম পরিকল্পনা ঠিক করা উচিত। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষকেও দেশের জন্য ভাবতে হবে। আর নির্মাতাদেরকে মানতে হবে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত। তাহলেই হয়তো পরিস্থিতি কিছুটা ভালোর দিকে বদলাবে।’
সারাবাংলা/টিএস/পিএম