সংগীত নিয়ে এ আর রেহমানের নতুন সফর
২৩ আগস্ট ২০১৮ ১৫:৪৪
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক ।।
প্রথমবারের মতো কোনো অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন অস্কারজয়ী ভারতীয় সংগীত পরিচালক এ আর রেহমান। অনুষ্ঠানটি সংগীত বিষয়ক, তবে এটি কোনো টিভিতে প্রচার হবে না। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দেখা যাবে এই অনুষ্ঠান। নতুন এই শোয়ের নাম ‘হারমোনি’।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানাচ্ছে, শোয়ে রেহমান চারজন মিউজিশিয়ানের সঙ্গে কথা বলবেন, যাদের প্রতিভা সম্পর্কে সাধারন দর্শকদের কোনও ধারণাই নেই। ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চল যেমন মুম্বাই, মণিপুর, সিকিম এইসব জায়গায় ঘুরে রেহমান সংগীতশিল্পীদের সঙ্গে তাদের সংগীত জীবন, কষ্ট ও অর্জনের কথা শুনবেন। আর এমন অভিনব ধারণা নিয়ে অনুষ্ঠানটি নির্মাণ করা হয়েছে বলেই উপস্থাপক হতে রাজি হয়েছেন এ আর রেহমান।
সঞ্চালক হিসেবে নিজের প্রথম অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে রেহমান বলেন ‘আমি কিন্তু অভিজ্ঞ হোস্ট নই। তাই আমার কাছ থেকে কোনও রকম পেশাদার ম্যাজিক আশা করবেন না! এই শো করার ফলে আমার বিরাট একটা প্রাপ্তি হয়েছে। অসংখ্য নতুন নতুন বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। আমি ১১ বছর বয়স থেকে স্টুডিও’র কি-বোর্ড বাজাচ্ছি। লাইভ অর্কেস্ট্রার সঙ্গে আমার পরিচিতিটা খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। সেতার, তবলা, বীণা এই সব কিছু আমি খুব অল্প বয়স থেকে শুনে আসছি। তাই এসবের শ্রুতিমাধুর্য আমার কানে গেঁথে গেছে। আর যেসব সংগীতশিল্পীরা তখন এই সব বাদ্যযন্ত্র বাজাতেন, তারা সকলেই আমার তুলনায় অনেক বড় ছিলেন।’
এ আর রেহমান সুর নিয়ে নিরীক্ষা করতে পছন্দ করেন। সুরের বৈচিত্রপূর্ণ বৈশিষ্ট নিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্লাসিক্যাল মিউজ়িক আমার প্ৰথম পছন্দ। আমার মনে হয়, এই ভালোবাসাটা ভারতীয়দের রক্তে বইছে। বিভিন্ন রাগ যেমন পিলু, শিবরঞ্জনীর ওপরে যেসব গান বানানো হয়, সেই গানের শ্রোতা অনেক বেশি। আমার মতে, কোনও রাগের ওপরে ভিত্তি করে যখন কোনও গান বানানো হয়, সেটা একজন সংগীত পরিচালকের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ রাগের মাধ্যমে শ্রোতাদের গানের প্রতি আকৃষ্ট করা খুব কঠিন। আমাদের দেশে সংগীত পরিচালক নৌশাদ, মদন-মোহন, এস ডি বর্মণ এরা সকলেই খুব নিখুঁতভাবে এটা করে এসেছেন।’
রেহমান ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন রেডিও শোনার চল আবার ফিরে আসুক। কারণ রেডিও একজন শ্রোতাকে সাহায্য করে গানের মাধ্যমে কল্পনা করতে, নিজের অভিব্যক্তি এভাবে প্রকাশ করলেন তিনি। ভারতের কোন রাজ্য আপনার মনে হয় সংগীতে সমৃদ্ধ? এমন প্রশ্নের জবাবে ‘পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, পঞ্জাব এবং কেরেলাকে এগিয়ে রাখেন রহমান। আর বিদেশের মধ্যে বলব ইংল্যান্ডের কথা। ওখানকার গান, কবিতা, হেরিটেজ খুবই সমৃদ্ধ। ভারতের সেই স্থান নেওয়াটা শুধু এখন সময়ের অপেক্ষা’।
রেহমান এত বছর ধরে সংগীত পরিচালনায় থাকলেও কোনও রিয়্যালিটি শোয়ের বিচারক হননি। বললেন, ‘কারও বিচার করাটা খুব কঠিন কাজ। রিয়্যালিটি শোয়ে ছোট ছোট বাচ্চারা যখন গায়, আর তার পরে যখন তাদের ভুল-ত্রুটি শোধরানোর জন্য কিছু বলা হয়— সেই ব্যাপারটাই সবচেয়ে কঠিন। আমাকে যদি এ রকম বলতে বলা হয়, আমি বোধহয় দু’সপ্তাহ ঘুমোতে পারব না।’ নিজের পরে ভারতের মিউজ়িক ম্যাপে কাকে উনি সবচেয়ে প্রতিভাবান মনে করেন? জানালেন, ‘সেভাবে কোনও দিন ভাবিনি। আমি সব সময়ে চেয়েছি, সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দিতে। আমার যে মিউজ়িক কলেজ আছে, সেখানে সংগীত নিয়ে যাবতীয় খুঁটিনাটি শেখানো হয়। শুধু মাত্র গান গাওয়া নয়, গানকে বোঝা, নোট লেখা, সমাজকে স্টাডি করা এই সব কিছুই শেখানো হয়।’
সারাবাংলা/পিএ/পিএম