রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
একটি মায়াবী মুখ। চোখে কাজল আর ঠোঁটে লিপস্টিক। নাতিদীর্ঘ চুল। কখনও একটি টিপ জায়গা করে নেয় কপালের ঠিক মাঝখানটায়। সাবিলা নূর এভাবেই প্রতিমারূপে ধরা দেন বোকাবাক্সের পর্দায়। মায়াবী মুখে যেন আছড়ে পড়ে হেলেন অব ট্রয়ের সৌন্দর্য। তবে সাবিলার জন্য কোন নগরী ধ্বংস হয়নি। বরং তিনি সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেতেছেন। সৌন্দর্য আর অভিনয়ের মিশেলে তিনি এ সময়ের ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
ঈদুল আজহায় সাবিলা নূর একাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন। সেসব নাটক থেকে তিনি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন। তিনি মনে করেন এই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তাকে ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে। নিজের অভিনীত ঈদের নাটক নিয়ে সাবিলা সারবাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন। নাটকের পাশপাশি নিজের ক্যারিয়ার, ব্যক্তিগত কিছু বিষয় নিয়ে গল্প করেছেন।
- ঈদ কেমন কাটলো?
পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে নিতেই ঈদ কেটে গেছে। ঈদের পর পরই আমার পরীক্ষা। পরীক্ষা বলে কথা। আনন্দের মাঝেও চিন্তা থেকে যায়। তবে খারাপ কাটেনি ঈদ। খুব ভালো কেটেছে।
- পড়াশোনার পাশাপাশি অভিনয় করছেন। সমন্বয় করেন কিভাবে?
দুটোকে সমন্বয় করা আমার জন্য কিছুটা কঠিন মনে হয়। তবু করতে হয়। পড়াশোনা বাদ দিয়ে অভিনয় করা সম্ভব না। আবার অভিনয়ও বাদ দিতে পারব না। অভিনয় আমার ভালোলাগার জায়গা। কষ্ট হলেও সমন্বয় করতে হয়। পড়ার সময় পড়া আর কাজের সময় কাজ-আমি এই বাক্যে বিশ্বাসী।
আরও পড়ুন : পিছিয়ে গেলেন জয়া
- ঈদে একাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন। এরমধ্যে নিজের ভালো লেগেছে এমন কয়েকটি নাটকের নাম জানতে চাই।
এবার ঈদে বেছে বেছে বেশকিছু নাটকে অভিনয় করেছি। মানের ব্যাপারে সচেতন ছিলাম। যদিও এমন কথা অনেক শিল্পীরাই বলে থাকেন। যেসব নাটকে অভিনয় করেছি তার মধ্যে নিজের ভালোলাগার নাটকের মধ্যে রয়েছে হিমেল আশরাফের ‘সব গল্প রূপকথা নয়’। এটার গল্প ভিন্ন। নতুন একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। এছাড়া মাবরুর রশীদ বান্নাহর ‘কাঁদব না’, সাগর জাহানের ‘কথা রেখেছিলাম’। এগুলো ছাড়াও যেসব নাটকে অভিনয় করেছি সবগুলোই আমার ভালোলাগার নাটক।
- নিজের নাটক ছাড়া অন্য কারও নাটক দেখা হয়?
সত্যি কথা বলতে নিজের নাটকই দেখি না। তবে যেসব নাটক নিয়ে অনলাইনে আলোচনা বেশি হয় সেসব নাটক দেখা হয়।
- খুব অল্প সময়ে আপনি তারকা বনে গেছেন বলা যায়। সবাই একনামে আপনাকে চেনে। ক্যারিয়ারে আপনার টার্নিং পয়েন্ট কি ছিল?
আমার বেশ কতগুলো টার্নিং পয়েন্ট আছে। ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আমি টানা চার বছর শুধু টিভিসি করেছি। তারপর রেদওয়ান রনি পরিচালিত ’ইউটার্ন’ নাটকে অভিনয় করি। এটা একটা টার্নিং পয়েন্ট। এরপর রাহাত রহমানের ’মাংকি বিজনেস’ নাটকে অভিনয় করে বেশ পরিচিতি পাই। এয়ারটেলের কাজ হওয়ার কারনে প্রচুর প্রমোশন হয়েছিল। নাটকটিতে অভিনয়ের অনেক জায়গা ছিল। মাবরুর রশিদ বান্নার ‘শত ডানার প্রজাপতি’ নাটকটিও আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট।
আরও পড়ুন : গোপনে বিয়ে করে ফেলেছেন এড শিরান
- জনপ্রিয়তা নাকি অনেক ক্ষেত্রে ভক্তদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। সাবিলা নূরের ক্ষেত্রে কি এমনটা হয়?
প্রশ্নই আসেনা। আমি সবসময় আমার ভক্তদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে চাই। কেউ সেলফি তুলতে চাইলে কিংবা কথা বলতে চাইলে আমি সেটাকে সহজভাবে নিই। উপভোগ করি। এটা ভাবতে আমার ভালোলাগে যে, এতো অল্প সময়ে আমি জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পেরেছি। আমার অভিনয় সবাই পছন্দ করছে এটাই অনেক বড় পাওয়া। তবে হ্যাঁ, মাঝে মাঝে কিছু বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। সেটা আসলে খুব কম।
- সিনেমা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা কি?
এই মূহুর্তে কোনওরকম নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছিনা। ভবিষ্যতে অভিনয় করতে পারি। আবার নাও করতে পারি। সেভাবে কোন পরিকল্পনা নেই। বিষয়টা সময়ের ওপর ছেড়ে দিয়েছি ।
- একটি ভিন্ন ধরণের প্রশ্ন করতে চাই। জীবনে এমন কোন ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যেকারনে এখন খুব আফসোস হয়?
জীবনে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেসব সিদ্ধান্ত সাময়িকভাবে ভুল মনে হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে সেটার কোনও না কোনও ভালো দিক পেয়েছি।
আরও পড়ুন : হান্টার সাইফের সাধুগিরী
- নিজেকে খুশি রাখেন কিভাবে?
(কিছুক্ষণ ভেবে) খুব কঠিন প্রশ্ন। প্রত্যাহিক জীবনে খুব বেশি কিছু আশা করিনা। যতো বেশি আশা থাকে তত বেশি মানুষ কষ্ট পায়। আমার বই পড়তে খুব ভালো লাগে। যখন কোন ভালো বই পড়ি,তখন আমার মন ভালো হয়ে যায়।
সারাবাংলা/আরএসও/পিএম