শিল্পী সংস্থার দুই দিনের রবীন্দ্র-স্মরণানুষ্ঠান শুরু
৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১১:৩৬
এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
মহাপ্রস্থানের ৭৭ বছর পরও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনির্বাণ শিখার মতোই জ্বলছেন বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে। সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নায় পথ খুঁজতে হয় তারই স্ফূলিঙ্গ ধরে। তাই তার প্রয়াণ দিবসে যতই ব্যথা থাক, জেগে ওঠে পুষ্পধ্বনি। তার ভাষায়, ‘মৃত্যু হতে জাগো পুষ্পধনু/ হে অতনু, বীরের তনুতে লহো তনু।’
এই মহান দার্শনিক কবির ৭৭তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার উদ্যোগে ‘অহংকার চূর্ণ করো/প্রেমে মন পূর্ণ করো’ স্লোগান ধারণ করে শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে শুরু হয়েছে গানে গানে দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্র-স্মরণানুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় সংস্থার শিল্পীদের কণ্ঠে ‘সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা’ ও ‘আগুণের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’ পর পর দুইটি কোরাসের মধ্য দিয়ে। এরপর ধারাবাহিকভাবে হয় একক সঙ্গীত পরিবেশন। দুই দিনের এই স্মরণ-সঙ্গীতানুষ্ঠান সাজানো হয়েছে রবীন্দ্রনাথের গীতবিতান থেকে নির্বাচিত পূজা, প্রেম, প্রকৃতি, স্বদেশ ও বিচিত্র পর্যায়ের শতাধিক গান দিয়ে। সংস্থার ৮০ জন শিল্পীর পাশাপাশি আমন্ত্রিত শিল্পীরাও এই স্মরণ-সঙ্গীতানুষ্ঠানে একক ও দ্বৈত পরিবেশনায় অংশ নিচ্ছেন।
স্মরণ সঙ্গীতানুষ্ঠানের প্রথম দিন রবীন্দ্রনাথের হিরন্ময় সুধা পরিবেশন করেন ৪০জন শিল্পী। শুরুতেই আসিফুল বারী গেয়ে শোনান ‘চরণ ধরিতে দিয়ো গো আমারে’, অনিন্দিতা রায় গাইলেন ‘চির বন্ধু চির নির্ভর, চির শান্তি’, সেমন্তি মঞ্জরী ‘চির সখা, ছেড়ো না মোরে ছেড়ো না’, লিটন চন্দ্র বৈদ্য ‘ছায়া ঘনাইছে বনে বনে’। আজিজুর রহমান তুহিন পরিবেশন করেন ‘খেলার সাথী বিদায় দ্বার খোলো’, আবদুল ওয়াদুদ গেয়ে শোনান ‘শেষ বেলাকার শেষের গানে’, আবদুর রশিদের শোনা গেলো ‘দেখা না দেখায় মেশা হে’, জয়ন্ত আচার্য্য ‘আজি ঝড়ের রাতে তোমার’, প্রমোদ দত্ত ‘ভূবনেশ্বর হে’, মামুন জাহিদ খান ‘তোমায় নতুন ক’রে পাবো বলে’, অনুশ্রী ভট্টাচার্য ‘তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে’, বুলা মাহমুদ ‘আজ তোমারে দেখতে এলেম’, ছায়া কর্মকার ‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন’, আমিনা আহমেদ গেয়ে শোনান ‘তোমার গীতি জাগালো স্মৃতি’। মীরা মণ্ডল ‘মেঘের কোলে কোলে যায় রে চলে’, সত্য চক্রবর্তী ‘ওগো শেফালী বনের মনের কামনা’, অনুপম কুমার পাল ‘যদি বারণ কর তবে গাহিব না’, মকবুল হোসেইন ‘আমার যে দিন ভেসে গেছে’, মৃদুল চক্রবর্তী ‘আমার প্রিয়ার ছায়া আকাশে আজ’, কাজল মুখোপাধ্যায় ‘কিছু বলবো ব’লে এসেছিলেম’, তমাল চক্রবর্তী ‘অন্ধকারের উৎস হতে’, দীপা চৌধূরী ‘ভুবন জোড়া আসনখানি’, নুসরাত জাহান সাথী ‘স্বপ্নে আমার মনে হল’, প্রান্তিকা সরকার ‘আমি তখন ছিলেম মগন গহন’, রাবেয়া আক্তার ‘আমার দিন ফুরালো’, রাইয়ান খালিদ স্যান্ড্রা ‘মধুর তোমার শেষ যে না পাই’, রিফাত জামাল মিতু ‘ওই মালতী লতা দোলে’, সর্ব্বানী চক্রবর্তী ‘শ্রাবণের ধারার মত পড়ুক ঝরে’, শর্মিলা চক্রবর্তী পরিবেশন করেন ‘শেষ গানেরই রেশ নিয়ে যাও চলে’, সুস্মিতা মণ্ডল ‘আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে দুয়ার কাঁপে’, সুমাইয়া ফারাহ খান ‘কোথা যে উধাও হোলো’, তনুশ্রী দীপক ‘অশ্রু নদীর সুদূর পারে’, আশিকুর রহমান ‘যেতে যেতে একলা পথে’, তানজিনা তমা ‘এমন দিনে তারে বলা যায়’, নাসরিন আক্তার পরিবেশন করেন ‘আজি শ্রাবণ ঘন গহন মোহে’।
স্মরণানুষ্ঠানে সংস্থার সভাপতি তপন মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজেদ আকবর যৌথ নিবেদন পত্রে বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ, বাই রসরূপের প্রকাশে তিনি কবি। ভেতরে তিনি একজন সাধক, সহজ-সাধক। সহজ-সাধনার আর্তি, পরমতর জনের প্রেমের জন্যে তার গভীর ব্যাকুলতা গানের ছন্দে, সুরে ও কথায় অপূর্ব রসমধুর হয়ে প্রকাশ পেয়েছে। আন্তরিক আকুলতায় কবিচিত্তের আনন্দ-বেদনা শতদলের মতো সহস্য রাগে ফুটে উঠেছে সঙ্গীতের অফুরন্ত সুরের ঝরনা-ধারায়। এই আকুলতা তার মনের মানুষের জন্য। এই মনের মানুষ সীমাকে অতীত করে অসীমে ব্যাপ্ত হয়ে আছেন। সে তো ধরা দেওয়ার ধন নয়, তাই তো কবির এত প্রয়াস ও সন্ধান ব্যাকুলতা।’’ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পীযূষ বড়ুয়া।
সমাপনী ও দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান শুরু শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টায়। এদিনও একই মঞ্চে গান পরিবেশন করবেন দেশের প্রবীণ-নবীন শিল্পীরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন তপন মাহমুদ, সাজেদ আকবর, অদিতি মহসিন, বিষ্ণু মণ্ডল, গোলাম হায়দার, পীযূষ বড়ুয়া, মহাদেব ঘোষ, শাফিকুর রহমান খান, খোকন চন্দ্র দাস, খন্দকার আবুল কালাম, মাখন হাওলাদার, আহমেদ জিয়াউর রহমান, টিপু চৌধুরী, তপন কুমার সরকার, নির্ঝর চৌধুরী, অনিরুদ্ধ সেনগুপ্ত, খন্দকার খাইরুজ্জামান কাইয়ুম, অভিক দেব, ফেরদৌসী কাকলী, কাকলী গোস্বামী, কনক খান, মিতা দে, রাবিতা সাবাহ, রমা বাড়ৈ, রুমঝুম বিজয়া রিসিল, সীমা সরকার, শিল্পী রায়, শিমু দে, সুমাইয়া ইমাম ইমা, সাঈদা হোসেইন পাপড়ি, আঁখী হালদার, অপর্ণা খান, বনানী দত্ত, ফাহমিদা হোসেইন, অনিকেত আচার্য্য, আশরাফ মাহমুদ। অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত।
সারাবাংলা/পিএম
অদিতি মহসিন অনিকেত আচার্য্য অনিরুদ্ধ সেনগুপ্ত অপর্ণা খান অভিক দেব আঁখী হালদার আশরাফ মাহমুদ আহমেদ জিয়াউর রহমান কনক খান কাকলী গোস্বামী খন্দকার আবুল কালাম খন্দকার খাইরুজ্জামান কাইয়ুম খোকন চন্দ্র দাস গোলাম হায়দার টিপু চৌধুরী তপন কুমার সরকার তপন মাহমুদ নির্ঝর চৌধুরী পীযূষ বড়ুয়া ফাহমিদা হোসেইন ফেরদৌসী কাকলী বনানী দত্ত বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা বিষ্ণু মণ্ডল মহাদেব ঘোষ মাখন হাওলাদার মিতা দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রমা বাড়ৈ রাবিতা সাবাহ রুমঝুম বিজয়া রিসিল শাফিকুর রহমান খান শিমু দে শিল্পী রায় সাঈদা হোসেইন পাপড়ি সাজেদ আকবর সীমা সরকার সুমাইয়া ইমাম ইমা