নবাবহীন পাঁচ বছর
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৩:৩৫
এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট।।
তাকে বলা হয় বাংলা সিনেমার মুকুটহীন নবাব। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের ওপর নির্মিত ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করে মুকুটহীন সম্রাট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন তিনি। আবার কেউ তাকে নবাব বলে সম্বোধন করে। বলছি বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা আনোয়ার হোসেনের কথা।
আনোয়ার হোসেনের জন্ম ১৯৩১ সালের ৬ নভেম্বর জামালপুর জেলায়। তিনি মৃত্যুবরণ করেন ২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর। সেসময় তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
আরও পড়ুন : আইটেম নেচে কে কত নেন?
১৯৫৮ সালে ‘তোমার আমার’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন তিনি। অর্ধশতকেরও বেশি সময় বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সাথে জড়িত ছিলেন আনোয়ার হোসেন।
ছোটবেলা থেকে বিদ্যালয়ে মঞ্চ নাটক করতেন আনোয়ার হোসেন। তখনকার সময়ে সিনেমা জগতের জনপ্রিয় তারকা ছবি বিশ্বাস, কানন দেবীসহ অনেকের অভিনয় দেখে তিনি রূপলী পর্দায় অভিনয় করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। নিজের অভিনয়ে আসা নিয়ে বেঁচে থাকাকালীন সময়ে এক সাক্ষাৎতকারে তিনি বলেছিলেন-
‘পঞ্চাশ দশকের শেষের দিকে সিদ্ধান্ত নিলাম অভিনয় করবো সারাজীবন। সুতরাং অন্য কোন জীবিকার সন্ধান না করে সরাসরি চলে গেলাম পরিচালক মহিউদ্দিন সাহেবের কাছে। তিনি তখন একটি ছবির কাজ করছেন। তাকে ধরলাম আমাকে নেওয়ার জন্য। তিনি জানালেন, ছবিতে অভিনয় শিল্পী নির্বাচনের কাজ শেষ। ফলে আমাকে নেওয়া যাচ্ছে না আপাতত।’
তিনি প্রথম অভিনয় করেন ‘তোমার আমার’ সিনেমায়। ১৯৫৮ সালে নির্মিত ছবিটিতে তিনি খল চরিত্রে অভিনয় করেন। চরিত্রের নাম ছিল ‘বীরেন’।
আনোয়ার হোসেন অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে আছে, ‘কাচের দেয়াল’, ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’, ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’, ‘ধীরে বহে মেঘনা’, ‘পালঙ্ক’।
১৯৭৫ সালে প্রথম প্রবর্তিত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী অভিনেতা আনোয়ার হোসেন। নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘লাঠিয়াল’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেবছলই এই পুরস্কার পান তিনি। এছাড়া ১৯৭৮ সালে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ছবিতে অভিনয় করার জন্য পার্শ্ব চরিত্রে সেরা অভিনেতার পুরস্কার অর্জন করেন।
সবশেষ ২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা দেয়া হয় বাংলা চলচ্চিত্রের এই প্রবাদপ্রতীম অভিনেতাকে।
সারাবাংলা/আরএসও/পিএম