হঠাৎ জনপ্রিয় ‘টুকটুকির মা’, যা বললেন গানের স্রষ্টা
৮ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:১৫
এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
গুরুপদ গুপ্ত- একজন গীতিকার ও সুরকার। যদিও তিনি বিখ্যাত কেউ নন। বিখ্যাত হওয়ার নেশাও কখনো তাকে চেপে ধরেনি। তাই খুলনায় নিভৃতে জীবন যাপন করছেন তিনি। আপন মনে লিখে চলেছেন একের পর এক আঞ্চলিক গান। এ পর্যন্ত লিখেছেন ৬০০টির মতো গান।
পাঠক, নিশ্চয়ই এখনো তাকে চেনা যায়নি। তাহলে তাকে এবার চেনানো যাক। গত কয়েক দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি গান ঘুরে বেড়াচ্ছে। আলোচিত হচ্ছে। কখনো ভীড় ভর্তি বাস, আবার কখনো ফুটপাতের হোটেল কিংবা কর্পোরেট অফিস- সবখানে গানটি বাজছে। উপভোগ করছে মানুষ। গানটির প্রথম লাইনটি এমন- ‘বয়স আমার বেশি না ওরে টুকটুকির মা, খালি চুল কয়ডা পাইহে গেছে বাতাসে।’
সম্প্রতি জনপ্রিয় হওয়া এই গানটির গীতিকার হলেন গুরুপদ গুপ্ত। তার গান যে এতোটা জনপ্রিয় হবে তা কখনো ভাবেননি তিনি। খুলনায় গানটির জনপ্রিয়তা ছিল। কিন্তু সেই জনপ্রিয়তা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে তা তার কল্পনার বাইরে ছিল।
কিছুদিন অাগে জুয়েল হাসান পরিচালিত নাটকে গানটি ব্যবহার করা হয়। যেখানে জনপ্রিয় অভিনেতা আ খ ম হাসান ঠোঁট মেলান গানটিতে। মূলত নাটকের মাধ্যমে এই গানটি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
নাটকে গানটি ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া হয়েছে কিনা জানতে যোগাযোগ করা হয় গীতিকার গুরুপদ গুপ্তর সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন,
‘নাটকের পরিচালক আমার কাছ মৌখিক অনুমতি নিয়েছেন। কেউ আমার গান ব্যবহার করতে চাইলে আমি তো মানা করতে পারিনা। গান লিখি মানুষের জন্য।’
গানটি ব্যবহারের কোন কোন পারিশ্রমিক দেয়া হয়েছে কি? তিনি বলেন,
‘আমাকে বলা হয়েছে এক মাসের মধ্যে দেখা করবেন। এখনো এক মাস শেষ হয়নি। দেখা যাক কি হয়!’
এদিকে এই গানটি নতুন সংগীতায়োজনে গেয়েছেন এ সময়ের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী প্রীতম হাসান। তিনি গানটির জন্য কোনরকম অনুমতি নেননি। কেনো? প্রীতম সারাবাংলাকে বলেন,
‘এটা কয়েক বছর আগে আমার একটি অ্যালবামে ছিল। ওটাকে নতুন করে কাভার করেছি। আমি জানতাম গানটি ভবা পাগলার। পরিচিত অনেককে গানের গীতিকার সম্পর্কে জানতে চেয়েছি। সবাই ভবা পাগলার নাম বলেছেন। আমি জানতাম না গানটি গুরুপদ গুপ্তর। জানলে অবশ্যই অনুমতি নিতাম।’
গানটি সম্পর্কে গীতিকার যদি কোন অভিযোগ করেন তাহেলে গানটি নামিয়ে নেবেন বলে জানান প্রীতম। তিনি আরও বলেন,
‘এটা আমি কাভার করেছি মাত্র। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার কোন বিষয় নেই। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নয়, নিজের ভালোলাগা থেকেই কাভার করেছি।’
প্রীতম হাসান ছাড়াও গানটি বিভিন্ন সময়ে অনেক জনপ্রিয় শিল্পী কাভার করেছেন। এতে করে আসল সুর বিকৃতির আশঙ্কা থেকে যায়। এ প্রসঙ্গে গুরুপদ গুপ্ত সারাবাংলাকে বলেন,
‘গানটি যদি আমার থেকে ভালো গেয়ে থাকেন কেউ তাহলে আমি খুশি। তবে কেউ আমার চেয়ে খারাপ গাইলে বা বিকৃত করলে খারাপ লাগবে। আমি উদার মেনের মানুষ। যে কেউ চাইলে গানটি অনুমতি নিয়ে সুন্দরভাবে গাইতে পারবেন। এতে আমার কোন অভিযোগ থাকবে না।’
এদিকে গানটির প্রকৃত গীতিকার সম্পর্কে জানার পর প্রীতম হাসান নিজে উদ্যোগী হয়ে গানটির ব্যানার গাঙচিল মিউজিককে তথ্যগুলো নতুনকরে সংযোজন করতে বলেন। এই প্রতিবেদন লেখার সময় গানচিল মিউজিকের ইউটিউব চ্যানেল থেকে নামিয়ে ফেলা হয়েছে গানটি।
ছবি: ইন্টারনেট
সারাবাংলা/আরএসও/পিএ