Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রবীন্দ্রনাথের গান এখনও বাঁচতে শেখায় : সমরেশ


৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ২০:৩৩

সমরেশ

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দুই বাংলার জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার দ্বিতীয়বারের মতো এসেছেন চট্টগ্রামে। প্রথমবার এসেছিলেন চার বছর আগে। এবার আসার উদ্দেশ্য পাঠকদের সঙ্গে আড্ডা দেয়া। প্রিয় সাহিত্যিককে পেয়ে পাঠক-ভক্ত-অনুরাগীদেরও আনন্দের শেষ নেই। সাহিত্যকর্ম, স্মৃতি, বাংলাদেশ প্রসঙ্গসহ নানা বিষয়ে মুখর হয়ে ওঠে সেই আড্ডা।

আজ (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আলাপচারিতায় সমরেশ মজুমদার জানান, রবীন্দ্রনাথের গান তাকে এখনও প্রাণ দেয়, বাঁচতে শেখায়।

‘রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গানগুলো আমার কাছে মন্ত্রের মতো। ঈশ্বরের সঙ্গে আমার যোগাযোগ নেই। কিন্তু দুঃখ পেলেই আমি রবীন্দ্রনাথের গান শুনি। আমার মন ভালো হলেও রবীন্দ্রনাথের গান শুনি, মন আরও ভালো হয়ে যায়।’ বলেন তিনি।

সমরেশ জানান, ৪৭ থেকে ৭১ সালের পটভূমিতে বাংলাদেশের জাগরণ নিয়ে একটি উপন্যাস লিখবেন তিনি।

সমরেশ বলেন, ‘রাজনীতি ও মানুষের সংগ্রামের কথা অনেকে লিখেছি। কিন্তু এদেশের মানুষের ব্যাপক পরিবর্তন, সেটা ১৯৪৭ সালের আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে। তার আগেও হতে পারে। ভাষা আন্দোলন যে মানুষকে উদ্দীপ্ত করেছে সেটিহতে পারে। শেখ সাহেবের আন্দোলনও হতে পারে। এসব যেমন দেখছি, এর বাইরে আরেকটা জাগরণ আমি দেখতে পাই। সেইজাগরণের গল্প লেখার খুব ইচ্ছে।’

নিজের কালোত্তীর্ণ সৃষ্টি ‘উত্তরাধিকার, ‘কালবেলা’, ‘কালপুরুষ’-এ নিজের ছায়া থাকার কথাও বলেন বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে সাড়া জাগানো এই ঔপন্যাসিক। কালজয়ী চরিত্র অনিমেষ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘অনিমেষের মধ্যে ব্যক্তি সমরেশের প্রভাব অবশ্যই রয়েছে। আমি আর অনিমেষ এক নই। তবে অনিমেষের মধ্যে আমি আছি।

বিজ্ঞাপন

জনপ্রিয় উপন্যাস আর উঁচুমানের উপন্যাস সম্পর্কে বলতে গিয়ে সমরেশ মজুমদার বলেন, ‘চিলেকৌঠার সেপাই অনেক উঁচুমানের রচনা। কিন্তু সেটি কি জনপ্রিয়? পঞ্চাশ বছর পার হলে কালউত্তীর্ণ বলি। যেমন রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্রের লেখা। পথের পাঁচালির এক নখের যোগ্য কিছুও লিখতে পারিনি।

আড়াই বছর আগে একবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সমরেশ মজুমদার। আলাপচারিতায় আসে সেই প্রসঙ্গও। কষ্টের কথাগুলো ভক্ত-পাঠকের কাছে তুলে ধরেন তিনি।

‘যখন সুস্থ হয়ে ফিরি তখন অ আ চিনতাম না। পরে আমার মেয়ে আমাকে অক্ষর শেখালো। আবার লিখতে শুরু করলাম। অনেকদিন পর রেললাইন থেকে পড়ে যাওয়া গাড়ি আবার লাইনে উঠল।’

বাংলাদেশের জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তার সঙ্গে অনেক আড্ডা হতো। ১৫ থেকে ১৬ বছরে যে হুমায়ুন পড়েনা সে পাঠক না। আবার ২৪ থেকে ২৫ বছরের যারা হুমায়ূন পড়ে না তারাও পাঠক না।’ প্রায় এক ঘণ্টার আলাপচারিতায় সমরেশ মজুমদার বাংলাদেশের নারীদের এগিয়ে যাওয়ার সংগ্রামেরও প্রশংসা করেন।

খ্যাতিমান লেখকের সঙ্গে ভক্ত, অনুরাগী, পাঠকদের সংযোগ ঘটিয়ে দেওয়ার এই আয়োজন করেছে ‘বাতিঘর’। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কবি ও সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাতিঘরের সত্ত্বাধিকারী দীপংকর দাশ।

অনিন্দিতার কণ্ঠে সমরেশ মজুমদারের লেখা একটি গানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আলাপচারিতা। তুমুল আড্ডা, হাসি-ঠাট্টায় উপভোগ্য একটি দুপুর কাটে সমরেশ ভক্তদের।

সারাবাংলা/আরডি/পিএ

চট্টগ্রাম সমরেশ মজুমদার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর