শাকিব খানকে সেরা নায়ক মনে করেন সুপ্রিয় দত্ত
২২ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০৩
।। রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
দমদম মেট্রো স্টেশন থেকে অটোতে করে পৌঁছে গেলাম সিঁথির মোড়। সেখান থেকে আবার অটোতে করে বনহুগলি। দেখতে ছিমছাম এই এলাকাতে থাকেন বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা সুপ্রিয় দত্ত। কখনও তিনি পর্দায় মানুষ হাসান। আবার কখনও ভয়ংকর খলনায়ক হিসেবে হাজির হয় ভয় ধরিয়ে দেন দর্শকের মনে।
যাহোক। রাস্তার ওপারে মধ্যবয়সী বিল্ডিংয়ের তিন তলায় বাস সুপ্রিয় দত্তর। কেঁচি গেটওয়ালা লিফটে চড়ে পৌঁছে গেলাম তার ফ্ল্যাটে। কলিংবেল বাজাতেই দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন তিনি। ডাইনিং কাম ড্রয়িংরুমের সোফায় বসলাম। ছোট পরিসরে বিভিন্ন লেখকের বইয়ে সাজানো ড্রয়িং রুম। সাথে সাথে সুপ্রিয় পত্নী মিষ্টি আর কোমল পানীয় এনে সামনে দিলেন। কুশল বিনিময় শেষে শুরু হলো সিনেমা নিয়ে আলোচনা।
পশ্চিমবাংলার জনপ্রিয় এই অভিনেতা অভিনয় করেছেন বেশকিছু যৌথ প্রযোজনার সিনেমায়। আলোচনার শুরুটা হলো যৌথ প্রযোজনা নিয়ে। যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নিয়ে ব্যক্তিগত মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা ভালো দিক। দুই বাংলার শিল্পী, কলাকুশলীদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ে। অভিজ্ঞতা বিনিময় হয়। তবে শুনেছি বাংলাদেশে এটা নিয়ে ঝামেলা চলছে। সেই ঝামেলা নিয়ে কথা না বলাই ভালো। শিল্পীদের এসব ঝামেলায় জড়াতে নেই। তাছাড়া এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’
বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে মিশ্র মন্তব্য করলেন এই সব্যসাচী অভিনেতা। তার চোখে শাকিব খান বাংলাদেশের সেরা নায়ক। তিনি বলেন, ‘শাকিব খান বাংলাদেশের সেরা নায়ক বলে আমার মনে হয়। শুটিংয়ে দেখেছি তিনি আমাদের আগে গিয়ে সেটে হাজির হয়েছেন। প্রতিটি সংলাপ মুখস্থ করে বলেছেন। আর যারা সিনিয়র অভিনয়শিল্পী আছেন তাদের অভিনয় নিয়ে আমার কিছুটা হতাশা আছে। নাম বলা ঠিক হবে না। তাদের কাছে আমার প্রত্যাশা আরও বেশি ছিল।’
এসময় তিনি বাংলাদেশের মানুষের আতিথেয়তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিমানবন্দরে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদেরও তিনি প্রশংসা করতে ভোলেননি। যদিও বাংলাদেশের রাস্তার জ্যাম নিয়ে তার খারাপ অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন।
কথা বলতে বলতে একটি মিষ্টি খাওয়া শেষ করে টিস্যু পেপারে মুছতেই কিছুটা চোখ গরম করে বাকি মিষ্টিটাও খেতে বললেন। কিছুক্ষণ পরে খাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আলোচনা যৌথ প্রযোজনা থেকে টালিগঞ্জের দিকে প্রবাহিত করলাম।
টালিগঞ্জ সিনেমার বর্তমান অবস্থা নিয়ে খুশি নন তিনি। ক্ষোভ মিশ্রিত কন্ঠে বললেন, ‘কমার্শিয়াল সিনেমাগুলো চলছেই না। কেবলমাত্র ঈদ আর পূজা ছাড়া। কিন্তু আর্ট ফিল্মগুলো সিনেপ্লেক্সগুলোতে চলে টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। এরকমভাবে চলতে থাকলে সিঙ্গেল স্ক্রিন বন্ধ হয়ে যাবে। আর যদি কমার্শিয়াল সিনেমা না চলে তাহলে আর্ট ফিল্মই বানাক প্রযোজকরা। কমার্শিয়াল সিনেমার কোন দরকার নেই।’
কথা বেশি দীর্ঘায়িত করা গেলো না। অভিনয় করলেও সুপ্রিয় দত্ত একজন সরকারি চাকুরিজীবি। গাড়ি এসে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। না উঠলেই নয়। বাকি মিষ্টিটা শেষ করে বেরিয়ে পড়লাম তার সঙ্গে। অন্যদিন আরও বেশি সময় করে আড্ডা দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করে তিনি রওয়ানা হলেন অফিসের দিকে।
সারাবাংলা/আরএসও/