আমি চাই আমাদের রিইউনিয়ন হোক: সারাবাংলাকে রানী মুখার্জি
১০ মার্চ ২০১৯ ১৩:৪৫
রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকায় বসে বলিউড তারকাদের নাগাল পাওয়া একটু মুশকিলই বটে। তারওপরে তিনি যদি হন রানী মুখার্জি তাহলে তো সেটা আরও মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। তারপরও কয়েকদিন চেষ্টার পর রানী মুখার্জীর নাগাল পাওয়া গেলো। তারও কিছুদিন পরে তিনি কথা বলতে রাজি হলেন। কিন্তু শর্ত একটাই, সময় বেশি নেয়া যাবেনা। কারণ তিনি এখন ‘মারদানি’ ছবি সিক্যুয়াল নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সব মনোযোগ এখন ওই সিনেমার প্রতি।
শর্ত মেনে কথা হলো এই বলিউড তারকার সাথে। বেশ খোলামেলা ভাবেই তিনি নিজের বলিউড ক্যারিয়ার এবং সমসাময়িক কিছু আলোচিত বিষয় নিয়ে কথা বললেন সারাবাংলার সঙ্গে।
বাংলাদেশে আপনার জনপ্রিয়তা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। এই জনপ্রিয়তার প্রতিদান দিতে বাংলাদেশের কোনো ছবিতে অভিনয় করার ইচ্ছা জাগেনা?
রানী: আসলে বাংলাদেশের ছবি সম্পর্কে আমার সেরকম বলার মতো ধারণা নেই। ওখানকার কোনো পরিচালক সেভাবে আমার সঙ্গে যোগাযোগও করেননি কখনো। তাছাড়া এখনতো আমি বলিউডেও নিয়মিত অভিনয় করছি না। খুব কম কাজ করছি। তবে আমি চাই বেশি বেশি কাজ করতে। সেটা হয়ে উঠছে না। কেনো হচ্ছে না সেটা নিজেও বুঝতে পারছি না। হয়তো সেভাবে চরিত্র পাচ্ছি না। রানীকে ছবি করার আগে অনেক কিছু ভাবতে হয়। মানুষ তো ধরেই নেয় ‘রানী মানেই হিট’ ছবি।
কিন্তু আপনার ‘আইয়্যা’ ছবি তো বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়েছিল।
রানী: ওটা জাস্ট একটা একসিডেন্ট ছিল। ওটা বাদ দিন না! আপনি ‘মারদানি’ ছবির কথা বলুন। বক্স অফিসে দারুণ সফলতা পেয়েছিল। ‘হিচকি’ও কিন্তু একই পথে হেঁটেছে। ‘হিচকি’ চীনেও মুক্তি পেয়েছিল। সেখানে আউটস্ট্যান্ডিং বিজনেস করেছে ছবিটি।
আপনার পিআর (জনসংযোগ কর্মকর্তা) মনিকা ভট্টাচার্য জানালেন, ‘মারদানি’র সিক্যুয়ালের কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন মার্চেই?
রানী: হ্যাঁ, মনিকা ঠিকই বলেছেন। মার্চের ১৪ তারিখ থেকে শুটিং শুরু করব। ‘মারদানি’তে আমি সিনিয়র পুলিশ ইন্সপেক্টরের চরিত্র অভিন করেছিলাম। এবার পুলিশের ফাইটিং ব্যাটেলের সুপারিন্টেনডেন্টের (এসপি) ক্যারেক্টার প্লে করব।
অন্যসব চরিত্রের চেয়ে পুলিশের চরিত্রে অভিনয় করা কতোটা সহজ বা কঠিন?
রানী: পুলিশের চরিত্রে অভিনয় করা বড় রকমের একটা চ্যালেঞ্জ বলতে পারেন। এই চরিত্র অভিনয় করে বুঝতে পেরেছি, দায়িত্ব পালন করতে ভারতবর্ষের পুলিশের কতো বড় রিস্ক নিতে হয়! অন্যসব চরিত্রের চেয়ে এ ধরনের পুলিশ অ্যাকশন ছবি করতে আমি আগ্রহী। তাই বলে, অতীতে যেসব চরিত্রে অভিনয় করেছি সেসবকে ছোট করছি না। ওসব চরিত্রে অভিনয় করে আমি আজকের রানী। আমি আমার ক্যারিয়ারে অনেক ভালো ভালো চরিত্রে অভিনয় করেছি। অ্যাক্টিং ইজ অ্যান আর্ট। আমি অভিনয়ের মাঝে শিল্প সত্তাকে খুঁজি; সেটা যে চরিত্রই হোক না কেনো!
বলিউডে ইদানিংকালে অনেক নতুন মুখের আগমন ঘটছে। তারা সফলও হচ্ছেন। নতুনদের সম্পর্কে কি বলবেন?
রানী: নতুনরা বলিউডে আসবে। তাদের স্বাগত জানাই। তারা সফল হলে বলিউডের লাভ। আমরা আমাদের মতো কাজ করব, তারা তাদের মতো কাজ করবে। সুযোগ হলে একসঙ্গে কাজ করব। জাহ্নবী, সারা- প্রত্যেকে ভালো করছেন। আমি ওদের সফলতা কামনা করি। আর বলিউড এমন এক জায়গা যেখানে যে যার যোগ্যতা অনুযায়ি ক্যারিয়ার এগিয়ে নিয়ে যায়।
বলিউডে নেপোটিজম নিয়ে কথা উঠছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি?
রানী: দেখুন, এখানে মতামতের তেমন কিছু নেই। এটা থাকবেই। ওই যে বললাম, যোগ্যতার কথা। যোগ্যতা না থাকলে কেউ বেশি দিন ক্যারিয়ার ধরে রাখতে পারবে না। এমন বেশকিছু উদাহরনও তো বলিউডে আছে। একজন অভিনয়শিল্পীর সন্তান বলিউডে কাজ করতে আসবে। এটাই তো স্বাভাবিক। যারা নেপোটিজম নিয়ে নেগেটিভ কমেন্ট করেন তাদের বিষয়টাকে পজেটিভ নেয়া উচিত। নতুবা এতে কেবল মনোমালিন্যেরই সৃষ্টি হয়।
হ্যাশট্যাগ মিটু নিয়ে আপনার অবস্থান…
রানী: কর্মক্ষেত্রে নারীরা সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্টের শিকার হয় অহরহ। শুধু বলিউড না, যে কোন জায়গায়। এটা নারীদের এগিয়ে চলার পথে বড় বাঁধা। তবে হ্যাশট্যাগ মিটুর মাধ্যমে নারীরা তাদের ওপর ঘটে যাওয়া সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্টের ঘটনা জানাচ্ছেন। এতে করে ওইসব পুরুষরা ভবিষ্যতে এসব কাজ থেকে বিরত থাকবে।
আবার এটাও ঠিক অনেক নারী হ্যাশট্যাগ মিটুর সুযোগ নিচ্ছেন। কোনো কোনো সহকর্মীর বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব করছেন। যা একেবারে অনুচিত।
বলিউডে কাজ করার ক্ষেত্রে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকে। কেউ মুখ খোলেন, কেউ খোলেন না। সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্টের বিরুদ্ধে সবার একসাথে প্রতিবাদ করা উচিত।
খান ব্রাদার্সের সঙ্গে অনেক দিন আপনাকে অভিনয় করতে দেখা যাচ্ছে না। অথচ তাদের সঙ্গে আপনার কিছু ব্যবসাসফল ছবি আছে।
রানী: আমিও তাদের সঙ্গে কাজ খুব মিস করি। তাদের সঙ্গে আমার ভালো কিছু মুভি করার স্মৃতি আছে। আমি চাই আমাদের রিইউনিয়ন হোক। হয়ত সময় চাইছে না বলেই হচ্ছে না। সামনে করব কিনা সেটা সময় বলে দেবে। তাছাড়া পরিচালকদেরও আমাদের নিয়ে ভাবতে হবে। তারা না ভাবলে আমার কিইবা করার আছে!
সারাবাংলা/আরএসও/পিএম