মহানায়িকার জন্মদিন
৬ এপ্রিল ২০১৯ ১৪:১২
এক নজরে সুচিত্রা সেন
বাংলা চলচ্চিত্র যাদের কাজে সমৃদ্ধ হয়েছে তাদের মধ্যে সুচিত্র সেন অন্যতম। গেলো পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে তিনি বাংলা চলচ্চিত্রকে এভারেস্টসম উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। উত্তম কুমারের সঙ্গে জুটি বেঁধে প্রেমের ছবিতে নিজেকে সার্বজনীন করে তুলেছিলেন তিনি।
সুচিত্রা সেনের মায়াবি হাসি, কাজল চোখের চাহনী আর নাতিদীর্ঘ চুল পর্দার সামনে থাকা দর্শককে মুগ্ধ করে রাখতো। তরুণ থেকে বুড়ো—এমন কেউ নেই যে তার রূপের মায়াজালে মুগ্ধ হননি। সেই সাথে সাবলীল অভিনয়তো ছিলই।
শনিবার (৬ এপ্রিল) বাংলা চলচ্চিত্রের এই মহানায়িকার ৮৯তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের পাবনায়, নানাবাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন সুচিত্রা সেন। তার আসল নাম রমা দাশগুপ্ত। পর্দার নাম- সুচিত্রা সেন।
পাবনা শহরের দিলালপুরের বাড়িতে কেটেছে তার শৈশব–কৈশোর। ছিলেন পাবনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। ১৯৪৭–এ দেশবিভাগের আগেই পরিবারের সাথে কলকাতা চলে যান সুচিত্রা। এরপর থেকে কলকাতাতেই স্থায়ী হন।
১৯৪৭ সালে বিশিষ্ট শিল্পপতি আদিনাথ সেনের পুত্র দিবানাথ সেনের সঙ্গে সুচিত্রা সেনের বিয়ে হয়। তাদের একমাত্র কন্যা মুনমুন সেনও একজন খ্যাতনামা অভিনেত্রী। ১৯৫২ সালে সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রে যুক্ত হন। ছবির নাম ছিল ‘শেষ কোথায়’। তবে ছবিটি মুক্তি পায়নি।
তার অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম সিনেমা ‘সাত নম্বর কয়েদী’। ১৯৫৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল ছবিটি। এরপর একে একে সবমিলিয়ে ৬১টি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। সবশেষ ছবি মুক্তি পায় ‘প্রণয় পাশা’। ১৯৭৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল ছবিটি। সুচিত্রা তার শেষ ছবিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন।
‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবির মধ্য দিয়ে সুচিত্রা সেন মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে জুটি বাঁধেন। প্রথম ছবিটি বক্স অফিসে সাফল্য পাওয়ার পর পরবর্তী ২০ বছর টানা জুটি হয়ে কাজ করেন তারা।
১৯৭৮ সালে হঠাৎ করেই চলচ্চিত্র থেকে বিদায় নেন সুচিত্রা। চলে যান লোকচক্ষুর অন্তরালে। এরপর আর তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। চলচ্চিত্র থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনের ৩৬ বছর পর ২০১৪ সালে মারা যান বাংলা চলচ্চিত্রের এই মহানায়িকা।
সুচিত্রা সেনের জন্মদিনকে ঘিরে আয়োজন
বরাবরের মতো এবারও সুচিত্রা সেনের জন্মস্থান পাবনায় দিনটি নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে। শহরের গোপালপুরস্থ সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালায় তার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসন, সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষন পরিষদসহ তার ভক্তরা। এরপর কেক কেটে উদযাপন করা হয় জন্মদিন। এছাড়া আয়োজন করা হয় চিত্রাংকন, কুইজ ও রচনা প্রতিযোগিতার।
পাবনা জেলা প্রশাসক মোঃ জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বিপিএম, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কাজী আতিয়ুর রহমান, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি শিবজিত নাগ, ইউনিভার্সাল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহানী হোসেন, স্মৃতি সংরক্ষন পরিষদের সহ সভাপতি ডা. রামদুলাল ভৌমিক, সাধারন সম্পাদক ড. নরেশ মধু।
সারাবাংলা/আরএসও/পিএম