Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুবীর নন্দী লাইফ সাপোর্টে, তবে অবস্থা উন্নতির দিকে


১৫ এপ্রিল ২০১৯ ১০:৪৩

লাইফ সাপোর্টে থাকা নন্দিত কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। রোববার (১৪ এপ্রিল) রাতে সিলেট থেকে ঢাকা ফেরার সময় হার্ট অ্যাটাক করলে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএএইচ) ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা যেন খারাপের দিকে না যায়, সেজন্য তাকে সঙ্গে সঙ্গে করোনারি কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার’-এ স্থানান্তর করা হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। তবে সকাল নাগাদ তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সুবীর নন্দীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় তৃপ্তি কর সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তাকে আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখবেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এর আগে কিছু বলা যাবে না। তবে রাতের চেয়ে তিনি এখন ভালো আছেন।

তৃপ্তি কর বলেন, সিলেট থেকে দুপুরের ট্রেনে ঢাকা ফিরছিলেন সুবীর নন্দী। ট্রেনের ভেতর হঠাৎ বমি করতে শুরু করেন তিনি। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকলে আমরা দ্রুত চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। প্রথমে তাকে ল্যাব এইডে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও দূরত্ব বিবেচনায় সিএমএইচে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ট্রেন ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছালে দ্রুত তাকে সেখানে নেওয়া হয় এবং চিকিৎসা শুরু হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘তার হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ ছিল। তবে হার্ট অ্যাটাক যেন না করেন সেজন্য ইনজেকশন দেওয়া হয়। কিন্ত তাতে কাজ হয়নি। সিএমএইচে ভর্তি করার পরপরই হার্ট অ্যাটাক হয় তার। তখন তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।’

সুবীর নন্দীর বর্তমান শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে তৃপ্তি কর বলেন, তাকে তো ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। প্রেশার আছে। তবে তার শারীরিক অবস্থা ভালোর দিকে যাচ্ছে।

এদিকে, বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের জাতীয় সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন সারাবাংলাকে জানান, ‘গায়ক সুবির নন্দির অবস্থা খুবই খারাপ। সবদিক থেকেই খারাপ। কিডনি, হার্ট সব নিয়ে তিনি জটিল অবস্থায় আছেন। আমি আসলে ফ্যামিলি মেম্বার হিসেবে সেখানে গিয়েছিলাম। আবার যাচ্ছি’।

৬৬ বছর বয়সী জনপ্রিয় এই কণ্ঠশিল্পী দীর্ঘদিন ধরে কিডনির রোগে ভুগছেন। রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে তাকে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করানো হয়।

বিজ্ঞাপন

দীর্ঘ চার দশক ধরে রেডিও, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে নিয়মিত গান করে আসছেন সুবীর নন্দী। উপহার দিয়েছেন হাজারও জনপ্রিয় গান। তার কণ্ঠে ‘আমার এ দু’টি চোখ পাথর তো নয়’, ‘পাহাড়ের কান্না দেখে’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘আশা ছিল মনে মনে’, ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘বন্ধু তোর বরাত নিয়া’, ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, ‘তুমি এমনই জাল পেতেছ’, ‘ও আমার উড়াল পঙ্খীরে’, ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, একটা ছিল সোনার কইন্যা’ গানগুলো চিরসবুজ হয়ে রয়েছে কোটি কোটি শ্রোতার মনের কুঠুরীতে।

১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্র দিয়ে প্লেব্যাক ক্যারিয়ার শুরু সুবীর নন্দীর। পরে সহস্রাধিক চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। ১৯৮১ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’। পরে ‘প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘ভালোবাসা কখনো মরে না’, ‘সুরের ভুবনে’, ‘গানের সুরে আমায় পাবে’, ‘প্রণামাঞ্জলী’ শিরোনামে তার একক অ্যালবাম বাজারে আসে, শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। তবে সুবীর নন্দীর প্রথম গান রেডিওতে, সিলেট বেতারে ১৯৬৭ সালে। ঢাকা বেতারে তার প্রথম গান ১৯৭০ সালে— ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’।

সুবীর নন্দী জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন চার বার। বাচসাস পুরস্কারও পেয়েছেন চার বার। গানে অবদান রাখায় এ বছর তাকে ভূষিত করা হয়েছে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে।

হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়ায় সুবীর নন্দীর জন্ম ১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর। বাবা চাকরি করতেন চা বাগানে। ছোটবেলা কেটেছে সেখানেই। ছোটবেলাতেই মা পুতুল রানীর কাছে গানে হাতেখড়ি। পরে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নিয়েছেন ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে।

সারাবাংলা/আরএসও/টিআর/পিএ

লাইফ সাপোর্ট সিএমএইচ সুবীর নন্দী

বিজ্ঞাপন

খুলনায় যুবকের পেটে মিলল ইয়াবা
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর