কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীর বিদায়
৭ মে ২০১৯ ০৫:৩৮
গুণীজন বিদায়ের তালিকায় যুক্ত হলো সুবীর নন্দীর নাম। মঙ্গলবার (৭ মে) বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টা ২৬ মিনিটে তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সারাবাংলাকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন শিল্পীর মেয়ে জামাতা রাজেশ শিকদার।
মৃত্যুকালে সুবীর নন্দীর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। গত ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখে শ্রীমঙ্গল থেকে ঢাকা ফেরার পথে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএএইচ) ভর্তি করা হয়। সেখানে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরে হার্ট অ্যাটাক করেন তিনি। ৩-৪ মিনিটের চেষ্টার পরে হৃদযন্ত্র সচল হলে নন্দিত এই সংগীতশিল্পীকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৩০ এপ্রিল সুবীর নন্দীকে নেয়া হয় সিঙ্গাপুরে। সেদিন থেকেই শুরু হয় তার চিকিৎসা।
রোববারও (৫ মে) তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তারপর হার্টে চারটি স্টেন্টও পরানো হয়। এরপর সোমবার (৬ মে) সকালেও আরেক দফা তার হার্ট অ্যাটাক করে এবং মাল্টিপাল অরগান অকার্যকর হয়ে যায়।
সুবীর নন্দী ১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানায় নন্দী পাড়া নামক মহল্লায় এক কায়স্থ সম্ভ্রান্ত সঙ্গীত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন।
ছোটবেলা থেকেই তিনি ভাই-বোনদের সঙ্গে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নিতে শুরু করেন ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে। তবে সঙ্গীতে তার হাতেখড়ি মায়ের কাছেই।
সুবীর নন্দী গানের জগতে আসেন ১৯৭০ সালে ঢাকা রেডিওতে প্রথম রেকর্ডিং এর মধ্য দিয়ে। প্রথম গান ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’। গানটির গীত রচনা করেন মোহাম্মদ মুজাক্কের এবং সুরারোপ করেন ওস্তাদ মীর কাসেম।
৪০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গেয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি গান। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গেয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। চলচ্চিত্রে প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে আব্দুস সামাদ পরিচালিত সূর্যগ্রহণ চলচ্চিত্রে। ১৯৮১ সালে তার একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে বাজারে আসে। তিনি গানের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ব্যাংকে চাকরি করেছেন।
চলচ্চিত্রের সঙ্গীতে তার অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করেন। এছাড়া সঙ্গীতে অবদানের জন্য ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।
সারাবাংলা/আরএসও/এসবি
সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল সুবীর নন্দী সুবীর নন্দী শেষ নি:শ্বাস