জটিলতায় শুভ’র স্বপ্নভঙ্গ
১১ মে ২০১৯ ১৩:৩৭
পাপী মরে দশ ঘর নিয়ে—বাংলায় এরকম একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদ আছে। এবার যেনো সেই প্রবাদ বাস্তবরূপে দেখা দিলো। মাস খানেক আগে ভারতের লোকসভা নির্বাচনে প্রচারণায় অংশ নিয়ে তোপের মুখে পড়েছিলেন ফেরদৌস। যার ফলে খুইয়েছেন ভারতের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা। হয়েছেন ভারতীয় দূতাবাসের কালো তালিকাভুক্ত।
ফেরদৌসের মতো আরেক অভিনেতা গাজী আব্দুন নূরও প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলন পশ্চিমবঙ্গে। তাকেও একই পরিণতি ভোগ করতে হয়। এছাড়া ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবৈধভাবে ভারতে অবস্থানের অভিযোগও আনা হয় নূরের বিরুদ্ধে। ফলে বাধ্য হয়ে দেশে ফিরে আসতে হয় তাকে।
এই দুইজনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে পশ্চিমবঙ্গের ছবিতে বাংলাদেশি অভিনয়শিল্পীদের কাজের সুযোগ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। নাম প্রকাশ না করে একটি সূত্র জানাচ্ছে, বাংলাদেশি অভিনয়শিল্পীদের আপাতত ওয়ার্ক পারমিট ভিসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় দূতাবাস।
ভারতীয় দূতাবাসের এমন সিদ্ধান্তের কারণে টালিগঞ্জের একটি আলোচিত ছবির কাজ হাতছাড়া হয়ে গেলো দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা আরিফিন শুভর। ‘অভিযাত্রিক’ নামে একটি ছবি নির্মাণ করতে যাচ্ছেন কলকাতার পরিচালক শুভ্রজিৎ রায়। এই ছবিতে কেন্দ্রিয় চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল বাংলাদেশি জনপ্রিয় এই অভিনেতার। কিন্তু ভিসা জটিলতার জেরে সিনেমা থেকে বাধ্য হয়ে তাকে বাদ দিতে হয়েছে।
তবে ‘বাদ’ শব্দটিতে আপত্তি আছে শুভ্রজিৎ মিত্রর। তিনি বলেন, ‘বাদ ঠিক বলা যাবে না। ফেরদৌস আর নূরের বিতর্কিত কাণ্ডের কারণে কোনো বাংলাদেশি শিল্পীকে ওয়ার্ক পারিমিট দেয়া হচ্ছে না। সেজন্য ছবিটিতে আরিফিন শুভর অভিনয় করা হচ্ছে না।’
শুভ্রজিৎ মিত্রর কথায় প্রচণ্ড রকমের হতাশা প্রকাশ পেলো। অনেকটা আফসোস করেই বললেন, ‘ফেরদৌস ও নুর যে কেনো তখন নির্বাচনে প্রচারণায় অংশ নিতে গেলেন! প্রচুর টাকা ক্ষতি হয়ে গেলো আমাদের। সব চূড়ান্ত করে ফেলেছিলাম আমরা। মে মাসের ১৫ তারিখ থেখে শুটিং শুরু হওয়ার কথা ছিল। আমদের পুরো টিম কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে। এখন রাতারাতি কাউকে রিপ্লেসমেন্টও করা যাচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েকমাস ধরে ছবিটি নিয়ে পুরো টিম পরিশ্রম করে যাচ্ছিল। এখন সেই পরিশ্রমটাই বৃথা গেলো। আমরা দিল্লিতে শুভর ভিসার বিষয়ে আলাপ করেছিলাম। কিন্ত কাজ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ছবির কাজটা পিছিয়ে গেলো। এবছর ছবিটি মুক্তি দিতে পারব না।’
প্রসঙ্গত, ছয় দশক আগে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৃষ্ট চরিত্র ‘অপু’কে রূপালী জগতে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। বিখ্যাত ওই ঔপন্যাসিকের ‘পথের পাঁচালি’ ও ‘অপরাজিত’ উপন্যাসকে তিনভাগে ভাগ করে ট্রিলজি নির্মাণ করেছিলেন সত্যজিৎ। সেই ‘অপরাজিত’ উপন্যাসের শেষ ১০০টি পাতার ওপর নির্ভর করে ‘অভিযাত্রিক’ ছবি নির্মাণ করার পরিকল্পনা করেছিলেন পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র ।
সারাবাংলা/আরএসও/পিএম