সুবীর নন্দীর গান সংরক্ষণের উদ্যোগ
২৩ মে ২০১৯ ১৩:৩৫ | আপডেট: ২৩ মে ২০১৯ ১৪:২৫
কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দী মারা গেছেন গত ৭ মে। দৈনন্দিন কাজ আর নতুন নতুন ঘটনার ভিড়ে না থাকা মানুষটিকে ভুলে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না। কিন্তু এমন কিছু মানুষ আছেন যারা দেহত্যাগ করলেও সহজে ভুলে যাওয়া যায় না। তাদের রেখে যাওয়া সৃষ্টিগুলো তাকে স্মরণ করিয়ে দেয় বারবার। সুবীর নন্দী তেমনি একজন মানুষ।
সুবীর নন্দীর চলে যাওয়া এখনো তার অনুরাগীরা মেনে নিতে পারেননি। মেনে নিতে পারেননি তার দীর্ঘ দিনের সহকর্মীরা। সেকারণে এই গানের পাখিকে স্মরণ করতে বুধবার (২২ মে) জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজন স্মরণানুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। সভাপতি ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি।
আরও পড়ুন : ঢাকা টু কান: স্বপ্ন অনেক, প্রয়োজন সরকারি উদ্যোগ
স্মরণানুষ্ঠানের শুরুতে সুবীর নন্দীর আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। তারপর আগত অতিথীরা সুবীর নন্দীকে নিয়ে একের পর এক স্মৃতিচারণ করেন।
সাবিনা ইয়াসমিন সুবীর নন্দীর স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘সুবীর নন্দী ও তার গান সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। তিনি কতটা ভালো মানুষ ছিলেন–সেটা সবাই জানেন। “ছুটির ঘণ্টা” ছবিতে “রহমত ভাই, তোমায় নাম দস্তখত শেখাতে চাই” গানে কণ্ঠ দিয়েছিলাম আমরা। তারপর অসংখ্য গানে কণ্ঠ দিয়েছি একসেঙ্গে। বাংলা গানকে সমৃদ্ধ করতে সুবীর নন্দী যে অবদান রেখে গেছেন, তা কোনোদিন ভোলার নয়। আমার বিশ্বাস এই প্রজন্ম সুবীর নন্দীকে বেশি বেশি করে চর্চা করবে।’
প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ সুবীর নন্দীর গানগুলো সংরক্ষণের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘সুবীর নন্দীর অকালেই চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। তার চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের সংস্কৃতিতে বিরাট শূণ্যতা সৃষ্টি হলো। তার গান বাংলা সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেকারণে তার গান সংরক্ষণ করা হবে সরকারিভাবে। সংরক্ষিত সেসব গানের মধ্যে দিয়ে আগামী প্রজন্ম সুবীর নন্দী সম্পর্কে জানতে পারবে।’
স্মৃতিচারণ পর্ব ও স্মরণ অনুষ্ঠানের শেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিল্পকলার মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি। তিনি সুবীর নন্দীকে স্মরণ করতে এবং তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আমরা সুবীর নন্দী সংগীত উৎসব করতে পারি প্রতি বছর। তাকে নিয়ে একটি সুভিনিয়র প্রকাশ এবং একটি তথ্যচিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছি।’
রাষ্ট্রিয়ভাবে দেশের যেসব গুণী শিল্পীদের জন্মবার্ষিকী পালক করা হয়, সেই তালিকায় সুবীর নন্দীর নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদকে অনুরোধ করেন লিয়াকত আলী লাকী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ আব্দুল হাদি, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, শফিক তুহিন, জয় শাহরিয়ারসহ সংগীতাঙ্গনের অনেক খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব। প্রয়াত সুবীর নন্দীর সহধর্মীনি পূরবী নন্দী, মেয়ে ফাল্গুনী নন্দীও বক্তব্য রাখেন স্মরন অনুষ্ঠানে।
সারাবাংলা/আরএসও/পিএ
আরও পড়ুন : চলে গেলেন শিল্পী খালিদ হোসেন
নাট্যশালা বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সুবীর নন্দী স্মরণানুষ্ঠান