বিভেদ তৈরি আমার উদ্দেশ্য ছিল না: নুহাশ হুমায়ূন
২৩ মে ২০১৯ ২০:১২
নির্মাতা নুহাশ হুমায়ূন নির্মিত একটি মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপন নিয়ে সম্প্রতি আলোচনা-সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
‘টেকনো’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপনটির শিরোনাম ‘রানিং রাফি’। এটি একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মাণ করা হয়েছে। টেকনো মোবাইল (বিডি) নামের ইউটিইব চ্যানেলে বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় আগ্রাসনের অভিযোগ উঠেছে বিজ্ঞাপনটির বিরুদ্ধে।
এমন অবস্থায় বুধবার (২২ মে) বিকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখিত মন্তব্য করেছেন নুহাশ হুমায়ূন। সেখানে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
‘আমার নির্মিত নতুন একটা বিজ্ঞাপন নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। আমি এরসাথে কিছু যোগ করতে চাই।
এই বিজ্ঞাপনটি আমি নির্মাণ করেছি, কিন্তু এটার মুল ভাবনা আমার ছিল না। থার্ড পার্টি যখন কনসেপ্টটা দেয়, আমার কাছে ভাল লাগে। কনসেপ্টটা হলো পরিবার নিয়ে।
আরও পড়ুন : দুই সংগঠনের বিরোধে থমকে আছে সংশোধিত কপিরাইট আইন
একটা প্রত্যন্ত গ্রাম। যেখানে মুসলিমরা হলো সংখ্যালঘু। এটা রমজান মাসের উপর ফোকাস করা একটা বিজ্ঞাপন। কিন্তু এর মূল ভাবনা শুধু রমজানের রোজা রাখায় সীমাবদ্ধ না। এটা একাত্মতা আর বন্ধনেরও গল্প।
আমার কাজটি যেন বাস্তবসম্মত হয়, তাই আমি আমার টিমে এথনিক কমিয়্যুনিটি (আদিবাসী) থেকে প্রতিনিধি রেখেছিলাম।
কিন্তু যেহেতু বিজ্ঞাপনের প্রথমে লেখা দেখায়- ‘A Nuhash Humayun Film’, তাই পরিচালক হিসাবে এর সব দায়িত্ব আমারই। এই বিজ্ঞাপনটা আমিই নির্মাণ করেছি, গল্পটাও আমার পছন্দ হয়েছে, এর স্ক্রিপ্ট আমি পরিমার্জন করেছি, যেই সোর্স থেকে তথ্য পেয়েছি– তাও বিশ্বাস করেই ব্যবহার করেছি। এই বিজ্ঞাপনের সব দায়দায়িত্ব মাথায় নিয়েই, আমি গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি তাদের কাছে, যারা বিজ্ঞাপনটি দেখে কোনভাবে কষ্ট পেয়েছেন অথবা যাদের কাছে মনে হয়েছে আমি চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছি। আমি বিনীত ভাবে জানাতে চাই, কাউকে কষ্ট দেয়া বা আঘাত করা কখনই আমার উদ্দেশ্য ছিলনা।
চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আর সমস্যা মিডিয়াতে তেমনভাবে সামনে আসেনা। আমরা সেইসব গুরুত্বপূর্ণ জিনিসকে বাদ দিয়ে বিজ্ঞাপনটা নির্মাণ করেছি খুব সরলীকরণ করে, দেখে ভাল লাগবে এমন একটা গল্প নিয়ে। যেখানে অবশ্যই আগে চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সেইসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে আসা প্রয়োজন ছিল।
অনেক মানুষ আমাকে তাদের মতামত জানাচ্ছেন। কিছু ভাল, কিছু খারাপ আর কিছু বেশ কঠিন। অবশ্যই এইসব মতামত আমাকে নির্মাণের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আরো অনেক দায়িত্ববান ও যত্নশীল করে তুলবে।
আমি এটাও দেখলাম অনেকেই এখানে টেনে আনছেন আমার পরিবারকে, ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করছেন আমাকে, যেই ছেলেটি বিজ্ঞাপনের প্রধান ভুমিকায় অভিনয় করেছেন-তাকেও নোংরা ভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। এইসব ঘৃণা প্রকাশ মূল বিষয়ের সাথে সংগতিহীন।
এই বিজ্ঞাপনের গল্পটি আমার ভাল লেগেছিল, কারন এটার মূল ভাবনা ছিল একাত্মতা প্রকাশ। আমার ভাবতে খুব খারাপ লাগছে, এই বিজ্ঞাপনটা কোনভাবে বিভেদ তৈরি করছে! কোনভাবেই সেটা আমার উদ্দেশ্য ছিল না।
যারা এই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে লিখছেন, কথা বলছেন, আর ভাল মন্দ যাই ভাবছেন-আমি আপনাদের জানাতে চাই, আমি আপনাদের কথা শুনছি, শিখছি আর আর পরিণত হচ্ছি।’
সারাবাংলা/পিএ
আরও পড়ুন :
. শিল্পী খালিদ হোসেনের দুটি জানাজা সম্পন্ন, দাফন কুষ্টিয়ায়
. ঢাকায় একদিনে হলিউডের নতুন ৩ ছবি
. সুবীর নন্দীর গান সংরক্ষণের উদ্যোগ
. ঢাকা টু কান: স্বপ্ন অনেক, প্রয়োজন সরকারি উদ্যোগ
. চলে গেলেন শিল্পী খালিদ হোসেন