Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ট্র্যাজেডি কিং’ দীলিপ কুমার এসেছিলেন ঢাকায়


১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৫:৪১

(বাঁ থেকে) আনিসুল হক, দীলিপ কুমার, চাষী নজরুল ইসলাম ও ওবায়দুল হক। ছবি: মীর শামসুল আলম বাবু

ভারতীয় তথা হিন্দি সিনেমার ‘ট্র্যাজেডি কিং’ হিসেবে সমধিক পরিচিত দীলিপ কুমার। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে বলিউড কাঁপানো নায়ক ছিলেন তিনি। সেসময় বলিউডে তার সমসাময়িক নায়ক ছিলেন দেব আনন্দ ও রাজ কাপুর। এই ত্রিরত্নকে নিয়ে ছিল তখনকার বলিউড দুনিয়া।

তবে সবার থেকে যেন দীলিপ কুমার একটু বেশি এগিয়ে ছিলেন। বিশেষ করে দুঃখের বা ট্র্যাজেডি দৃশ্যে তার অনবদ্য অভিনয় দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখত।  কেউ কেউ আবার চোখের জল বিসর্জন দিতেন তার অভিনয় দেখে।

বিজ্ঞাপন

শুধু ভারত নয়, উপমহাদেশে অন্যান্য দেশগুলোতেও দীলিপ কুমারের অভিনয়ের সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। সেই জনপ্রিয়তার জোয়ারে ভেসে দীলিপ কুমারের পা পড়েছিল বাংলাদেশে। ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঠিক চার বছর আগে ১৯৯৪ সালে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের উদ্যোগে তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন।

উজ্জ্বল, দিলীপ কুমারের ভাই (নায়ক আইয়ুব খানের বাবা নাসির খান), দিলীপ কুমার ও সাবেক মন্ত্রী সালাম তালুকদার। ছবি: মীর শামসুল আলম বাবু

উজ্জ্বল, দিলীপ কুমারের ভাই (নায়ক আইয়ুব খানের বাবা নাসির খান), দিলীপ কুমার ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুস সালাম তালুকদার। ছবি: মীর শামসুল আলম বাবু

বাংলাদেশে দীলিপ কুমারকে তিন দফা সংবর্ধনা দেয়া হয়। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা তাকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)—তে, সরকারিভাবে ওসমানি মিলনায়তনে এবং জাতীয়ভাবে মিরপুর জাতীয় স্টেডিয়ামে। মিরপুর স্টেডিয়ামে তাকে ঘোড়ার গাড়িতে করে ঘোরানো হয়।

দীলিপ কুমার যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন তখন দেশের ক্ষমতায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকার। বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানেও তিনি উপস্থিত ছিলেন।

দীলিপ কুমারকে সংবর্ধিত করার অনুষ্ঠানের ছবি তুলেছিলেন ফটোগ্রাফার মীর শামসুল আলম বাবু। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সম্পর্কে বাবু বলেন, ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চাষী নজরুল ইসলাম আমাকে ছবি তোলার দায়িত্ব দেন। আমি অন্তত তিন রিল ছবি তুলেছিলাম। সবগুলোর নেগেটিভ আমার কাছে এখনো গচ্ছিত আছে। তিনি চার দিন ছিলেন বাংলাদেশে। তাকে নিয়ে একটি স্মরনিকাও বের হয়েছিলো-সেটাও আছে আমার কাছে।

বিজ্ঞাপন

ছবি তোলার সুবাদে মীর শামসুল আলম বাবু খুব কাছ থেকে দেখেছেন উপহাদেশের এই জনপ্রিয় অভিনেতাকে। বাবুর ভাষায়, অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী, চমৎকার ইংরেজি, উর্দু, হিন্দি বলেন—পেশোয়ারের পাঠান বংশের সব গুন দেখেছি তার মধ্যে।

চিত্রনায়িকা কবরি, দীলিপ কুমার ও চাষী নজরুল ইসলাম। ছবি: মীর শামসুল আলম বাবু

চিত্রনায়িকা কবরী, দীলিপ কুমার ও চাষী নজরুল ইসলাম। ছবি: মীর শামসুল আলম বাবু

সেসময় দীলিপ কুমার বাংলাদেশে এসে মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং বাংলাদেশের আতিথেয়তার ভূঁয়সী প্রশংসা করেছিলেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, মাত্র ৬১ টি ছবিতে অভিনয় করেই ভারতীয় ছবির সবচেয়ে মহাতারকা এখনো বেঁচে আছেন। ধর্মেন্দ্র অমিতাভ, রজনীকান্ত, কমল হাসান, শাহরুখ, আমির থেকে শুরু করে বলিউড তারাকারা কেনো তাকে অনুসরন করে তা বোঝা যায়!

পাকিস্তানের খাইবারে ১১ ডিসেম্বর ১৯২২ সালে জন্মগ্রহণ করেন দীলিপ কুমার। তার নাম রাখা হয় মুহাম্মদ ইউসুফ খান। বাবা লালা গোলাম সারওয়ার ছিলেন ফল ব্যবসায়ী। ছোট্ট ইউসুফ খান প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন পাকিস্তানেই। ১৯৩০ সালের শেষ দিকে তাদের পরিবার মুম্বাইয়ে পাড়ি জমান।

(বাঁ থেকে) দিলীপ কুমার, আনিসুল হক,চাষী নজরুল ইসলাম ও খান আতাউর রহমান। ছবি: মীর শামসুল আলম বাবু

(বাঁ থেকে) দিলীপ কুমার, আনিসুল হক,চাষী নজরুল ইসলাম ও খান আতাউর রহমান। ছবি: মীর শামসুল আলম বাবু

দিলীপ কুমার ১৯৪৪ সালে বোম্বে টকিজের ব্যানারে জোয়ার ‘ভাটা’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র পা রাখেন। গোটা চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার সাজিয়েছেন বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করে। রোমান্টিক ধাঁচের চলচ্চিত্র হিসেবে ১৯৪৯ সালের ‘আন্দাজ’, ১৯৫২ সালে ‘বেপরোয়া’ বা ‘হঠকারী’ এবং চালবাজ চরিত্রে ‘আন’, ১৯৫৫ সালে নাটকীয় চরিত্রে ‘দেবদাস’, ১৯৫৫ সালের হাস্যরসাত্মক চরিত্রে ‘আজাদ’, ১৯৬০ সালে ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র ‘মুঘল-ই-আজম’ এবং ১৯৬১ সালের সামাজিক ঘরানার চলচ্চিত্র ‘গঙ্গা যমুনা’ ছবিতে অভিনয় করেন এই গুণী অভিনেতা।

বর্তমানে দীলিপ কুমারের বয়স ৯৬ বছর। তার স্ত্রী সায়রা বানু জানিয়েছেন, বয়সজনিত অসুস্থতার কারণে এখন ঘন ঘন তাকে হাসপাতালে নিতে হচ্ছে।

ঢাকা দীলিপ কুমার

বিজ্ঞাপন

সিইসি ও ৪ কমিশনারের শপথ আজ
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ০১:৩৩

ফের দাপট দেখালেন সাকিব
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:০৪

আরো

সম্পর্কিত খবর