আজ থেকে শুরু হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক নৃত্য উৎসব
২২ নভেম্বর ২০১৯ ১২:৩৪
বাংলাদেশে শুরু হতে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক নৃত্য উৎসব ‘ওশান ডান্স ফেস্টিভ্যাল-২০১৯’। নৃত্যশিল্পীদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়ার্ল্ড ডান্স অ্যালায়েন্স, এশিয়া প্যাসিফিক (ডব্লিউডিএ-এপি)-এর বাংলাদেশ শাখা নৃত্যযোগের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো এত বড় একটি উৎসবের সূচনা হতে যাচ্ছে।
নির্বাচিত তারকা শিল্পী ও প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ শিল্পীরা তাদের দল নিয়ে এ উৎসবে উপস্থাপন করবেন শাস্ত্রীয় নৃত্য, সমসাময়িক নৃত্য, লোকনৃত্য ও নৃত্যনাট্য। এ ছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচিত শিল্পীরা উপস্থাপন করবেন বিষয়ভিত্তিক প্রযোজনা। বাংলাদেশে আসা বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের সঙ্গে থাকবে যৌথ পরিবেশনাও।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় কক্সবাজারের কক্স কার্নিভাল মিলনায়তন মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে চার দিনের এ উৎসব উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি এবং কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনের অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, তৃতীয় দিন থাকবেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. ভুবন চন্দ্র বিশ্বাস এবং চতুর্থ দিন অতিথি থাকবেন কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাসের সহকারী হাইকমিশনার শ্রী অনিন্দ্য ব্যনার্জি ও জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
এ বছর ওশান ডান্স ফেস্টিভ্যালের বিষয়বস্তু ‘দূরত্বের সেতুবন্ধন’। এতে নৃত্যকলার মধ্য দিয়ে সমাজের ভেতরকার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দূরত্বে সেতু স্থাপনের ধারণা তুলে ধরা হবে। উৎসবে এ সংশ্লিষ্ট বক্তব্যের ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ভারতীয় শিল্পী লীলা স্যামসন, ডব্লিউডিএ-এপির সভাপতি ড. উর্মিমালা সরকার, বাংলাদেশের শিল্পী-সংগঠক, ডব্লিউডিএ-এপির সাধারণ সম্পাদক লুবনা মারিয়ামসহ আরও বেশ কয়েক জন পণ্ডিত। ভিডিওর মাধ্যমে এ উৎসবে যুক্ত হবেন বাংলাদেশি বংশদ্ভূত ব্রিটিশ নৃত্যশিল্পী আকরাম খান। প্রতিদিন কক্সবাজারের মারমেইড ইকো রিসোর্টে ভোর থেকে থাকবে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, কর্মশালা, সেমিনার। বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে লাবনী সৈকত সংলগ্ন কক্স কার্নিভালে থাকবে নৃত্য উপস্থাপন।
সাংস্কৃতিক পর্যটনের প্রসারের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পর্যটনকে তুলে ধরার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো এ উৎসবের আয়োজন করেছে নৃত্যযোগ। বিশ্বের ১৫টি দেশ থেকে উৎসবে যোগ দিচ্ছেন প্রায় ২ শ নৃত্যশিল্পী, শিক্ষক, গবেষক ও কোরিওগ্রাফার।
উৎসবের আয়োজক প্রতিষ্ঠান নৃত্যযোগের সাধারণ সম্পাদক ও ওশান ডান্স ফেস্টিভ্যালের প্রিন্সিপাল কিউরেটর লুবনা মারিয়াম এ উৎসব প্রসঙ্গে বলেন, এই উৎসবটি শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক পর্যটনের সুযোগ ও সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যাবে। যে পর্যটকেরা কেবল সৈকত দেখতে বাংলাদেশে আসতেন, তারা এই উৎসবকেও তাদের ভ্রমণের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করে বাংলাদেশে আসবেন। আমরা বিশ্বব্যাপী সেভাবেই এই উৎসবকে তুলে ধরতে চেষ্টা করছি। আশা করছি, অদূর ভবিষ্যতে এই উৎসবটি বিশ্বসংস্কৃতির অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে আরও উজ্জ্বল করবে।
নৃত্যযোগের সভাপতি নৃত্যশিল্পী আনিসুল ইসলাম হিরু বলেন, আয়োজনের প্রথম বছরেই আমরা যে পরিমাণ সাড়া পেয়েছি, সেটা অভাবনীয়। বহু শিল্পীকে এবার মঞ্চে পরিবেশনের সুযোগ দিতে পারিনি। তবে যে পরিমাণ সাড়া পেয়েছি, সে পরিমাণ আর্থিক সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। অবশ্য বহু প্রতিষ্ঠান আশ্বাস দিয়েছে, ভবিষ্যতে তারা আমাদের সঙ্গে থাকবে।
এ উৎসবের আয়োজন সহযোগী হিসেবে আছে মাত্রা ও চ্যানেল আই। সমর্থন দিচ্ছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও টুরিজম বোর্ড। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ এ আয়োজনের অ্যাকাডেমিক সহযোগী।