শ্রদ্ধায় শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মরণ
১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:৩৯
কাইয়ুম চৌধুরী। স্বাতন্ত্র্য শিল্পগুণে যিনি দেশ ও কালের গণ্ডি ছাপিয়ে স্থান করে নিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। শিল্পের নানা আঙ্গিকের পাশাপাশি গ্রাফিক্স ডিজাইনে নবরূপের পথিকৃৎ তিনি। কাইয়ুম চৌধুরীর যেখানেই হাত দিয়েছেন, এনেছেন সাফল্য।
গত ৩০ নভেম্বর ছিল কিংবদন্তীতুল্য এই শিল্পীর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। সে উপলক্ষেই মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো কাইয়ুম চৌধুরী স্মরণানুষ্ঠান। একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে শিল্পবিষয়ক আলোচনা, গদ্য ও কবিতার নির্বাচিত পাঠ এবং প্রিয় গানের গ্রন্থনায় সাজানো হয় অনুষ্ঠানটি।
স্মরণানুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির সচিব মো. বদরুল আনম ভূঁইয়া, শিল্পী কাইয়ুম চৌধরী স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও তাহেরা চৌধুরী। মূল বক্তব্য রাখেন শিল্প সমালোচক অধ্যাপক আবুল মনসুর।
‘সৃজন ও রুচির যাত্রাপথ: কাইয়ুম চৌধুরীর দৃশ্যজগত’ শিরোনামে আলোচনায় বক্তারা বলেন, শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর তিরোধানের পাঁচ বছর পূর্তিতেও তার অস্তিত্বের বিপুলতা এখনো সবাইকে ঘিরে রয়েছে। তার চলে যাওয়ার আকস্মিকতার ঘোর এখনো বাঙালির মন থেকে পুরোপুরি কেটে যায়নি।
বক্তারা আরও বলেন, পঞ্চাশের দশকের অনেক শিল্পীই দৃশ্যকলার জগতে খ্যাতিমান হয়ে উঠেছিলেন। মোহাম্মদ কিবরিয়া, আমিনুল ইসলাম, মুর্তজা বশীর, রশিদ চৌধুরী, হামিদুর রহমান, নভেরা আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল বাসেত, দেবদাস চক্রবর্তী, সৈয়দ জাহাঙ্গীর, নিতুন কুন্ডুর মতো এসব শিল্পীর সঙ্গে উচ্চারিত হতেন শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীও। পঞ্চাশের অধিকাংশ শিল্পীই চিত্রাঙ্কনে হাত পাকিয়েছেন এবং চিত্রশিল্পী হিসেবে সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন। আব্দুর রাজ্জাক চিত্রকলার সাথে ভাস্কর্য, আর কিবরিয়া, মুর্তজা বশীর হামিদুর রহমান, নিতুন কুন্ডু ছাপাই ছবি করলেও তাদের পরিচিতি মুলত চিত্রকর হিসেবে। মুর্তজা বশীর গল্পকার, কবি, চিত্রনাট্যকার ও সহপরিচালক এবং মুদ্রাগবেষক হিসেবেও প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। মুর্তজা বশীর ছাড়া বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী আরও একজন রয়েছেন, যিনি শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। কাইয়ুম চৌধুরী তার আগ্রহের সব বিষয়ে হাত দেননি, তবে যে বিষয়ে হাত দিয়েছেন, সেখানে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে মৃত্তিকা সহিতার পরিকল্পনা ও গ্রন্থনায় উপস্থাপন করা হয় ‘জীবনে আমার যত আনন্দ’। এতে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী বিষয়ে পাঠ করেন ভাস্বর বন্দ্যেপাধ্যায় এবং সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী বুলবুল ইসলাম, তানিয়া মান্নান, জান্নাত এ ফেরদৌসী লাকী, সত্যজিত ঘোষ, পূরবী বড়ুয়া, মৃত্তিকা সহিতা, টিংকু শীল, সমি সুহৃদ, শ্রাবন্তীধর, জাহিদ কিরণ, পর্ণা দেব রায় পিউ, দিপ্র নিশান্ত, প্রিয়াংকা সরকার ও রতন মজুমদার।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি মৃত্যুবার্ষিকী শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী