এ আর রহমান, জন্মদিন ও তার সুরের সেরা দশ চলচ্চিত্র
৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৫:৪৯
তার ঝুলিতে দুটি অস্কার, একটি বাফটা অ্যাওয়ার্ড, দুটি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড, ছয়টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার, একটি গোল্ডেন গ্লোব এবং ১৫ টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার। তার সুরের সুরধ্বনিতে মাতোয়ারা সারা বিশ্বের আট থেকে আশি। আদর করে তাকে ডাকা হয় মোজার্ট অব মাদ্রাজ আর স্থানীয় ভাষায় ‘ইসাই পুয়াল’ বা সঙ্গীতের ঝড়। মাদ্রাজ শুনেই বুঝতে পারছেন তিনি আর কেউ নন, গ্রেট মায়েস্ত্রো এ আর রহমান।
১৯৬৭ সালের ৬ জানুয়ারি ভারতের মাদ্রাজে তার জন্ম। একাধারে একজন সুরকার, গায়ক এবং সঙ্গীতকার। ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সঙ্গে বৈশ্বিক সঙ্গীত, ঐতিহ্যবাহী অর্কেস্ট্রা ও ইলেক্ট্রনিক মিউজিকের সমন্বয়ে তিনি সৃষ্টি করেছে স্বতন্ত্র ধারা।
শুধু ভারতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি তার বিস্তৃত প্রতিভার প্রদর্শন। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বিভিন্ন চলচ্চিত্রে সুরারোপ করেছেন তিনি। বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রীত অ্যালবামের শিল্পীদের অন্যতম তিনি। বিশ্বজুড়ে ১৫০ মিলিয়নেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে তার অ্যালবাম। স্বীকৃতিস্বরূপ শুধুমাত্র বিভিন্ন পুরষ্কারই অর্জন করেননি, ২০১০ সালে তাকে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পদ্মশ্রী তে ভূষিত করা হয়।
ভারতের প্রায় সব চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে তার বিচরন। হিন্দি থেকে শুরু করে তামিল, তেলেগু, মালায়লাম, কান্নাড়া এবং ইংরেজি ভাষায় সমান পারদর্শি।
তার জন্মদিনে এ আর রহমানের সঙ্গীতায়োজনের সেরা দশটি চলচ্চিত্রের কথা উল্লেখ করা হল-
১. তামাশা (২০১৫)
ইমতিয়াজ আলী’র তামাশা চলচ্চিত্রে ‘মটরগশটি’র মত মজাদার গান যেমন আছে তেমনি রয়েছে ‘আগার তুম সাথ হো’ র মত গভীর ভাবপূর্ণ গান। এই ছবির গান মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হৃদয় ছুঁয়ে যায় ও তাৎক্ষনিকভাবে হিট হয়।
২. হাইওয়ে (২০১৪)
আবারও মন জিতে নেয় ইমতিয়াজ আলী ও এ আর রহমানের যুগলবন্দি। ‘পটাকা গুড্ডি’, ‘মাহি ভে’র মত গান জনপ্রিয়তা পায় মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে।
৩. রানঝানা/ রাঞ্ঝানা (২০১৩)
সোনাম কাপুর, অভয় দেওল এবং ধানুস অভিনীত এই চলচ্চিত্র নানা কারণে জনপ্রিয় হলেও এর সঙ্গীতের জন্য অনেক জনপ্রিয়। ‘বানারসিয়া’ ও ‘তুম তাক’ গানগুলো দ্রুতই জনপ্রিয়তা অর্জন করে নেয়।
৪. যাব তাক হ্যায় জান (২০১২)
শাহরুখ খান, আনুষ্কা শর্মা ও ক্যাটরিনা কাইফ অভিনীত চলচ্চিত্রটি বিখ্যাত পরিচালক ইয়াশ (যশ) চোপড়ার শেষ চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র তেমন একটা ব্যবসাসফল না হলেও এর গানগুলো উঠে আসে সেবছরের সঙ্গীতের সব তালিকার শীর্ষে। ‘শ্বাসো মে তেরি’, ‘ছালি রে’ এবং ‘ছাল্লা’ গানগুলোর কথা নিশ্চয়ই মনে আছে আপনাদের।
৫. রকস্টার (২০১১)
বলিউডে ব্যান্ড ও সঙ্গীতজ্ঞদের নিয়ে চলচ্চিত্র বানানো তেমন সাধারন ঘটনা না। সঙ্গীতজ্ঞ নিয়ে চলচ্চিত্র আর তাতে এ আর রহমান থাকবেন না তা হতে পারে না! ইমতিয়াজ আলী পরিচালিত রকস্টার রনবীর কাপুরকে শুধুমাত্র সুপারস্টার তকমাই এনে দেয়নি, ভারতীয় তরুণদের অ্যান্থেমে রূপান্তরিত হওয়া ‘সাদ্দা হক’ গানটিও উপহার দেয়।
৬. দিল্লী ৬ (২০০৬)
রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরার দিল্লী ৬ দর্শকদের ঘুরিয়ে আনে পুরনো দিল্লীর প্রাচীন সব গলি-ঘুপচির মধ্য দিয়ে। এর গানগুলোও পায় তুমুল জনপ্রিয়তা। এ আর রহমানের হাত ধরে ‘রেহনা তু’, ‘মাসাক্কালি’ এবং ‘আর্জিয়া’র মত গানে আবারও মুগ্ধ হন শ্রোতারা।
৭. রঙ দে বাসন্তী (২০০৬)
আমির খানের এই চলচ্চিত্রটি ভারতীয় তরুণদের আক্রোশ ও হতাশা তুলে ধরে। সঙ্গে ছিল এ আর রহমানের একদম সময়োপযোগী সঙ্গীতায়োজন। ‘লুকা ছুপি, ‘পাঠশালা’, এবং ‘খলবলি’র মতো গানে মেতে ওঠে তরুণ প্রজন্ম।
৮. সাথিয়া (২০০২)
রানী মুখার্জী-বিবেক ওবেরয় অভিনীত এই রোমান্টিক চলচ্চিত্রটির গানগুলো আজও সমান জনপ্রিয়। রোমান্টিক এই চলচ্চিত্রের ততোধিক রোমান্টিক গানগুলো আসলে সঙ্গীত জগতের প্রতি ভালোবাসা মাখা প্রেমপত্র বলা চলে।
৯. লাগান (২০০১)
দেশপ্রেমের উপর ভিত্তি করে বানানো আমির খান অভিনীত এই চলচ্চিত্রটিতে উঠে আসে দেশের মাটির গানের ছোঁয়া। ‘ও রে ছোড়ি’র মত রোমান্টিক গান যেমন শ্রোতাদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়, তেমনি ‘চালে চালো’র মত তেজদীপ্ত গান শুধুমাত্র শ্রুতিমধুরই নয়, গানের কথার জন্যও উঠে আসে সে বছরের গানের তালিকার শীর্ষে। মজার গান ‘রাধা ক্যায়সে না জ্বালে’ও পায় জনপ্রিয়তা।
১০. স্লামডগ মিলিয়নেয়ার (২০০৮)
অস্কার বিজয়ী গান ‘জয় হো’ ছাড়াও ‘রিং রিং রিঙ্গা’র মতো নাচের তালে মেতে ওঠার মত গান উপহার দেন অস্কারজয়ী সঙ্গীতজ্ঞ এ আর রহমান।
অস্কার এ আর রহমান দিল্লী ৬ মায়েস্ত্রো রকস্টার স্লামডগ মিলিয়নেয়ার