বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসবে ‘গুণাই বিবির পালা’
৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৯:০০
জমজমাট আয়োজনে চলছে ‘বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২০’। জাতীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টির উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রসারের মাধ্যমে মানবিক বাংলাদেশ গঠনে শিল্পকলা একাডেমি বহুমূখী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করা হল এই উৎসবের।
৩ থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ২১ দিনব্যাপী এই উৎসবে প্রতিদিনই থাকছে তিনটি করে জেলা, তিনটি উপজেলা এবং জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী ও সংগঠনের পরিবেশনা। এছাড়াও একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে একটি লোকনাট্য পরিবেশিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এই আয়োজনের পঞ্চম দিন। এদিন বিকেল ৪টা থেকে একাডেমি প্রাঙ্গণ নন্দনমঞ্চে পরিবেশিত হবে রাজবাড়ী, মৌলভীবাজার ও বগুড়া জেলার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং রাত ৮ টায় একাডেমি প্রাঙ্গণে দর্শনির বিনিময়ে ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য ‘গুণাই বিবির পালা’ অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল (সোমবার) উৎসবের চতুর্থ দিনে একাডেমি প্রাঙ্গণে বিকেলে অনুষ্ঠানের শুরুতেই পরিবেশিত হয় জাতীয় সংগীত। এদিন বিভিন্ন পরিবেশনায় ছিলেন জামালপুর, সিরজগঞ্জ ও পঞ্চগড় জেলার শিল্পীরা। জেলার পরিবেশনার আগে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ঢাকার পরিবেশনায় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী, বরেণ্য শিল্পী সৈয়দ হাসান ইমামের একক আবৃত্তি ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিল্পী- সাফান, শুপ্ত, শুসমী, অমিত, সাফিন ও লিথি’র সমবেত সংগীত পরিবেশনা। একক সংগীত পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিশু সংগীত দলের শিল্পী শ্রাবন্তী। এছাড়াও দীপা খন্দকারের পরিচালনায় ‘আয়রে আমার দামাল ছেলে’ ও ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’ গানের কথায় দুইটি সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে দিব্য সাংস্কৃতিক সংগঠন।
জামালপুর জেলার পরিবেশনার শুরুতে জেলা ব্র্যান্ডিং। এরপর একে একে পরিবেশিত হয় জারি গান, দেশাত্ববোধক গান, ঘেটু নাচ এবং দেশাত্ববোধক গানে সমবেত নৃত্য। একক সংগীতে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী টুটুল খান এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী সুমি আক্তার পরিবেশন করে লালনগীতি। যন্ত্র সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী মো. কবির, সঞ্জীব সেন, মো. বুলবুল ইসলাম, সেলিনা বেগম ও অজন্তা রহমান।
সিরাজগঞ্জ জেলার পরিবেশনায় প্রথমেই জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও প্রদর্শনী। এরপর পরিবেশিত হয় সমবেত সংগীত ও সমবেত নৃত্য। একক সংগীত পরিবেশন করে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী ড. জান্নাত আরা হ্যানরী এবং উপজেলা পর্যায়ে স্বপ্না সাহা এবং যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আজাদ রহমান, লিটন দাস, শাওন ও মানিক।
পঞ্চগড় জেলার পরিবেশনায় প্রথমেই জেলা ব্র্যান্ডিং ভিডিও প্রদর্শনী। এরপর পরিবেশিত হয় সমবেত সংগীত ও সমবেত নৃত্য। একক সংগীত পরিবেশন করেন জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী স্বরনীকা বিশ্বাস এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী রোকসান আক্তার এবং যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী রঞ্জিত সরকার, জ্যোতি, রউস ও রুহিনী সিংহ। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চগড় জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক আবু তোয়াবুর রহমান।
একাডেমি প্রাঙ্গণে রাত ৮টায় দর্শনীর বিনিময়ে অনিুষ্ঠিত হয় কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য পদ্মার নাচন। ‘চাঁদ সওদাগড়ের বানিজ্য পালা ও বেহুলার বিয়ে’ শীর্ষক লোকনাট্যটির নির্দেশনায় ছিলেন রেজাউল সলক এবং পরিবেশনায় নছিমন নাট্যগোষ্ঠী।
দেশের ৬৪টি জেলা, ৬৪টি উপজেলা এবং জাতীয় পর্যায়ের পাঁচ হাজারের অধিক শিল্পী ও শতাধিক সংগঠনের অংশগ্রহণে ২১ দিনব্যাপী একাডেমির নন্দনমঞ্চে এই শিল্পযজ্ঞ পরিচালিত হবে। ঐহিত্যবাহী লোকজ খেলা, লোকনাট্য ও সারাদেশের শিল্পীদের বিভিন্ন নান্দনিক পরিবেশনার মাধ্যমে সাজানো হয়েছে এই উৎসবের অনুষ্ঠানমালা।