বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসবে আজ ‘গাজীর পালা’
৯ জানুয়ারি ২০২০ ০৯:৩০
জমজমাট আয়োজনে চলছে ‘বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২০’। জাতীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টির উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রসারের মাধ্যমে শিল্প-সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বহুমুখী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করা হলো এই উৎসবের।
গত ৩ জানুয়ারি থেকে ২১ দিনব্যাপী এই উৎসবে প্রতিদিনই থাকছে তিনটি জেলা, তিনটি উপজেলা, জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী ও সংগঠনের পরিবেশনা। এছাড়া একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে একটি লোকনাট্য পরিবেশিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) এই আয়োজনের সপ্তম দিন। আজ বিকেল ৪টায় একাডেমি প্রাঙ্গণ নন্দনমঞ্চে পরিবেশিত হবে ঢাকা ও মানিকগঞ্জ জেলার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং রাত ৮টায় একাডেমি প্রাঙ্গণে দর্শনির বিনিময়ে ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য ‘গাজীর পালা’ অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল (বুধবার) উৎসবের ষষ্ঠ দিনে একাডেমি প্রাঙ্গণে বিকেলে অনুষ্ঠানের শুরুতেই পরিবেশিত হয় জাতীয় সঙ্গীত। এদিন বিভিন্ন পরিবেশনায় ছিলেন পটুয়াখালী, বান্দরবান ও নরসিংদী জেলার শিল্পীরা। জেলার পরিবেশনার আগে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ঢাকার পরিবেশনায় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী, একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিল্পী শুসমী এবং শিশু শিল্পী সাদিয়া সেমন্তী শ্রেয়সী। এম আর ওয়াসেক এর নৃত্য পরিচালনায় দু’টি সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে নন্দন কেলাকেন্দ্র। সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগ এবং একক আবৃত্তি করেন শিল্পী আহকামউল্লাহ।
পটুয়াখালী জেলার পরিবেশনার শুরুতে জেলা ব্রান্ডিং। এরপর একেএকে পরিবেশিত হয় সমবেত গান ও সমবেত নৃত্য। একক সঙ্গীত পরিবেশনায় ছিলেন জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী মালা কর্মকার এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী পুতুল মিত্র। যন্ত্র সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী আরিফ, শেখর, পুতুল ও রঞ্জিত।
বান্দরবান জেলার পরিবেশনায় প্রথমেই ছিল জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও প্রদর্শনী। এরপর পরিবেশিত হয় সমবেত সঙ্গীত ও একিনু মারমা’র নৃত্য পরিচালনায় মারমা বর্ষবরণ- ঐতিহ্যবাহী চাকমা দলীয় নৃত্য এবং বম পুষ্প নৃত্য। এছাড়া একক নৃত্য পরিবেশন করেন জাতীয় পর্যায়ের নৃত্যশিল্পী একিনু মারমা। লালন গীতি পরিবেশন করেন দেবী দিপ্ত রূপা ঐশি এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী সুমাইয়া আক্তার উমে এবং তবলায় সঙ্গত করেন শিল্পী শংকর দাস।
নরসিংদী জেলা পরিবেশনায় প্রথমেই ছিল জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও প্রদর্শনী। এরপর পরিবেশিত হয় সমবেত সঙ্গীত ও সমবেত নৃত্য। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী মেহরীন এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী রাবেয়া আক্তার সেতু এবং ত্রিতালে তবলায় লহরা পরিবেশন করেন যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পীরা।
একাডেমি প্রাঙ্গণে রাত ৮টায় দর্শনীর বিনিময়ে মা মনসা সম্প্রদায় বরিশালের পরিবেশনায় মঞ্চস্থ হয় ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য রয়ানী পালা ‘বেহুলা লখিন্দর’। বিজয়গুপ্ত’র রচনায় এটি পরিচালনায় ছিলেন ইন্দ্রজিত কীর্তনীয়া।
দেশের ৬৪টি জেলা, ৬৪টি উপজেলা এবং জাতীয় পর্যায়ের পাঁচ হাজারের অধিক শিল্পী ও শতাধিক সংগঠনের অংশগ্রহণে ২১ দিনব্যাপী একাডেমির নন্দনমঞ্চে এই শিল্পযজ্ঞ পরিচালিত হবে। ঐহিত্যবাহী লোকজ খেলা, লোকনাট্য ও সারাদেশের শিল্পীদের বিভিন্ন নান্দনিক পরিবেশনার মাধ্যমে সাজানো হয়েছে এই উৎসবের অনুষ্ঠানমালা।