লাঠিখেলা, ঘাটু ও বাউল গানে মুখর বাংলাদেশ উৎসব
১১ জানুয়ারি ২০২০ ১৪:৩০
জমজমাট আয়োজনে চলছে ‘বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২০’। জাতীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টির উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রসারের মাধ্যমে শিল্প-সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বহুমূখী সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করা হয়েছে ২১ দিনব্যাপী এই উৎসবের।
৩ থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ২১ দিনের এই উৎসবে প্রতিদিনই থাকছে ৩টি জেলা, ৩টি উপজেলার সাথে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী ও সংগঠনের পরিবেশনা। এছাড়াও একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে একটি লোকনাট্য পরিবেশিত হচ্ছে।
গতকাল (শুক্রবার) উৎসবের অষ্টম দিনে একাডেমি প্রাঙ্গণে বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হয় বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ লাঠিখেলা এবং বাচ্চু মিয়া’র পরিচালনায় নড়াইল সাংস্কৃতিক ক্লাবের ঐতিহ্যবাহী লোকজ লাঠিখেলা।
নন্দনমঞ্চে বিকেল ৪টা থেকে অনুষ্ঠানের শুরুতেই পরিবেশিত হয় জাতীয় সঙ্গীত। এদিন বিভিন্ন পরিবেশনায় ছিলেন চুয়াডাঙ্গা, যশোরা ও নড়াইল জেলার শিল্পীরা। জেলার পরিবেশনার আগে ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ঢাকার পরিবেশনায় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু এবং নজরুল শিল্পী সংস্থার পরিবেশনায় সমবেত সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। গোলাম মোস্তফা খানের পরিচালনায় সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে বেণুকা ললিতকলা একাডেমি।
চুয়াডাঙ্গা জেলার পরিবেশনায় প্রথমেই জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী। এরপর পরিবেশিত হয় সমবেত গান ও সমবেত নৃত্য। একক সঙ্গীতে পরিবেশনায় ছিলেন জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী শফিক তুহিন এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী লতিফ শাহ। যন্ত্রে লোকজ সুর তোলেন শিল্পী আল আশরাফ, সুকুমার, সিরাজুল ইসলাম ও রেজাউল করিম।
যশোর জেলার পরিবেশনার শুরুতে জেলা ব্রান্ডিং। এরপর একেএকে পরিবেশিত হয় সমবেত গান ও সমবেত নৃত্য। একক সঙ্গীতে পরিবেশনায় ছিলেন জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী দেবলীনা সুর দোলা এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী পপি খাতুন। সবশেষে পরিবেশিত হয় যন্ত্রসঙ্গীত।
নড়াইল জেলার পরিবেশনার শুরুতে জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী; এরপরে সমবেত সঙ্গীত, সমবেত নৃত্য পরিবেশিত হয়। একক সঙ্গীত পরিবেশন করে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী অলোক সেন এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী সালাউদ্দিন শীতল। সবশেষে পরিবেশিত হয় যন্ত্রসঙ্গীত। নড়াইল জেলার অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জনাব মলয় কুমার কুণ্ড।
একাডেমি প্রাঙ্গণে রাত ৮টায় দর্শনীর বিনিময়ে মো: রঞ্জু হোসেন আদিল খান এর নির্দেশনা ও পরিচালনায় নৃত্যনাট্য ‘খাইরুন সুন্দরীর পালা’।
আজ (১১ জানুয়ারি) এই আয়োজনের নবম দিন। আজ বিকেল ৪টা থেকে নন্দন মঞ্চে পরিবেশিত হবে রাঙ্গামাটি, সাতক্ষীরা ও নীলফমারী জেলার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং রাত ৮ টায় একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে দর্শনির বিনিময়ে ঐতিহ্যবাহী ‘বাউল গান’।
দেশের ৬৪টি জেলা, ৬৪টি উপজেলা এবং জাতীয় পর্যায়ের পাঁচ হাজারের অধিক শিল্পী ও শতাধিক সংগঠনের অংশগ্রহণে ২১ দিনব্যাপী একাডেমির নন্দনমঞ্চে এই শিল্পযজ্ঞ পরিচালিত হবে। ঐহিত্যবাহী লোকজ খেলা, লোকনাট্য ও সারাদেশের শিল্পীদের বিভিন্ন নান্দনিক পরিবেশনার মাধ্যমে সাজানো হয়েছে এই উৎসবের অনুষ্ঠানমালা।