নাট্যজন মমতাজউদদীন আহমদের জন্মজয়ন্তী
১৬ জানুয়ারি ২০২০ ১০:৩০
১৮ জানুয়ারি (শনিবার) সব্যসাচী নাট্যজন মমতাজউদদীন আহমদের ৮৬তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আনন্দ আনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে দেশের ঐতিহ্যবাহী নাট্যসংগঠন ‘থিয়েটার’। মমতাজউদদীন আহমদের উপর নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, গান, আবৃত্তি, নাট্যাভিনয় সহ বৈচিত্রময় নানান আয়োজনের মধ্যদিয়ে সাজানো হয়েছে অনুষ্ঠানটি।
বেইলি রোডের বাংলাদেশ মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিতব্য এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ.কে. আব্দুল মোমেন এম.পি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মঞ্চসারথি আতাউর রহমান, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকী, নাট্যজন মামুনুর রশীদ, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সেক্রেটারি জেনারেল নাট্যজন কামাল বায়েজীদ।
বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত নাট্যকার, নির্দেশক, অভিনেতা ও ভাষাসৈনিক। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের নবনাট্য আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ। মঞ্চ, টেলিভিশন, বেতার ও চলচ্চিত্র সব মাধ্যমেই তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য। এ দেশের মঞ্চনাটকের পরিপূর্ণতায় তিনি রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ’র রচিত ও নির্দেশিত নাটক ‘সাতঘাটের কানাকড়ি’ এদেশের নাট্যাঙ্গনে মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত। থিয়েটার প্রযোজিত তুমুল জনপ্রিয় এই নাটকটি তৎকালীন সৈরশাসকের ভীত পর্যন্ত কাপিয়ে দিয়েছিলো সেসময়। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে বর্ণচোরা, স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা, জমিদার দর্পণ, বটবৃক্ষের ধরমকরম, ফলাফল নিম্নচাপ, যামিনীর শেষ সংলাপ, দুই বোন, ওহে তঞ্চক, খামাখা খামাখা, স্বাধীনতার সংগ্রাম, নাট্যত্রয়ী, হৃদয়ঘটিত ব্যাপার স্যাপার ইত্যাদি।
তাঁর লেখা নাটক ‘কী চাহ শঙ্খচিল’ ও ‘রাজা অনুস্বারের পালা’ কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য তালিকাভুক্ত হয়েছিল। তাঁর লেখা গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘বাংলাদেশের নাটকের ইতিবৃত্ত’, ‘বাংলাদেশের থিয়েটারের ইতিবৃত্ত’, ‘নীলদর্পণ’ (সম্পাদনা) ও ‘সিরাজ উদ দৌলা’ (সম্পাদনা) ইত্যাদি।
নাট্যচর্চায় অবদানের জন্য মমতাজউদদীন আহমদ একুশে পদক পান ১৯৯৭ সালে। এ ছাড়া বাংলা একাডেমি পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কার, আলাউল সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ২০১৯’র জানুয়ারিতে তাঁর ৮৫তম জন্মদিনে বাংলা একাডেমি মিলনায়তনে তাঁকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
তাঁর নিজহাতে গড়া নাট্যসংগঠন ‘থিয়েটার’ দেশের প্রধান নাট্য দলগুলোর অন্যতম।