‘গাজী কালুর কিচ্ছা’ আর পালা গানে জমজমাট সাংস্কৃতিক উৎসব
১৮ জানুয়ারি ২০২০ ১২:৫২
জমজমাট আয়োজনে চলছে ‘বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২০’। জাতীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টির উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রসারের মাধ্যমে শিল্প-সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বহুমূখী সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করা হয়েছে ২১ দিনব্যাপী এই উৎসবের।
৩ থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ২১ দিনের এই উৎসবে প্রতিদিনই থাকছে ৩টি জেলা, ৩টি উপজেলার সাথে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী ও সংগঠনের পরিবেশনা। এছাড়াও একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে একটি লোকনাট্য পরিবেশিত হচ্ছে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এই আয়োজনের ১৬তম দিন। বিকেল ৪টা থেকে শিল্পকলার নন্দনমঞ্চে পরিবেশিত হবে সিলেট, বরিশাল ও নাটোর জেলার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং রাত ৮ টায় একাডেমি প্রাঙ্গণে দর্শনির বিনিময়ে ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য ‘কিশোরগঞ্জের পালা গান’ অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) উৎসবের ১৫তম দিনে একাডেমি প্রাঙ্গণে বিকেলে অনুষ্ঠানের শুরুতেই পরিবেশিত হয় জাতীয় সঙ্গীত। এদিন বিভিন্ন পরিবেশনায় ছিলেন হবিগঞ্জ, খুলনা, দিনাজপুর ও নেত্রকোনা জেলার শিল্পীরা। জেলার পরিবেশনার আগে ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ঢাকার পরিবেশনায় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনা। এরপর একক সঙ্গীত পরিবেশন করে শিল্পী প্রিয়াংকা রবি দাস, সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ। কাজী হাবলুর পরিচালনায় স্পন্দন ব্যান্ড দল পরিবেশন করে স্কুল খুইলাছেরে মাওলা এবং মন তুই চিনলিনারে।
হবিগঞ্জ জেলার পরিবেশনার শুরুতে জেলা ব্রান্ডিং। এরপর একেএকে পরিবেশিত হয় সমবেত গান ও আলকাপ গম্ভীরা মিউজিকের সাথে সমবেত নৃত্য। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী মঞ্জুর আহমেদ ও উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী শিল্পী প্রিয়ন্তী মোদক। এক সাগর রক্তের মিনিময়ে যন্ত্রে সুর তোলেন শিল্পী বিল্লাল আহমেদ, সুবির কান্ত রায় এবং হরিপদ দাস।
খুলনা জেলার পরিবেশনার শুরুতে জেলা ব্রান্ডিং। এরপর একেএকে পরিবেশিত হয় সমবেত গান ও সমবেত নৃত্য। একক সঙ্গীত পরিবেশন করে জেলার জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী গুরুপদ গুপ্ত। যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশন করে শিল্পী সজল বিশ্বাস, অপূর্ব রায়, রতন বিশ্বাস, বুবুল বিশ্বাস, রুবেল মোড়ল এবং অনুপ ঘোষ।
দিনাজপুর জেলার পরিবেশনার শুরুতে জেলা ব্রান্ডিং। এরপর একেএকে পরিবেশিত হয় সমবেত গান ও সমবেত নৃত্য। একক সঙ্গীত পরিবেশন করে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী এটি এম জাহাঙ্গীর এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী দুলাল বসাক। যদি বন্ধু যাবার চাও গানের কথায় যন্ত্রে সুর তোলেন শিল্পী পলাশ দাস, বিষ্ণু, রানা পন্ডিত ও মহাবি দাস।
সবশেষে নেত্রকোনা জেলার পরিবেশনায় জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, সমবেত সঙ্গীত, সমবেত নৃত্য, একক সঙ্গীত এবং যন্ত্র সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।
একাডেমি প্রাঙ্গণে রাত ৮টায় দর্শনীর বিনিময়ে মঞ্চস্থ হয় মিলন পালাকার এর পরিচালনায় ‘গাজী কালুর কিচ্ছা’।
দেশের ৬৪টি জেলা, ৬৪টি উপজেলা এবং জাতীয় পর্যায়ের পাঁচ হাজারের অধিক শিল্পী ও শতাধিক সংগঠনের অংশগ্রহণে ২১ দিনব্যাপী একাডেমির নন্দনমঞ্চে এই শিল্পযজ্ঞ পরিচালিত হবে। ঐহিত্যবাহী লোকজ খেলা, লোকনাট্য ও সারাদেশের শিল্পীদের বিভিন্ন নান্দনিক পরিবেশনার মাধ্যমে সাজানো হয়েছে এই উৎসবের অনুষ্ঠানমালা।