‘শিল্প ঋণ’ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে প্রযোজক সমিতির বৈঠক
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৭:২৪
চলচ্চিত্র শিল্পের নানান সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার তারা বসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছে।
বৈঠক শেষে প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু সারাবাংলাকে বলেন, ‘চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা করা হয়েছে ৭ থেকে ৮ বছর আগে। কিন্তু এখন পর্যন্ত শিল্পের যেসব সুযোগ-সুবিধা আমাদের পাওয়ার কথা তার কোনোটিই পাইনি। আমরা এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী ছাইদুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাদের কথা মনযোগ দিয়ে শুনেছেন এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গেও কথা হয়েছে জানিয়ে খসরু বলেন, ‘গভর্নর সাহেব আমাদের শুনেছেন এবং তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে অফিসিয়ালি আমরা কী কী চাই তা চিঠি আকারে দিতে বলেছেন। মন্ত্রণালয় থেকে জানালে অবশ্যই তা বিবেচনা করবেন।’
যদিও এর আগে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে প্রযোজক সমিতি বসেছে। এ বিষয়ে খসরু বলেন, ‘তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চাহিদা জানিয়ে চিঠি দেওয়া হবে। তারা বিচার বিবেচনা করে সব ঠিক করবে। সবশেষ এ চিঠি যাবে বাংলাদেশ ব্যাংকে। আমরা তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে সবকিছু মোটামুটি গুছিয়ে এনেছি।’
আপনারা কী কী সুবিধা চান?- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে কেউ সিনেমা হল নির্মাণের সরঞ্জাম ও ক্যামেরা আমদানি করতে চাইলে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হয়। অথচ শিল্প হিসেবে আমরা এটা পাওয়ার কথা ২ থেকে ৩ শতাংশ করে। এছাড়া সিনেমা নির্মাণ করতে চাইলে কোন ঋণ পাই না। সিনেমা নির্মাণের জন্য আমাদের স্বল্প সুদে ঋণ দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কত টাকা ঋণ আমরা পাব তার কোনো লিমিট চাই না। ধরেন কেউ একজন আন্তর্জাতিক মানের সিনেমা হল বানাবেন। তার দরকার ১০ কোটি টাকা, তাকে আপনি দিলেন ৩ কোটি। সে তো ওই টাকা দিয়ে কিছুই করতে পারবে না। আয়ও হবে না ঠিক মতো। ফলে ঋণের কিস্তি দিতে পারবে না।’
‘ঋণের অংক যেন সিনেমার প্রযোজক, পরিচালক কিংবা এ খাতের বিনিয়োগকারীর চাহিদা অনুযায়ী হয় এবং এর সুদের অংক যেন কখনই ২ শতাংশের বেশি না হয়। সেইসঙ্গে এ টাকা পরিশোধের মেয়াদ যেন কমপক্ষে ৮ থেকে ৯ বছর হয়। এমনটাই চাওয়া প্রযোজকদের।’- জানালেন খসরু।
খসরু আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ‘খুব শিগগিরই আমরা শিল্পের সব সুবিধা পাব। তখন অবশ্যই চলচ্চিত্র ঘুরে দাঁড়াবে।’
চলচ্চিত্রে মন্দার কারণে ২০১০ সালে একে ‘শিল্প’ হিসেবে ঘোষণার দাবি করা হয়। সে দাবি অনুযায়ী ২০১২ সালের ৩ এপ্রিল মেনে চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার ঘোষণা অনুযায়ী ২৪ এপ্রিল শিল্প মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। যাতে বলা হয়েছিল অন্যান্য শিল্পের মতোই চলচ্চিত্রও সুযোগ-সুবিধা পাবে।
খোরশেদ আলম খসরু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি বাংলাদেশ ব্যাংক শিল্প ঋণ