‘শ্রাবণ মেঘের দিন’র দুই দশক
৩১ মার্চ ২০২০ ১৭:৪০
‘আমার নাম কুসুম। বাপজান আপনারে আনসে আমার সাথে বিবাহ দেয়নের জন্য। আমারে কি আপনের পছন্দ হইসে?’—এটি হুমায়ুন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ছবির সংলাপ। ২০০০ সালের ৩১ মার্চ সারাদেশে মুক্তি পেয়েছিলো। সে হিসেবে মঙ্গলবার ছবিটির বিশ বছর পূর্ণ হলো।
‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ অনবদ্য এক প্রেমের উপাখ্যান। এতে উঠে এসেছে গ্রামীণ মানুষের সরলতা, লোকজ নানান সংস্কৃতি। এর গল্পে একজন অহংকারী জমিদার যে কিনা মুক্তিযুদ্ধে রাজাকার ছিলো তার ও নাতনির কথা যেমন বলা হয়েছে; তেমন একজন গায়ক মতি ও গ্রামের সাধারণ মেয়ে কুসুমের ভালোবাসা পাওয়া না পাওয়ার কষ্ট উঠে এসেছে।
জমিদারের চরিত্রে কিংবদন্তি অভিনেতা গোলাম মোস্তফা অভিনয় করেছিলেন। তার নাতনীর চরিত্রে মুক্তি, গায়ক মতির চরিত্রে জাহিদ হাসান এবং কুসুম চরিত্রে মেহের আফরোজ শাওন অভিনয় করেছিলেন। এছাড়া ছিলেন মাহফুজ আহমেদ, ডা. এজাজুল ইসলাম, শামীমা নাজনিন, নাজমুল হুদা বাচ্চু ও আনোয়ারা। ছবিটিতে অভিনয় করতে গিয়ে ডা. এজাজ তার চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছিলেন।
এ ছবিতে মোট ৯টি গান ব্যবহৃত হয়েছে। এর অধিকাংশ গান মানুষের কাছে জনপ্রিয়। হুমায়ুন আহমেদ গীতিকার হিসেবে এ ছবির মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘একটা ছিলো সোনার কন্যা মেঘ বরন কেশ’ কিংবা আকলিমা বেগমের কণ্ঠে ‘কাইল আমরার কুসুম রানীর বিবাহ হইবো’, মেহের আফরোজ শাওন ও সাবিনা ইয়াসমিনের কণ্ঠে ‘আমার ভাঙ্গা ঘরে’সহ মোট চারটি গান হুমায়ুন আহমেদের লেখা।
প্রখ্যাত বাউল সাধক উকিল মুন্সীর লেখা ‘পুবালী বাতাসে’, ‘কেহ গরিব অর্থের জন্য’, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’ ও ‘শুয়া চান পাখি’ গানগুলো এ ছবিতে ব্যবহৃত হয়। বারী সিদ্দিকীর কণ্ঠে গানগুলো নবজীবন পায়। পুরো ছবির গানগুলোর সুর ও সংগীতায়োজনে ছিলেন মকসুদ জামিল মিন্টু।
‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ছবির গানগুলোর পাশাপাশি এর সংলাপগুলোও সমান জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। তার প্রমাণ পরবর্তীতে ওই সংলাপগুলো নিয়ে একটি কনডেন্স মিল্কের টিভি বিজ্ঞাপন নির্মাণ।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সাতটি শাখায় পুরস্কার জিতে ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’—শ্রেষ্ঠ অভিনেতা, পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতা, সঙ্গীত পরিচালক, গীতিকার, সঙ্গীতশিল্পী, চিত্রগ্রাহক ও শব্দগ্রাহক ক্যাটাগরিগুলোতে।