থ্রিলার সিনেমা নিয়ে বললেন ফারুকী
৫ এপ্রিল ২০২০ ২০:৪৮
করোনা ক্রান্তিকালে সবাই আজ জীবন বাঁচানোর তাগিদে গৃহে অবস্থান করছেন। প্রতিনিয়তই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে মৃত্যের সংখ্যাও। এসময়ে সবার আলোচ্য বিষয়ে অন্য কিছু নেই। বাংলাদেশের নন্দিত নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী চেষ্টা করলেন সবার সাথে সিনেমা নিয়ে আলোচনা করতে। আর তা করেছেন তার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মধ্য দিয়ে।
তার আলোচ্য বিষয় ছিলো, বর্তমান সময়ে থ্রিলার ছবি। তিনি থ্রিল বা সাসপেন্স ছাড়া অন্য ছবিগুলোকে বাতিল করাকে অ্যালার্মিং বললেন। তিনি এও বলছেন ‘থ্রিল বা সাসপেন্সই একমাত্র ইমোশন না’।
তার স্ট্যাটাসটি হুবহু নিচে দেওয়া হলো,
সিনেমা নিয়া অনেক দিন কথা বলি না! এই অলস সময়ে একটু সিনেমা নিয়া আলাপ দিতে চাই।
আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন নানা রকমের ছবি দেখতাম। অ্যাকশান, থ্রিলার, ম্যাড়ম্যাড়া, রোমান্স, ড্রামা নানারকম। এখনো নিশ্চয়ই নানা রকম ছবিই হয়। কিন্তু ইদানিং ছবিগুলো বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে একটা মাত্র সূচকের ব্যাপক প্রয়োগ দেখতে পাচ্ছি। এটা আমার কাছে একটু অ্যালার্মিং মনে হয়। সেটা হলো থ্রিল এন্ড সাসপেন্স। নিশ্চয়ই থ্রিল এবং সাসপেন্স দারুণ ব্যাপার। হিচকক সাহেব সাসপেন্সকে অন্য মার্গে নিয়ে গেছেন। এবং থ্রিল বা সাসপেন্স থাকলে কোনো ছবি ‘ইনফেরিয়র আর্ট’ হয়ে যায় এমনও না।
কিন্তু মুশকিল হয়, যখন এটা দিয়েই সব ছবিকে মাপতে বসে কেউ। থ্রিল বা সাসপেন্সই একমাত্র ইমোশন না। মানুষের আরো নানারকম ইমোশন আছে। একেক ছবি একেক ইমোশনকে ধরার চেষ্টা করতে পারে। কোনো কোনো দারুণ ছবি আছে যেটা খুব নাইভ পেসে আগায় কিন্তু দারুণ দারুণ সব মুহূর্ত তৈরি করে দর্শককে ডিভিডেন্ট দেয়। যদি থ্রিল হওয়ার বা সাসপেন্স পাওয়ার প্রত্যাশা বা বাসনা নিয়ে সেই ছবিগুলো কেউ দেখতে বসে তখনতো সেগুলোকে বোরিং বলবে।
সেইজন্য বলতে চাই, অ্যাড্রেনালিন রাশ ছাড়াও আপনার মনের আরো বিচিত্র সব কুঠুরী আছে। সেগুলোকে একটু সুযোগ দিন, মহাজন। সেগুলোর খাবার দিন। তাহলে দেখবেন মন মইজে যাবে।
আমি বুঝতে পারি, সোশ্যাল মিডিয়ার স্ক্রলিং হ্যাবিট আমাদের অস্থির করে তুলেছে। ফলে থ্রিল ছাড়া আর কোনো কিছুতে আমরা মনোযোগ রাখতে কষ্ট হয়। কিন্তু মনে রাখবেন, কিছুটা স্থিরতা গোপন প্রণয়ের মতো মধুর ফল বয়ে নিয়ে আসতে পারে। এই করোনাকালে এইটাতো আমরা বুঝতেছি, আমাদের তাড়াহুড়া করবার কিছু নাই। আমরা কেবল দ্রুত কবরেই যেতে পারি। সো, ধীরে বৎস, ধীরে।