শিক্ষার্থীদের কিছু দিতে পারবো, এটাই অনেক বড় প্রাপ্তিঃ হিরু
৪ মে ২০২০ ২১:৫৭
ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের (আইজিসিসি) আয়োজনে শুরু হচ্ছে অনলাইনভিত্তিক কর্মশালা ‘গুরু প্রথা’। এ কর্মশালায় রয়েছে রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল গীতি, রবীন্দ্র নৃত্য, ভরতনাট্যম, মণিপুরি নৃত্য এবং ওড়িশি নৃত্য। অনলাইনভিত্তিক এই কর্মশালাটি শুরু হবে আগামী ১০ মে। এতে রেজিস্ট্রেশনের শেষ সময় মঙ্গলবার (৫ মে)। আর কর্মশালার বিস্তারিত তথ্য জানা ও রেজিস্ট্রেশন করা যাবে ভারতীয় হাইকমিশনের ওয়েবসাইট (https://www.hcidhaka.gov.in/igcc_reg) থেকে।
৪৫ মিনিট করে এ কর্মশালাটিতে ‘বিগেনার’, ‘ইন্টারমিডিয়েট’ এবং ‘অ্যাডভান্সড’ তিনটি বিভাগে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন প্রশিক্ষণার্থীরা। এর মধ্যে নতুনদের জন্য ‘বিগেনার’, যারা আগে শিখেছেন বা ২ থেকে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে তারা ‘ইন্টারমিডিয়েট’ এবং শিক্ষক এবং প্রশিক্ষকদের জন্য ‘অ্যাডভান্সড’ বিভাগ।
কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দেবেন স্বনামধন্য শিল্পী, যারা প্রত্যেকেই ভারতীয় (আইসিসিআর) শিক্ষাবৃত্তি লাভ করে ভারত থেকে নিজ নিজ বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা অর্জন করেছেন। এরা হলেন- রবীন্দ্র সঙ্গীতে সাদী মোহাম্মদ, মণিপুরি ক্লাসিক নৃত্যে তামান্না রহমান, রবীন্দ্র নৃত্যে শর্মিলা ব্যানার্জি, নজরুল গীতিতে সুজিত মুস্তফা, ওড়িশি নৃত্যে বেনজির সালাম এবং ভরতনাট্যমে আনিসুল ইসলাম হিরু।
এই আয়োজন নিয়ে সারাবাংলার স্পেশাল করেস্পন্ডেন্ট আশীষ সেনগুপ্ত’র সঙ্গে একান্ত অনুভুতি শেয়ার করেছেন দেশের স্বনামধন্য নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যগুরু আনিসুল ইসলাম হিরু…
• কেন এই আয়োজন?
কোভিড ১৯’র জন্য আমরা সবাই এখন গৃহবন্দি। আমাদের অফিস আদালত সহ যাবতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবই বন্ধ। তাই সবার মধ্যে একটাই ভাবনা- কাজ গুলো কিভাবে গতিশীল রাখা যায়। যারা অফিসে কাজ করতেন, তারা এখন ওয়ার্ক ফ্রম হোম মানে বাসা থেকে অফিসের কাজ করছেন। তাই আমরা যারা শিল্পচর্চা করি আমাদের কি হবে? বিশেষ করে যারা নবীন এবং প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পী তাদের কি হবে? তাদের কাজ করা বা শেখার কোনো সুযোগ নেই। তাই, এ ভাবনা থেকেই ভারতীয় দূতাবাসের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের (আইজিসিসি) পক্ষ থেকে এই আয়োজন। যেহেতু আমরা লকডাউনের মধ্য দিয়ে দিনগুলো পার করছি, তাই আমরা যারা স্ব স্ব ক্ষেত্রে কাজ করছি, তাদেরকে দিয়েই এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যেটা অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ঘরে বসেই শিক্ষা গ্রহণ।
• কাদের জন্য এই আয়োজন?
আমরা যে সব বিষয় গুলো নিয়ে ভিডিও বানাবো, সেগুলো যারা রেজিস্ট্রেশন করেছে, তাদেরকে দেয়া হবে। ভিডিও গুলোতে একেবারে প্রাথমিক পর্যায় থেকে উচ্চ পর্যায়ের সকল শিক্ষার্থী এবং প্রশিক্ষকদের জন্যও পাঠদান থাকবে। এখানে সবাই লাভবান হবে, সেটা দেশেই হোক বা দেশের বাইরে হোক। যে যে বিষয়টার উপর আগ্রহী, সে সেটা জানতে বা শিখতে পারবে। এমন কি যারা আগেও শিখেছে এবং শিখাচ্ছে, তারাও নতুন কিছু জানতে পারবে। আমি এই আয়োজনটাকে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি তাদের জন্য, যারা ঢাকায় এসে শিখতে চাই, কিন্তু বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারনে পেরে উঠেনা। তারা এখন ঘরে বসেই শিখতে পারবে। তাদের জন্য এটা একটা বিশেষ সুযোগ।
• অনুভুতি _
নতুন শিক্ষার্থীদের সাথে সংযোগ হবে, তাদেরকে আমি কিছু দিতে পারবো, একজন শিক্ষক হিসেবে এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। এই লকডাউনের সময় ঘরে বসে শিক্ষার্থীদের পাঠদান, আমি মনে করি এটা সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের জন্যও সৌভাগ্যের। তাছাড়া এটার জন্য ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে আমরা একটা সম্মানীও পাচ্ছি। পাশাপাশি এই বন্দীদশায় আমার ঘুঙুরটা আবার বাজবে, এটা আমার জন্য অনেক আনন্দের। কারন শিক্ষাদানই একজন শিক্ষকের প্রধান ব্রত।
• প্রত্যাশা _
আমি মনে করি এই সময়টাতে শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি মনযোগী হবে। যেহেতু বাইরের জগতটা পুরোপুরি বন্ধ থাকবে, তাই তারা তাদের পছন্দের বিষয় গুলোর প্রতি অনেক বেশি সংযুক্ত থাকার চেস্টা করবে। শিক্ষাটাকে পুরোপুরি রপ্ত করার চেস্টা করবে। আমরা যা দেখাবো বা শেখাবো, সেটা যদি বারবার প্র্যাকটিস করে, তাহলে সে ভালো মতোই আয়ত্ব করতে পারবে। পাশাপাশি যারা শিল্পী নন, কিন্তু শিল্পচর্চাকে ভালবাসেন, তারাও বিস্তারিত জানার জন্য, জ্ঞানার্জনের জন্য এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবেন। নিজেকে ঋদ্ধ করতে পারবেন। সব বয়সীরাই অংশ নিতে পারবেন।
• সবশেষে _
সবশেষে আমি ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার (আইজিসিসি)’কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলতে চাই যে, পুরোপুরি স্থবির হয়ে থাকা এই মুহুর্তে তারা যে উদ্যোগটা নিয়েছে সেটা সকলের জন্যই ফলপ্রসু। অন্তত শিল্পচর্চাটা এগিয়ে যাবে। আমরা আবার প্রাণবন্ত থাকবো।
অনলাইন আইজিসিসি আনিসুল ইসলাম হিরু ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার ওড়িশি নৃত্য ভরতনাট্যম ভারতীয় হাইকমিশন মণিপুরি নৃত্য