চাঙ্গা হয়েছে ‘#ফ্রিব্রিটনি’ আন্দোলন
২২ জুলাই ২০২০ ২০:৫২
ক্রমেই চাঙ্গা হচ্ছে ‘#ফ্রিব্রিটনি’ আন্দোলন। আমেরিকান পপ কুইন ব্রিটনি স্পিয়ার্সের ভক্তদের এ আন্দোলন সামাজিক মাধ্যমে বড় জায়গা দখল করেছে, পাশাপাশি ছড়িয়ে পড়েছে মাঠেও। অর্থ-সম্পদ ও ব্যক্তিগত জীবনে ব্রিটনি স্পিয়ার্সের অধিকার ফিরিয়ে আনতে ‘#ফ্রিব্রিটনি’ আন্দোলন শুরু করেছিলেন ভক্তরা। এবার তা আরও চাঙ্গা হয়েছে।
মার্কিন এই জনপ্রিয় পপ শিল্পীর নিজের জীবনের ওপর নিজের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। নিজের সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না তিনি। আর এর সবই হয়েছে আইন মেনে আদালতের রায়ে। আদালতের নির্দেশে বাবা জেমি স্পিয়ার্স ব্রিটনির অর্থ-সম্পদের দেখভাল ও ব্যক্তিগত সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
ব্রিটনির এই দশা ২০০৮ সাল থেকে চলে আসছে। ভক্তদের মতে, এমন কড়াকড়িতে প্রিয় এই শিল্পীর শিল্প সত্তা মারা যাচ্ছে। মুক্ত ব্রিটনি স্পিয়ার্সকে দেখতেই তাদের এই আন্দোলন। সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে আদালতের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে ব্রিটনির মুক্তির দাবি তুলছেন তারা।
২০০৮ সাল থেকে সংরক্ষণশীল ব্যবস্থায় সকল ব্যক্তি স্বাধীনতা হারিয়েছেন ব্রিটনি। এ ব্যবস্থা হলো আদালতের মাধ্যমে করা এক সমঝোতা যেখানে একজন ব্যক্তি তার অর্থ-সম্পদ থেকে শুরু করে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার হারান। ডিমেনশিয়া বা অন্যান্য মানসিক অসুস্থতায় যারা ভোগেন তাদের ক্ষেত্রে মার্কিন আদালত এমন রায় দিয়ে থাকেন। ২০০৮ সালে ব্রিটনি স্পিয়ার্সের স্বাস্থ্যগত সমস্যা বিবেচনা করে এমন একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন আদালত। এরপর বাবা জেমি স্পিয়ার্স ও একজন উকিল ব্রিটনির অর্থ-সম্পদ থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিয়ে আসছেন। তবে এরই মধ্যে কয়েকবার তার বাবা জোর করেই মানসিক অসুস্থ হিসেবে তাকে প্রমাণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ব্রিটনি স্পিয়ার্স।
গত সেপ্টেম্বরে ব্রিটনির বাবা জেমি স্পিয়ার্স তার শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। পরে এ বছরের মার্চে ব্রিটনির উকিল এন্ড্রো ওয়ালেটও ব্যক্তিগত আইনজীবীর পদ ত্যাগ করেন। সেসময় আদালতের এক বিচারক জডি মন্টগোমেরিকে ব্রিটনি স্পিয়ার্সের ‘কেয়ার ম্যানেজার’ হিসেবে নিযুক্ত করেন।
ব্রিটনির বয়স এখন ৩৯। এক যুগ আগে আদালতের রায়ে যে সংরক্ষণশীল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিলো সে ব্যাপারে ফের এক শুনানির তারিখ ছিলো ২২ জুলাই। এ দিনকে কেন্দ্র করেই সামাজিক মাধ্যমে #ফ্রিব্রিটনি আন্দোলন জোরদার হয়েছে। এ দিন একদল ভক্তকে হ্যাশট্যাগ ফ্রিব্রিটনি প্ল্যাকার্ড হাতে দেখা গেছে আদালতের সামনে। তাদের দাবি, যথেষ্ট হয়েছে- এবার ব্রিটনিকে মুক্তি দিন।
মাত্র ৮ বছর বয়স থেকেই সঙ্গীত জগতে জড়িত হোন ব্রিটনি স্পিয়ার্স। মিসিসিপির ম্যাককম্বে জন্ম নেওয়া ও লুইজিয়ানার কেন্টউডে বেড়ে ওঠা ব্রিটনি প্রথমে মঞ্চ ও টেলিভিশনে অভিনয় করতেন। ১৯৯৭ সালে তিনি জিভে রেকর্ডসের সঙ্গে গান গাওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। তার প্রথম দুটি অ্যালবাম -বেবি ওয়ান মোর টাইম (১৯৯৯) ও ওপ্স! আই ডিড ইট অ্যাগেইন (২০০০) আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত হয়। একজন টিনএজ একক গায়কের সবচেয়ে বেশি বিক্রিত অ্যালবামের রেকর্ড গড়ে এ দুটি অ্যালবাম। ৯০ এর দশকের শেষের দিকে টিন পপ গানকে পুনরুজ্জীবিত করতে ভূমিকা রাখেন ব্রিটনি স্পিয়ার্স। একটি গ্র্যামি পুরস্কার, আজীবন সম্মাননাসহ ছয়টি এমটিভি ভিডিও মিউজিক পুরস্কার, বিলবোর্ড মিলেনিয়াম পুরস্কারসহ দশটি বিলবোর্ড সঙ্গীত পুরস্কার এবং হলিউড ওয়াক অফ ফেম তারকা সম্মাননা রয়েছে এই পপ তারকার ঝুলিতে।