নারীদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য, অনন্তকে বয়কটের আহ্বান
১১ অক্টোবর ২০২০ ১৯:০০
চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও নায়ক অনন্ত জলিল ধর্ষণবিরোধী এক ভিডিও বার্তায় এর ধর্ষণের জন্য নারীর পোশাককে দায়ী করেছেন। তার এ বক্তব্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে পুরো শোবিজ। অনেকেই তাকে বয়কটের ডাক দিয়েছেন।
শনিবার (১০ অক্টোবর) অনন্ত তার স্ত্রী চিত্রনায়িকা বর্ষার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ থেকে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানান। কিন্তু ৬ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের সে ভিডিওতে অনন্ত দাবি করেন, শালীন পোশাক পরা নারী কখনোই ধর্ষণের শিকার হন না। একুজন নারীর শরীর-ফিগার দেখে খারাপ স্বভাবের লোকজন ধর্ষণের উস্কানি পায়।
‘তোমাদের ভাই হিসেবে কিছু কথা বলতে চাই। নাটক, সিনেমা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অনুসরণ করে অন্য দেশের মেয়েদের মতো মডার্ন হতে গিয়ে, বিদেশি সংস্কৃতির পোশাক পরছো। এসব পোশাকের জন্য রাস্তার বখাটেরা আল্লাহর দেওয়া তোমার চেহারাটার দিকে না তাকিয়ে তারা তোমার শরীর ও ফিগারের দিকে নজর দেয়। তোমাদের পোশাক দেখেই তারা তোমাদের ফিগার নিয়ে নানা কথা বলে। আর তাদের মাথায় ধর্ষণের চিন্তা আসে’—বলেন অনন্ত।
তার এ বক্তব্যে ক্ষুব্ধ অভিনেত্রী, পরিচালক মেহের আফরোজ শাওন। তিনি ফেসবুকে তাকে বয়কটের ডাক দিয়ে লেখেন, আমি মেহের আফরোজ শাওন, বাংলাদেশের একজন চলচ্চিত্র ও মিডিয়াকর্মী এবং স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সচেতন নাগরিক হিসাবে বাংলাদেশের নারীদের প্রতি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং অসংলগ্ন বক্তব্য সম্বলিত ভিডিও বার্তা দেয়ার জন্য জনাব অনন্ত জলিলকে বয়কট করলাম।
লাক্স তারকা প্রসূন আজাদও তাকে বয়কটের কথা জানান।
অভিনেতা রওনক হাসান সরাসরি বয়কটের কথা না বললেও তিনি লেখেন, জীবনে কখনোই এদের কিছু দেখার চেষ্টা করিনাই। ঠাট্টা তামাশার ছলেও প্রমোট করিনাই। এদের সাথে কাজ করাতো দূরের কথা। চিন্তা চেতনা মননে জীবন যাপনে ও কথায় এক হওয়াটা জরুরী। নিজে যতদিন ঠিক হবোনা ততোদিন অন্যকে নিয়ে সমালোচনা করার অধিকার ও আমি রাখিনা। আইকন বানাইছেন এখন তাদের অনুসরণ করুন। যান।
‘সমস্যা পোশাকে নয়, সমস্যা মগজে’—লেখেন মোটিভেশনাল বক্তা সোলায়মান সুখন।
মজার ছলে অভিনেত্রী নওশাবা লেখেন, অনন্ত জলীল তো ঘরে ঘরে। আগে টের পান নাই?
‘ঘুড়ি তুমি কার আকাশে উড়ো’খ্যাত গীতিকার সোমেশ্বর অলি লেখেন, ধর্ষণ প্রসঙ্গে অনন্ত জলিল যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা বাংলাদেশের অধিকাংশ পুরুষের বক্তব্য, কোনো কোনো ক্ষেত্রে নারীরও। জলিল ইতিহাসের কোনো বিচ্ছিন্ন চরিত্র নয়। ভাবছেন উনি আচমকা এমন কথা বলেছেন?
নির্মাতা সেতু আরিফ লেখেন, সিনেমা তো দুরের কথা ,অনন্ত জলিল প্রথাগত সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিরও লোক না৷ ওনার পয়সা আছে৷ নিজেরে একটু আলাদা করে চেনাতে চেয়েছেন, তাই প্রথম থেকেই নানা ভন্ডামি করেছেন৷ এই লোকের কাছ থেকে প্রপার কিছু আশা করেন কেন?
অনন্তকে আরও আগে বয়কট করা উচিত ছিল বলে জানিয়ে অভিনেতা আরিক আনাম খান লেখেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত…। যাই হোক তার একটা শিক্ষা হওয়া উচিত।