গান স্যালুট দিয়ে আজই দাহ করা হবে সৌমিত্রের মরদেহ
১৫ নভেম্বর ২০২০ ১৫:১২
চলে গেলেন বাঙালির আদি অকৃত্রিম ‘ফেলুদা’ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। জীবনের ৮৫টি বসন্ত পেরিয়ে বাধ্য হলেন হার মানতে। ৪০ দিনেরও বেশি সময় ধরে বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন কিংবদন্তি অভিনেতা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় ৬ অক্টোবর তাকে বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। প্লাজমা থেরাপির পর তার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। সেইসঙ্গে চিকিৎসাতেও সাড়া দিতে থাকেন তিনি। কিন্তু আচমকাই আবার তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে।
শনিবার (১৪ নভেম্বর) ডা. অরিন্দম কর জানালেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পরিবারকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়েছে। রাত থেকে তার অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। রবিবার সকালে তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হতে থাকে। কোনও ওষুধেই আর সাড়া দিচ্ছিলেন না তিনি। কমছিল রক্তচাপ এবং রক্তের অক্সিজেনের মাত্রা। ভারতীয় সময় বেলা ১২ টা ১৫ মিনিট (বাংলাদেশ ১২টা ৪৫ মিনিট) নাগাদ মৃত্যু হয় তার।
সোমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়েই দুপুর ১২ টা ৫২ মিনিটে বেলভিউ হাসপাতালে পৌঁছান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সারা বিশ্ব চলচ্চিত্র জগতের মহান প্রতিভাবান বরণীয় স্মরণীয় মানুষকে হারাল। যার সিনেমা, নাটক, কবিতা এবং গণ অন্দোলনেও, মানবিক আন্দোলনেই ছুটে গিয়েছিলেন। শেষ কথা হয়েছিল যখন তিনি কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন। মেদিনীপুরে ছিলাম। কোভিড কিন্তু নেগেটিভ হয়ে গিয়েছিল। পারিপার্শ্বিক আরও অনেক কিছু ছিল। প্রত্যেকে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। আমরা তাঁকে ধরে রাখতে পারিনি। মৃত্যু নির্মম হলেও বাস্তব। আজকের দিনে আমরা হারিয়েছি আমাদের এক চির ইতিহাসকে। যে জায়গায় সৌমিত্রদা পৌঁছেছিলেন সেখানে যেতে অনেক সংগ্রাম, অধ্যাবসায় লাগে।’
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর সৌমিত্র কন্যা পৌলমী জানান, ‘বেলভিউ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে দেহ। সাড়ে তিনটে নাগাদ রবীন্দ্রসদনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে দেহ শায়িত থাকবে ঘণ্টাদুয়েক। জানানো যাবে শেষ শ্রদ্ধা। এরপর পদযাত্রা করে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে নিয়ে যাওয়া হবে দেহ। সেখানেই হবে শেষকৃত্য।’ বেলভিউ হাসপাতালের চিকিৎসক অরিন্দম করকে ধন্যবাদ জানান তিনি। বলেন, ‘তার মতো চিকিৎসক আরও প্রয়োজন। হয়তো উনি হেরে গেলেন কিন্তু চিরকাল আমাদের মধ্যে থেকে যাবেন। সকলকে বলছি দুঃখ পাবেন না। কষ্ট পাবেন না।’
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী দুপুর ২টা নাগাদ হাসপাতাল থেকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শববাহী গাড়ি বাড়ির পথে রওনা হয়েছে। এরপর সেখান থেকে টেকনিশিয়ান স্টুডিও, রবীন্দ্রসদন হয়ে দেহ পদযাত্রা করে নিয়ে যাওয়া হবে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। সেখানে গান স্যালুটের পরই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য হবে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।