চোখের জল আর গান স্যালুটে বিদায় জানানো হলো কিংবদন্তীকে
১৬ নভেম্বর ২০২০ ১৩:৪৩
গান স্যালুট আর চোখের জলে বিদায় জানানো হলো বাংলার শেষ ম্যাটিনি আইডলকে। কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে পূর্ণ মর্যাদায় সম্পন্ন হল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য। কিংবদন্তী এই অভিনেতাকে শেষ বিদায় জানালেন তার ভালবাসার মানুষ আর অসংখ্য অনুরাগী।
শনিবার (১৪ নভেম্বর) থেকেই সম্পূর্ণ লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল এই অভিনেতাকে। রবিবার (১৫ নভেম্বর) ভারতীয় সময় বেলা ১২টা ১৫ মিনিট (বাংলাদেশ ১২টা ৪৫ মিনিট) নাগাদ বেলভিউ হাসপাতালের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
বাবা ও নিজের সহযোদ্ধাকে হারিয়ে শোকাতুর হয়েও সৌমিত্রকন্যা পৌলমী বসু সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কষ্ট পাবেন না। বাবাকে আদর্শ মেনেই আমরা জীবনকে সেলিব্রেট করব।’ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সারা বিশ্ব চলচ্চিত্র জগতের মহান প্রতিভাবান বরণীয় স্মরণীয় মানুষকে হারাল।’ শোকজ্ঞাপন করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
বেলা আড়াইটে নাগাদ বেলভিউ থেকে শববাহী যানে করে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার গল্ফগ্রিনের বাড়িতে। সেখানে কিছুক্ষণ রাখার পর বেলা তিনটে নাগাদ টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে নিয়ে যাওয়া হয় প্রবাদপ্রতীম শিল্পীর দেহ। শ্রদ্ধা জানান স্টুডিও পাড়ার অভিনেতা-অভিনেত্রী, টেকনিশিয়ানরা। দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ রবীন্দ্রসদনে নিয়ে যাওয়া হয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের দেহ। সেখানে তাকে শ্রদ্ধা জানান বিশিষ্ট জনেরা।
এরপরই কেওড়াতলা মহাশ্মশানের উদ্দেশে শুরু হয় পদযাত্রা। অভিনেতা, অভিনেত্রী, রাজনীতিবিদ, প্রশাসনিক কর্তারা ছাড়াও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অন্তিম যাত্রায় যোগ দিয়েছিলেন তার অসংখ্য অনুরাগী। পদযাত্রার প্রতিটি পদে রবীন্দ্রসংগীত ও কবিতায় তাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। কখনও বাজানো হয় ‘আগুনের পরশমণি’ গান, কখনও তার লেখা কবিতা পাঠ করলেন কৌশিক সেনের মতো অভিনেতা। এভাবেই কেওড়াতলা মহাশ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নিথর দেহ। সেখানে শ্রদ্ধা জানান প্রত্যেকে। তারপর দেওয়া হয় গান স্যালুট। পূর্ণ মর্যাদায় সম্পন্ন হয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য।