অচেনা গল্পের খোঁজে ভিকি জাহেদ
১৯ নভেম্বর ২০২০ ১৮:৫৩
‘মোমেন্টস’ থেকে শুরু করে সবশেষ ‘ইরিনা’য় নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। চেষ্টা করেছেন দর্শককে ভিন্ন কিছু উপহার দেওয়ার। এ প্রজন্মের জনপ্রিয় নির্মাতা ভিকি জাহেদের কাছে দর্শকদের একটাই জিজ্ঞাসা, অনেক তো নাটক, স্বল্পদৈর্ঘ্য হলো, সিনেমাটা কবে বানাচ্ছেন?
কী ভাবছেন ভিকি জাহেদ? কী তার পরবর্তী পরিকল্পনা? ফোনালাপে জানালেন তার অল্প বিস্তর।
প্রতিটা নির্মাতারই স্বপ্ন থাকে একটা সময় গিয়ে সিনেমা বানানোর। সে স্বপ্নের পথে হাঁটার আগে নিজের হাত পাকিয়ে নেওয়ার জন্য নাটক, স্বল্পদৈর্ঘ্যকে বেছে নিয়েছেন ভিকি।
‘সিনেমা তো অবশ্যই বানাবো। কেনো বানাবো না। কিন্তু আমার মনে হয়, আমি এখনও সিনেমা বানানোর উপযুক্ত হইনি। আমার এখনও অনেক কিছু শেখার বাকি। তাই সময় নিচ্ছি। আর আরেকটা কথা, আমি ব্যর্থ হতে চাই না।’
স্বল্পদৈর্ঘ্য কিংবা নাটক, ভিকির কাজ মানেই মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ। সঙ্গে গল্পে অনপ্রেডিক্টেবল টুইস্ট। সে চেনা পথ ছেড়ে অচেনা পথে পিচ্ছিল কাটতে চান না। তাই ব্যর্থ হওয়া ভয়? এমনটার সঙ্গে একমত না এ তরুণ তুর্কী। ব্যাখাও দিলেন, ‘অমিতাভ রেজা ভাই যখন আয়নাবাজি বানালো, তখন কেন দর্শক এত হুমড়ি খেয়ে দেখলো? কারণ একটাই উনি ভিন্ন কিছু দেখাতে পেরেছেন। আমি আসলে সবসময় চেষ্টা করি দর্শকদের ভিন্ন কিছু দেখাতে। সেরকম ভিন্ন গল্প এখনো খুঁজে পাইনি যা দিয়ে আমি সিনেমা বানাতে পারি। পেলেই বানিয়ে ফেলবো।’
তাহলে সিনেমার জন্য কেমন গল্প চাইছে ভিকি? ‘অচেনা একটা গল্প। যে গল্প পর্দায় দর্শক আগে দেখেননি।’
‘আজ আমার পালা’ এবং ‘ইরিনা’র গল্পের জন্য নাজিম উদ দৌলা ও ম্যাথু স্যামসনের গল্প নিয়েছিলেন। এছাড়া করা সকল কাজের গল্পই নিজের। এমনকি সকল চিত্রনাট্য ভিকি জাহেদের। অন্যের গল্পে কিংবা চিত্রনাট্যে না নেওয়াতে কি কিছু কাজ একইরকম হয়ে যাচ্ছে না, নিজের প্রতি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে? ডিফেন্সে খেললেন ভিকি, ‘আসলে গল্পের ক্ষেত্রে আমার নিজেরটা নিয়ে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এমননা যে অন্যের গল্প নিয়ে কাজ করবো না। গল্প পছন্দ হলে অবশ্যই করি। সম্প্রতি নাজিম উদ দৌলার গল্প নিয়ে নতুন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকির জন্য একটা স্বল্পদৈর্ঘ্য নির্মাণ করলাম।’
‘আর আমি খুব কমই নাটক ও স্বল্পদৈর্ঘ্য নির্মাণ করি। দেখা যায় সাধারণত মাসে একটা কাজ করি। যার কারণে চিত্রনাট্যটা নিজে করতে পারি, হাতে অনেক সময় থাকায়। আর কাজটা আমার পছন্দেরও।’
পাঁচ বন্ধু মিলে শুরু করেছিলেন ‘মোশন ভাস্কর’। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে করেছেন ‘ভি ক্রিয়েশন’। বন্ধুত্বের পথ কেন আলাদা হয়ে গেল?
‘আমাদের বন্ধুত্ব আলাদা হয়ে যায়নি। এখনও আগেরই মতো আছি আমরা। মোশন ভাস্করের অধিকাংশ সদস্যই অন্য পেশায় তাদের ক্যারিয়ার গড়েছেন। যার কারণেই আমার আলাদা প্রোডাকশন হাউজ করা’—বলেন ভিকি।
অধিকাংশ পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তার সহকারীদের বাইরে কাজ করতে দেয় না। তারা নিজেরা পরিচালনা করতে চাইলে নানান অজুহাতে আটকে রাখে। এর ব্যতিক্রম দেখা যায় ভিকির ক্ষেত্রে। তার চার জন সহকারী আদিল খান, মুহতাসিম তকী, জাহিদ প্রীতম, মাসুদুল মাহমুদ রুহান আলাদাভাবে নির্মাণ করেছেন স্বল্পদৈর্ঘ্য, নাটক।
বিষয়টাকে খুব স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন ভিকি। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে কাজ করা প্রত্যেক সহকারীই আমার পরিবারের অংশ। তারা আমার কাছে এসে পরিচালক হবার স্বপ্ন নিয়ে। আমার তো অধিকার নেই, সে স্বপ্নে বাধা দেওয়ার। যার কারণে তারা বাইরে কাজ করার পরও আমার এখানেও নিয়মিত।’
ভিকি প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভালোবাসা দিবসের জন্য নাটক নির্মাণের জন্য। এবার তিনি নির্মাণ করবেন চারটি নাটক। তবে বুকের মধ্যখানে সিনেমা নির্মাণের স্বপ্নটাকে খুব যত্নে লালন করে যাচ্ছেন। ক্রেডিট টাইটেলে লেখা উঠবে, ‘অ্যা ফিল্ম বাই ভিকি জাহেদ’।