বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা লতা মঙ্গেশকরকে!
২৮ নভেম্বর ২০২০ ১৭:২০
ভারতীয় সংগীত জগতের সম্রাজ্ঞী বলা হয় তাকে। তার মিষ্টি মধুর কন্ঠ আজও দোলা দেয় শ্রোতাদের মনে। এই উপমহাদেশের মানুষদের তার কণ্ঠ দিয়ে জাদু করে রেখেছেন সেই চল্লিশের দশক থেকে। বলা হয়, যতদিন সংগীত জীবিত থাকবে মানুষের স্মৃতিতে, ততদিন তার কণ্ঠের হাজারেরও বেশি গান নিয়ে যিনি উজ্জ্বল হয়ে থাকবেন, তিনি ভারতীয় সঙ্গীত জগতে এক নক্ষত্র- সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর।
কিন্তু এই উজ্জ্বল নক্ষত্রকেও বিষ খাইয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্লো পয়জন। যাতে কেউ টের না পায়, আর অসুস্থ হয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যান ভারতীয় সংগীতের সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর।
এই ঘটনাটি ঘটে ছয়ের দশকে। এতদিন এই বিষয় নিয়ে কিছু না বললেও এবার সেই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন প্রবাদপ্রতীম শিল্পী। ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের কাছে ১৯৬৩ সালে ঘটা সেই ঘটনার কথা বিস্তারিত জানিয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। ততদিনে প্রতিষ্ঠিত সংগীতশিল্পী তিনি। জানিয়েছেন, আচমকা কিছুদিন ধরে খুব দুর্বল বোধ করতে থাকেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায় চলে গিয়েছিল যে কারও সাহায্য ছাড়া বিছানা থেকে উঠতে পারতেন না। ইন্ডাস্ট্রিতে খবর রটে গিয়েছিল যে লতা মঙ্গেশকর নিজের কণ্ঠ হারিয়েছেন। কিন্তু এমন কোনও সম্ভাবনাই ছিল না বলে জানান এই সংগীতসম্রাজ্ঞী।
সাক্ষাৎকারে কিংবদন্তি শিল্পী আরও জানান, প্রায় তিন মাস শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি। পারিবারিক চিকিৎসক ডা. আর পি কাপুরের অক্লান্ত পরিশ্রমে সুস্থ জীবনে ফিরতে পেরেছিলেন। আরও দু’জনের অবদান কোনওদিন ভুলতে পারবেন না লতা মঙ্গেশকর। প্রথমজন কবি তথা গীতিকার মজরুহ সুলতানপুরী। রোজ তিনি শয্যাশায়ী লতা মঙ্গেশকরের পাশে এসে বসতেন। তাকে কবিতা শোনাতেন। অসুস্থ সংগীতশিল্পী যে সাধারণ খাবার খেতেন, তিনিও তাই-ই খেতেন। দ্বিতীয়জন ছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায় অর্থাৎ হেমন্ত কুমার। তার জন্যই গানের জগতে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে পেরেছিলেন। লতাজির বাড়িতে গিয়ে তার মায়ের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে, ‘বিশ সাল বাদ’ সিনেমার জন্য গান গাওতে নিয়ে গিয়েছিলেন। কথা দিয়েছিলেন, সামান্যতম অসুবিধা হলেই নিজে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে যাবেন। তার জন্যই গাইতে পেরেছিলেন ‘কহি দীপ জ্বলে কহি দিল গানটি’।
কিন্তু কে বিষ দিয়েছিল লতা মঙ্গেশকরকে? প্রশ্নের উত্তরে কিংবদন্তি শিল্পী জানান, তার পরিবার সেই মানুষটির নাম পরে জেনেছিল। কিন্তু প্রমাণের অভাবে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। নিজের কর্মজীবনে ফিরে অতীতের স্মৃতি ভুলে যেতে চেয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর।
মজরুহ সুলতানপুরী লতা মঙ্গেশকর সুর সম্রাজ্ঞী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়