নায়িকা নূতনের অন্য রূপ
৪ ডিসেম্বর ২০২০ ১৫:৩০
নায়িকা মানে জমকালো রূপ, সাধারণের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে— এমনই মিথ প্রচলিত সমাজে। তাদের সাধারণের সঙ্গে মিশতে নেই, কথাও বলতে নেই— এমনটাই ভাবেন অনেকে। কিন্তু রঙিন পর্দার রূপালী ভূবনের আড়ালে তারাও রক্তমাংসের মানুষ। তাদেরও আছে মানবিক বোধ, প্রেম, ভালোবাসা। যুগে যুগে অনেক নায়ক-নায়িকা তাদের মানবিক কাজের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন। তেমনই এক অবতারে ধরা দিলেন ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রির সত্তর-আশি দশকের অন্যতম নায়িকা নূতন।
সেগুনবাগিচায় সারাবাংলার অফিসের পাশে একটি ওষুধের দোকান। তার সামনে ভ্যানওয়ালা শীতের পোশাক বিক্রি করছেন। একটু দূর থেকে নায়িকা নূতনকে দেখা গেল। তিনি শীতবস্ত্র কিনছেন। প্রথমে মনে হচ্ছিল তিনি নিজের জন্য কিনছেন। না, একটু পরে বোঝা গেল ঘটনা ভিন্ন।
তিনি তিন জন পথশিশুকে শীতের পোশাক কিনে দিচ্ছেন। তারাও পোশাক পেয়েছে বেশ খুশি। শুধু পোশাক নয়, তাদেরকে খাবার কেনার টাকাও দিলেন। তবে এর জন্য কোনো ধরনের আয়োজন ছিল না নূতনের।
এগিয়ে নূতনের কাছে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর জানালেন, তিনি প্রায়ই কাজটি করেন। আর এটাকে ঘটা করে প্রচারের কোনো বিষয়ও মনে করেন না তিনি। নূতন বলেন, ‘আমি আসলে মানবিক মূলবোধ থেকে এটা করি। শুধু এরকম তিন জন না, আরও অনেককেই আমি আজকেই শীতবস্ত্র ও খাবার কিনে দিয়েছি। আমার ভালো লাগে মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে।’
যে তিন জন পথশিশুকে শীতবস্ত্র দিয়েছেন, তাদের সঙ্গে নূতনের পরিচয় রমনা পার্কে। সেখানে হাঁটতে গিয়ে তাদের সঙ্গে তার সখ্য।
ফোন বের করে ছবি দেখালেন, ৫০টি কম্বল কিনেছেন তিনি। এগুলো তিনি শীতার্ত মানুষদের মধ্যে বিতরণ করবেন।
১৯৭০ সালে মুস্তফা মেহমুদ পরিচালিত ‘নতুন প্রভাত’ ছবির মাধ্যমে নূতনের চলচ্চিত্রে অভিষেক। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘ওরা এগার জন’-এ একজন বীরাঙ্গনার চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হন তিনি। পাঁচ দশকের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন শতাধিক চলচ্চিত্রে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছবি হচ্ছে—বসুন্ধরা, ওরা এগার জন, সংগ্রাম, স্ত্রীর পাওনা, অলংকার।
তিনি ১৯৯১ সালে ‘স্ত্রীর পাওনা’ ছবিতে ‘শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী’ হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।