চলতি বছরের শেষ শুক্রবার ২৫ ডিসেম্বর। ওই দিন মুক্তি পাবে দুইটি সিনেমা। চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশ সমিতির দেওয়া তথ্য বলছে, ওই দুইটি ছবিসহ এ বছর ১৬টি ছবি মুক্তি পেতে যাচ্ছে। এ তালিকার বাইরে এরই মধ্যে মুক্তি পেয়েছে ‘রূপসা নদীর বাঁকে’। সব মিলিয়ে এ বছর মুক্তি পাওয়া সিনেমার সংখ্যা ১৭টি, যা স্বাধীনতার পরে সবচেয়ে কম।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের কারণে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে ছবি মুক্তি পেয়েছিল মাত্র ৯টি। আর স্বাধীনতার পর প্রথম তিন বছর ছবি মুক্তির সংখ্যা ছিল ৩০টি করে। ১৯৭৫ সালে এ সংখ্যা হয় ৩৪। এরপর থেকে কোনো বছরই এ সংখ্যা চল্লিশের নিচে নামেনি। এমনকি আশির দশকের পর একবছরে সবচেয়ে কম মুক্তি পায় গত বছর, সেখানেও সংখ্যা ছিল ৪২টি।
প্রযোজক সমিতির তালিকা অনুযায়ী বছরের শুরুতে ১০ জানুয়ারি মুক্তি পায় ‘জয়নগরের জমিদার’। এরপর ২৪ জানুয়ারি মুক্তি পায় আমদানি করা ভারতীয় ছবি ‘হুল্লোর’, ৭ ফেব্রুয়ারি ‘গণ্ডি’, ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘বীর’, ২১ ফেব্রুয়ারি আমদানি করা ভারতীয় বাংলা ছবি ‘রবিবার’ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘হৃদয় জুড়ে’। ৬ মার্চ মুক্তি পায় তিনটি ছবি—‘শাহেন শাহ’, ‘চল যাই’ ও ‘হলুদ বনি’।
১৮ মার্চ থেকে করোনা মহামারির কারণে দেশের সব সিনেমা হল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ৭ মাস বন্ধ থাকার পর ১৬ অক্টোবর থেকে আবার চালু হয় সিনেমা হল। ওই দিন মুক্তি পায় ‘সাহসী হিরো আলম’ ছবিটি। পরের সপ্তাহে ২৩ অক্টোবর মুক্তি পায় ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’।
‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’-এর প্রায় দেড় মাস পর ১১ ডিসেম্বর মুক্তি পায় ‘বিশ্বসুন্দরী’। প্রযোজক সমিতির তালিকায় নাম না থাকলেও ওইদিন মুক্তি পায় ‘রূপসা নদীর বাঁকে’। ১৮ ডিসেম্বর মুক্তি পায় দু’টি ছবি— ‘একজন মহান পিতা’ ও ‘সুবর্ণ রেখা’।
সমিতির তালিকা অনুযায়ী বছরের শেষ সপ্তাহে মুক্তি পাবে ‘তুই আমার রাজা আমি তোর রাণী’ এবং ‘গোর’ ছবি দুটি।
করোনাভাইরাস ও ছবি কম নির্মাণ দায়ী
এ বছর ছবি কম মুক্তির প্রধান কারণ হিসেবে ‘করোনাভাইরাস’কে দায়ী করছেন প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের সিনেমা হলগুলো ৭ মাস বন্ধ ছিল। যার কারণে অনেক ভালো ভালো ছবি এ বছর মুক্তি পায়নি। আবার হল খোলার পর দর্শক কম যাওয়া ও করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি ঠিক না হওয়ায় অনেক প্রযোজক তাদের ছবি মুক্তি দিচ্ছেন না।’
করোনাভাইরাসের চেয়ে ছবি কম থাকাকে দায়ী করলেন রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হল মধুমিতার মালিক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ। তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে যখন হল বন্ধ করা হলো তখন কয়টা ছবি মুক্তি পেয়েছিল? তখন কেন ৩ মাসে ১০টা ছবিও মুক্তি পায় নাই? প্রতি সপ্তাহে অবশ্যই জনপ্রিয় ধারার ২টি করে ছবি দিতে হবে। না হলে অধিকাংশ হল মালিকরা হল খুলবে না। আর যদি বাংলা ছবি না দিতে পারেন, তাহলে আমাদের ভারতীয় ছবি দেন। হিন্দি ছবি দেন। না হলে ব্যবসা পরিবর্তন করতে হবে।’