Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কবিতার নেশা থেকে ক্যামেরার কবি

আহমেদ জামান শিমুল
১১ মার্চ ২০২১ ১৮:৪৭

এবারের ভালোবাসা দিবসের অন্যতম আলোচিত ও দর্শকপ্রিয় নাটক ‘মাজনু’, ‘ছন্দপতন’, ‘লাভার্স ফুড ভ্যান’ ও ‘বেস্ট ফ্রেন্ড ৩’। নাটকগুলোর ক্যামেরায় কাজ করছেন বিদ্রোহী দীপন। নাটকগুলোর কাহিনি, নির্মাণের পাশাপাশি দীপনের সিনেমাটোগ্রাফি প্রশংসিত হয়েছে সব মহলে।

দীপনের প্রকৃত নাম মো. মেহেদী রহমান। নিজের স্বপ্নপূরণ ও সবার কাছে আলাদা পরিচিতির জন্য এ ছদ্মনাম। আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বন্ধুদের সঙ্গে ফিল্ম ক্লাব করতেন। যুক্ত ছিলেন ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সঙ্গে। ওখান থেকে এক সময় ধীরে ধীরে সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে কাজ শুরু করেন।

বিজ্ঞাপন

কেন আসলেন এ পেশায়?

‘কেন এলাম এর উত্তর নেই। যেমন কিছু ভালোবাসার কোনো কারণ হয় না। তবে যা ভাবছি, সেটা পর্দায় ফুটিয়ে তোলার মধ্যে আলাদা একটা সৃষ্টিসুখ আছে, যেটা আমাকে সবসময় টানে। তারপরও যদি বলেন কিভাবে আসা, তাহলে এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে পেয়েছি আমি স্কুলে থাকতে ডায়েরি লিখতাম। পরে টুকটাক কবিতাও লেখার চেষ্টা করতাম। একটা সময় এ ভাবনার মাধ্যম হিসেবে কলমের জায়গায় ক্যামেরা এসে গেছে,’— বলেন দীপন।

বিজ্ঞাপন থেকে সিনেমা— বিচরণ সবখানে

এ পেশায় তার সে অর্থে কোনো গুরু নেই। তিনি পেয়েছেন দারুণ কিছু শিক্ষক। তাদের মধ্যে তিনি স্মরণ করলেন রাশেদ জামান, রাফে মাহমুদ, সামীর মহাজন, নাজনীন সুলতানা চৈতি ও শাফিউল আলম শাফির নাম।

সিনেমাটোগ্রাফিতে নিজেকে দক্ষ করতে গিয়েছেন মুম্বাইয়ে। সেখানকার ডিজিটাল একাডেমি ফিল্ম স্কুল থেকে সিনেমাটোগ্রাফি নিয়ে পড়ালেখা করেছেন। কোর্স শেষ করে নিয়মিত কাজ করছেন দেশের নাটক, বিজ্ঞাপনে।

বিজ্ঞাপন

কাজ করেছেন সিনেমাতেও। সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে নির্মাণ করেছেন সাদাত হোসেনের ‘গহীনের গান’ এবং আসাদ জামানের ‘জলঘড়ি’। দু’টি ছবিই বোদ্ধা মহলে প্রশংসিত হয়েছে।

নেটফ্লিক্সের ‘এক্সট্রাকশন’-এর বাংলাদেশ অংশে বিখ্যাত সিনেমাটোগ্রাফার থমাস নিউটন সিজেলের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল।

যা কিছু চ্যালেঞ্জ

এ দেশে শিল্প-সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত যেকোনো পেশার মানুষকেই নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। দীপনও জানালেন তিনি কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন।

“শুরু থেকেই চ্যালেঞ্জ ছিল। প্রথমত, পরিবারকে মানানোর একটা ব্যাপার তো থাকেই। আবার হুট করে অনেকে যখন শোনেন সিনেমাটোগ্রাফার, তখন উত্তর আসে—‘আর কী করেন!’ আবার কাজ শুরু করতে চাইলেন, কিন্তু আপনার পরিচিত কেউ নেই। তাহলে কেউ আপনাকে সুযোগ দিতে চাইবে না। এছাড়া কম বাজেটে কম সময়ে ভালো কাজ করার চ্যালেঞ্জ তো প্রতিনিয়তই আছে,”— বলেন দীপন।

আকাঙ্ক্ষা— মানুষের মনে রাখার মতো কাজ করা

সব মানুষেরই স্বপ্ন থাকে। বিশেষ করে মিডিয়ায় যুক্ত মানুষেরা তো প্রত্যেকেই স্বপ্নবাজ। এমন স্বপ্ন রয়েছে দীপনেরও। তবে সে স্বপ্ন এমন বড় কিছু নয়।

দীপনের ভাষায়, ‘স্বপ্ন দেখি এমন কিছু কাজ করার, যেন মানুষ ভুলে না যায়। এমন কিছু কাজ, যা মানুষ মনে রাখবে। এমন কাজ করতে চাই, যে কাজের জন্য আমার সন্তানেরা তার বাবাকে নিয়ে গর্ব করতে পারে।’

সারাবাংলা/এজেডএস

ক্যামেরার কবি বিদ্রোহী দীপন