‘মিডিয়া ডিরেক্টর’রা পরিচালক সমিতির নির্বাচনে বড় ‘ফ্যাক্ট’
১৬ মার্চ ২০২১ ১৭:৩৭
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির ২০২১-২২ মেয়াদের নির্বাচন আগামী ২ এপ্রিল। এবারের নির্বাচনে ১৯টি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন ৪২ জন। প্যানেল হয়েছে ৩টি। প্যানেলগুলো হলো— সোহানুর রহমান সোহান-শাহীন সুমন, কাজী হায়াৎ-এস এ হক অলিক এবং শাহ্ আলম কিরণ-সাফি উদ্দিন সাফি। এবারের নির্বচানে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্ট হিসেবে দেখা হচ্ছে ‘মিডিয়া ডিরেক্টর’ ভোটার ও প্রার্থীদের।
মূলত টেলিভিশন নাটক, বিজ্ঞাপন নির্মাণ করে কিংবা চলচ্চিত্র জগতের বাইরে থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণেে এসেছেন তাদের ‘মিডিয়া ডিরেক্টর’ হিসেবে চিহ্নিত করেন বাণিজ্যিকধারার পরিচালকরা ।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সবচেয়ে শক্তিশালী এ সংগঠনটিতে আগের নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে যারা সহকারী পরিচালকদের সংগঠন সিডাব থেকে সদস্য হয়েছেন তাদের ভোট অনেক বড় ফ্যাক্ট হিসেবে কাজ করতো। যারা পূর্বে টেলিভিশনে নাটক নির্মাণ করে পরবর্তীতে চলচ্চিত্রের পরিচালক হয়েছেন, সমিতিতে তাদের সংখ্যা ছিল হাতে গোণা। এবারের নির্বাচনের সর্বমোট ভোটার সংখ্যা ৩৬১। যার মধ্যে ৯১ জন আছেন টেলিভিশন নাট্য পরিচালকদের সংগঠন ‘ডিরেক্টরস গিল্ড’র সদস্য। যাদের নিয়েই হচ্ছে ভোটের জয় পরাজয়ের হিসাব-নিকাশ।
এবারের নির্বাচনে সম্পূর্ণ নতুন প্রার্থী হয়েছেন এদের মধ্যে মনিরুল ইসলাম সোহেল, সাইফ চন্দন, নোমান রবিন, মুরাদ পারভেজ, রফিক সিকদার, ডা. বুলবুল বিশ্বাস, মাসুমা তানি ও দীপঙ্কর দীপনকে ‘মিডিয়া ডিরেক্টর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া রয়েছেন এস এ হক অলিক, শাহীন কবির টুটুল। এদের প্রত্যেকেই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে আভাস পাওয়া গেছে।
সারাবাংলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, মূলত পরিচালক সমিতিতে নিজেদের কথা বলতে এবং তরুণ নেতৃত্ব আনতে সমমনা কয়েকজন পরিচালক মিলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার উদ্যোগ নেন। তারা নিজেদের মধ্যে মিটিং করে ঠিক করেন কারা কারা প্রার্থী হবেন। যার কারণে শুধু ভোটার নন এমন প্রার্থীরাও নির্বাচনে বড় ফ্যাক্ট হিসেবে কাজ করবে। মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন এমন কয়েকজন সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে নিজেদের ‘মিডিয়া ডিরেক্টর’ এমন শব্দযুগলে বন্দী করতে চান না কেউই। কার্যনির্বাহী সদস্যপ্রার্থী ডা. বুলবুল বিশ্বাস বলেন, ‘এভাবে না বলে আপনি তরুণ পরিচালক বলতে পারেন। এতদিন বলা হতো নির্বাচনে কেন তরুণ পরিচালকরা প্রার্থী হন না। এবার কিন্তু দেখবেন তিনটি প্যানেল থেকেই প্রবীণ পরিচালকদের পাশাপাশি তরুণ পরিচালকদের প্রার্থী করা হয়েছে। আমরা প্রবীণদের দেখানো পথে নিজেদের মেধা ও উদ্যোম দিয়ে সমিতিকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’
একই সুর সাইফ চন্দনের কথায়। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে সবসময় তরুণরা নেতৃত্ব দেয়। আর তাদের মাথার উপর ছায়া থাকেন বয়োজ্যেষ্ঠরা। আমরা কিন্তু তাদের বাদ দিয়ে কিছু করতে পারব না। তাদের অভিজ্ঞতা ও আমাদের উদ্যোম বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।’
দীপঙ্কর দীপন বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিচালকদের নিয়ে কাজ করার অনেক জায়গা আছে। তাই নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
নিজেদেরকে বড় ফ্যাক্ট হিসেবে মনে করেন কি না? এ ব্যাপারে সরাসরি মন্তব্য করতে রাজি হননি কোনো তরুণ প্রার্থী। তবে কয়েকজন প্রার্থী সারাবাংলাকে বলেছেন, এতদিন আমাদেরকে নানাভাবে উপেক্ষা করা হতো। মিডিয়া ডিরেক্টর হিসেবে আলাদাভাবে চিহ্নিত এবং অবহেলা করা হতো। যেখানে চার বছর আগেও আমাদের মধ্যে যাদের বিশেষ শ্রেণিভুক্ত করা হতো সেই সংখ্যা ছিলাম ২০-২৫ জন। অথচ এবার ৯১ জন বলা হলেও বাস্তবে এ সংখ্যা শতাধিক। তাই আমাদের বাদ দিয়ে কোনো প্রার্থীরই নির্বাচনে জয় লাভ করা অসম্ভব।
সারাবাংলা/এজেডএস/পিটিএম