উন্নতি হয়নি কাজী হায়াতের শারীরিক অবস্থার
২২ মার্চ ২০২১ ১৪:৩৬
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী নির্মাতা কাজী হায়াতের শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভাল নেই। রোববার বিকেল থেকে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার অবস্থার খুব একটা উন্নতি হয়নি। এমনটা জানিয়েছেন তার পাশে থাকা চলচ্চিত্র প্রযোজক বিপ্লব শরীফ।
তিনি বলেন, ওনাকে (কাজী হায়াৎ) গত রাতে ৪০ লিটার অক্সিজেন দেওয়া হয়েছিল। আজকে ১৫ লিটার। আসলে দুই দুই বার ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়েছে তো, তাই হয়তো ওনাকে করোনা বেশি কাবু করে ফেলেছে। কিন্তু আগে সার্জারি করানোর কারণে ওনাকে শুধু স্যালাইনের উপর রাখা যাচ্ছে না। ওনাকে খাওয়াতে হচ্ছে।’
‘ওনার ছেলে কাজী মারুফ বাসা থেকে স্যুপ বানিয়ে এনেছে। নার্সের কাছে দিয়েছেন ওনাকে খাওনার জন্য। এ কদিন মামী (কাজী হায়াতের স্ত্রী) ছিলেন ওনার পাশে। ওনারো করোনা পজেটিভ ছিল। কিন্তু শ্বাস কষ্ট না থাকায় ডাক্তাররা বলছেন মামীর করোনা নেগেটিভ হয়ে গেছে। উনি চাইলে বাসায় চলে যেতে পারেন। তবে আমরা মামীর আবার করোনা টেস্ট করতে দিয়েছি। রেজাল্ট নেগেটিভ আসলে তারপর ওনাকে বাসায় যেতে দিব। মামী ছাড়া ওনার পাশে ওনার মেয়ে মীমও হাসপাতালে ছিলেন, তবে সে বাসায় চলে গেছে।’
বিপ্লব আরও বলেন, ‘ওনার ফুসফুসের ৪০ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছে। এখন আসলে যা পরিস্থিতি তাতে একমাত্র আল্লাহ্ পারেন কাজী হায়াতকে সুস্থ করতে। আমরা সবার কাছে দোয়া চাইছি।’
২ মার্চ করোনার প্রতিষেধক টিকা নেন কাজী হায়াৎ। এরপর ৬ মার্চ সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। দুজনই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তবে কাজী হায়াতের শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এতদিন হাসপাতালের সাধারণ কেবিনেই কাজী হায়াতের চিকিৎসা চলছিল। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
১৯৪৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন কাজী হায়াৎ। ১৯৭৪ সালে তিনি মমতাজ আলীর সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। কাজ করেন বিখ্যাত পরিচালক আলমগীর কবিরের সহকারী হিসেবেও।
পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ১৯৭৯ সালে ‘দি ফাদার’ দিয়ে। কিন্তু ছবি ভালো না চালায় তিনি বাণিজ্যিক ধারার ছবি নির্মাণে মনযোগ দেন।
সেখানে সামাজিক বক্তব্যধর্মী বিভিন্ন বিষয়ে ছবি নির্মাণ করে একের পর এক সুপার হিট ছবি উপহার দেন। তিনি ৫০টির মত ছবি পরিচালনা করেছেন। তার পরিচালিত সবশেষ ছবি ‘বীর’।
তার পরিচালিত বিখ্যাত ছবির মধ্যে রয়েছে ‘দাঙ্গা’, ‘ত্রাস’, ‘চাঁদাবাজ’, ‘দেশপ্রেমিক’, ‘আম্মাজান’, ‘ইতিহাস’, ‘কাবুলিওয়ালা’ ও ‘ওরা আমাকে ভালো হতে দিল না’।
তিনি মান্নাকে দিয়ে একের পর এক উপহার দিয়েছেন সুপারহিট ছবি। মান্নার সঙ্গে মানসিক দূরত্ব সৃষ্টি হলে নিজের ছেলে কাজী মারুফকে নায়ক হিসেবে ব্রেক দেন। কাজী মারুফ অল্প কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছেন। কিন্তু তিনিও সুপারহিট ছবি উপহার দিয়েছেন অনেক।
সারাবাংলার সঙ্গে গেল ১৫ ফেব্রুয়ারিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, করোনাকাল গেলে মারুফকে নিয়ে তার পরবর্তী ছবির কাজ শুরু করবেন।
সারাবাংলা/এজেডএস