‘ভয়টা কাটাতে হবে, ভালো ছবি দিয়ে’
৪ মে ২০২১ ১৫:২৩
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি এ মুহুর্তে খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে ভালো ছবির অনেক অভাব। যাও কালে ভদ্রে দু-চারটা ছবি হচ্ছে তা সিনেমা হলের দুর্দশার কারণে দর্শক দেখতে আসছে না। এর উপর সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে করোনার প্রকোপ। করোনার কারণে গত বছর প্রায় ৭ মাস বন্ধ থাকার পর হল খুললেও দর্শক যায়নি সিনেমা হলে। এবার আবার লকডাউন চলছে। তবুও আশাবাদী ইন্ডাস্ট্রির কর্তাব্যক্তিরা। তাদের আশা দর্শক আবার হলে যাবেন, তবে তাদেরকে ভালো ছবি দিয়ে ভয়টা কাটাতে হবে।
প্রবীণ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও মধুমিতা হলের কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেছেন, ‘গত বছর কিন্তু হল খুলে ছিল। কিন্তু দর্শক আসেনি। এখন আমাদের যেটা দরকার বড়বড় একটা ধাক্কার। নতুন আইডিয়ার, নতুন নতুন ছবির। আর এটা শুধু সম্ভব মহামারীর পরে। আমেরিকায় আমার বোন থাকে, সে জানালো ডিজনির একটা ছবির সাড়ে ৪টার শোতে সে একা দর্শক ছিল। আমাদের এখানে আমি তিনটা ছবি (হলিউডের ছবি) মুক্তি দিয়েছি স্টার সিনেপ্লেক্সে। তাদের ওখানে ২২ হাজার টাকা এসেছিল ২ সপ্তাহে। এর মধ্যে ১৫ হাজার টাকা তারা স্ক্রিনিং ফি বাবদ কেটে নিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত শেয়ার মানি হিসেবে পেয়েছি ৭ হাজার টাকা। তারা বললো তাদের সিনেমা হলে দর্শক আসছে না। এই ভয়টা কাটাতে হবে, ভালো ছবি দিয়ে কাটাতে হবে।’
‘ভালো ছবি ২টা, ৪টা মুক্তি পেলেই হাউজফুল হবে তা না। কিন্তু আস্তে আস্তে মানুষের আস্তার জায়গাটাকে বাড়াতে হবে। কারণ আমাদের জীবনে বিনোদনের দরকার আছে।’
সারাবাংলার নিয়মিত আয়োজন ‘সারাবাংলা ফোকাস’-এ সোমবার (৩ মে) এ কথাগুলো বলেন ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ। সারাবাংলার সিনিয়র নিউজরুম এডিটর রাজনীন ফারজানার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানটির বিষয় ছিল ‘চলচ্চিত্রে সংকট’। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, চলচ্চিত্রাভিনেতা এবিএম সুমন ও শিমুল খান।
শিমুল ও এবিএম সুমন জানান করোনাকালে তারা খুব একটা চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে পারেননি। দুজনেই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের বাইরে কোন পেশার সঙ্গে যুক্ত নন। এবিএম সুমন জানান, তিনি শুধু ‘হৃদিতা’ নামক একটি ছবিতেই অভিনয় করেছেন।
অন্যদিকে শিমুল খান ৩টি ছবি, ৩টি ওয়েব সিরিজ ও ৪টি নাটকে অভিনয় করেছেন। নাটক ও ওয়েব সিরিজে অভিনয়কে শিমুল বলছেন, বেঁচে থাকার তাগিদে করা।
সোহানুর রহমান বলেন, ‘আমাদেরকে নতুন সময়ের গল্প বলতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজার তৈরি করতে হবে।’
ওই সময়ে অভিনেতা শিমুল খান বলেন, ‘ভিন্নধর্মী গল্প কি সেন্সর পাবে? রাজনৈতিক কিংবা অপরাধ নিয়ে ছবি বানালে কি তা সেন্সর পাবে?’
এ ব্যাপারে এবিএম সুমন বলেন, ‘আমরা আসলে সব কিছু সরাসরি দেখাতে চাই। তা না করে বিনোদনের মাধ্যমে উপস্থাপন করলে সেন্সর বোর্ডের আটকানোর সুযোগ থাকে না।’
১ ঘণ্টার আলোচনায় আরও উঠে এসেছিল ওটিটি প্ল্যাটফর্মের বিষয়টি। সবাই একমত হয়েছেন যে, ‘ওটিটি কখনও সিনেমা হলের বিকল্প হবে না’।
সারাবাংলা/এজেডএস
ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ এবিএম সুমন শিমুল খান সারাবাংলা ফোকাস সোহানুর রহমান সোহান