অক্সিজেনের মাত্রা কম, সন্ধ্যা রায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি
৯ মে ২০২১ ১৯:৫৮
করোনা আক্রান্ত বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। শুক্রবার (৭ মে) অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন আশি বছরের এই অভিনেত্রী। প্রথমে গায়ে জ্বর নিয়ে ভর্তি হলেও করোনার উপসর্গ থাকায় অভিনেত্রীকে রাখা হয়েছিল আইসোলেশন ওয়ার্ডে। নমুনা পাঠানো হয়েছিল পরীক্ষার জন্য। তার করোনার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। ক্রমশ শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর। তার রক্তে অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল কমে গিয়েছে। রোববার (৯ মে) বিকেলে অভিনেত্রীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল ৯৪-তে নেমে আসে বলে হাসপাতাল সুত্রে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সুত্রে আরও জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যা রায়কে বাইপাসের হাসপাতাল থেকে উডল্যান্ড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে ইতিমধ্যেই ক্লাস ফোর টাইপ স্টেরয়েড দেওয়া হয়েছে অভিনেত্রীকে। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রসূন মিত্রের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের মেডিক্যাল টিমের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে প্রবীণ অভিনেত্রীর। রোববার বিকেল পর্যন্ত অভিনেত্রীর পালস রেট ৬৮-র কাছাকাছি ছিল জানানো হয়েছে। রক্তচাপ সর্বোচ্চ ১৩০ এবং সর্বনিম্ন ৮০। ওঠানামা করছে সুগার লেভেলও। হাইপারটেনশন ও হাই ডায়াবেটিস রেয়েছে, এমনকি কিডনি ঘটিত সমস্যাও রয়েছেন তার।
এদিকে, সন্ধ্যা রায়ের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন ভক্ত ও অনুরাগীরা। তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন টলিউডের কলাকুশলীরাও।
পশ্চিমবাংলার নবদ্বীপে জন্ম সন্ধ্যা রায়ের। অভিনেত্রীর জন্মের কিছুদিন পর বাংলাদেশে ছিলেন তার পরিবার। পরে ১৯৫৭ সালে আবার ভারতে পাড়ি দেন সন্ধ্যা রায়। সাদা কালো থেকে রঙিন, বাংলা সিনেমায় দীর্ঘ ২৫ ধরে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন সন্ধ্যা রায়। মাত্র ১৬ বছর বয়সে রুপোলি জগতে পা রাখেন তিনি। তার প্রথম ছবি ১৯৫৭ সালে ‘মামলার ফল’। ‘মায়া মৃগ’, ‘পলাতক’, ‘গণদেবতা’, ‘বাঘিনী’, ‘অশনী সংকেত’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভ্রান্তিবিলাস’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘বাবা তারকনাথ’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। আটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে প্রথমসারির অভিনেত্রী হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন সন্ধ্যা রায়। তরুণ মজুমদার পরিচালিত ‘গণদেবতা’ সিনেমায় অভিনয় করার জন্য পেয়েছিলেন ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড। পাশাপাশি BFJA এবং কালাকার অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছিলেন এই অভিনেত্রী।
অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতির ময়দানেও সমান সফল তিনি, ২০১৪ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে নির্বাচন লড়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৯-এর নির্বাচনে বয়সজনিত কারণে নিজেই সরে দাঁড়ান বর্ষীয়ান এই অভিনেত্রী।