এবার ইন্সটাগ্রাম থেকেও ‘বিতাড়িত’ হওয়ার অপেক্ষায় কঙ্গনা!
১০ মে ২০২১ ১৭:৫৯
পশ্চিমবাংলায় ভোটের রায় প্রকাশের আগে থেকেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লাগাতার ‘বিষোদগার’ করছিলেন বলিউডের কন্ট্রোভার্সি ক্যুইন কঙ্গনা রানাওয়াত। ফলাফল ঘোষণার পর পশ্চিমবাংলায় হিংসা ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগ তুলে একের পর এক পোস্টও করেছিলেন। এমনকী মোদিকে বাংলা ‘সামলানো’র আর্জিও জানিয়েছিলেন তিনি। তার পরপরই বিতর্কিত মন্তব্য করার দায়ে সাসপেন্ড করা হয় বলিউড অভিনেত্রীর টুইটার অ্যাকাউন্টটি। সঙ্গে বিবৃতি দিয়ে ট্যুইটারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ট্যুইটার ব্যবহারের কোনও শর্তাবলীই মানছিলেন না কঙ্গনা। বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের জন্যই তার ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করা হয়েছে। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উটেন কঙ্গনা। স্পষ্টভাবেই জানিয়েছিলেন তার কাছে অন্য প্ল্যাটফর্ম মজুত রয়েছে, যেখানে তিনি নিজের মতামত জাহির করতে পারবেন। এবং তাকে নির্বাসিত করে টুইটার প্রমাণ করে দিয়েছে তাদের নিজেদের অবস্থান।
এরপর শনিবার (৮ মে) সকালেই করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর জানিয়ে ‘করোনাকে ধ্বংস করব’ লিখে নিজের একটি ধ্যানমগ্ন ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছিলেন তিনি। কিন্তু সে পোস্ট ডিলিট করে দেয়া হয়েছে। কঙ্গনার দাবি, ওই সোশ্যাল নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে তা মুছে দেওয়া হয়েছে। আর এর পিছনে হাত রয়েছে, ‘কোভিড ফ্যান ক্লাবের’।
আর এর পরপরই কঙ্গনা দাবি করেন, ইনস্টাগ্রাম তাকে নিষিদ্ধ করলে সেটা তার কাছে সম্মানজনক ব্যাজ হবে। তিনি আরও বলেন, তিনি নিজেকে এমন একজন হিসেবে স্মরণ করবেন যিনি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার সাহস করেছিলেন এবং তাদের অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন।
সোমবার (১০ মে) ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে কঙ্গনা লেখেন, ‘ইনস্টাগ্রামের সকলেই পুঁজিবাদের শিকার। পুঁজিবাদ ও গ্রাহকতাবাদের স্বরূপ যুবসমাজের পুরো প্রজন্ম তাদের জাতীয় উদাসীনতা এবং দেশকে অসম্মানিত করে তুলেছে এবং এই সংকট উদ্বেগজনক। মানবিক মূল্যবোধ-সহানুভূতি এবং জাতীয়তাবাদের অভাব তাদেরকে কুৎসিত অগভীর এবং অকেজো করে তোলে.. এই প্ল্যাটফর্মটি কখনই আমাকে আবেদন করেনি এবং আমি অধীর আগ্রহে এখানে নিষিদ্ধ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি, এটা সম্মান জনক ব্যাজ হবে।’
প্রসঙ্গত, নিজের ইনস্টা স্টোরিতে কঙ্গনা লিখেছিলেন, ‘ইনস্টাগ্রাম আমার করোনাকে ধ্বংস করব পোস্ট ডিলিট করেছে, কারণ কেউ নাকি কষ্ট পেয়েছে এতে! সাম্যবাদ ও সন্ত্রাসবাদ-এর প্রতি সহানুভূতিশীল মানুষ এর আগে দেখেছি, কিন্তু করোনা ফ্যান ক্লাব নতুন!… মাত্র ২ দিন ইনস্টাগ্রামে আছি। এখন মনে হচ্ছে এটাও থাকবে না।’ নিজের পোস্টের সঙ্গে অনেকগুলো লাফিং ইমোজিও ব্যবহার করেছেন কঙ্গনা রানাওয়াত।
উল্লেখ্য, সোমবার (৩ মে) রাতে পশ্চিমবাংলার ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে বিতর্কিত টুইটের কারনেই কঙ্গনার অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড হয়েছে। টুইটারে নিয়মবিধি ভঙ্গ করে, সেই টুইটে হিংসা ছড়ানোর বার্তা দেন এই অভিনেত্রী। বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তর এক টুইটের প্রেক্ষিতে কঙ্গনা হিংসায় প্ররোচনা দিয়ে লেখেন- ‘এটা ভয়ঙ্কর… গুন্ডাগিরি মেরে ফেলার জন্য আমাদের সুপার গুন্ডাগিরির প্রয়োজন… তিনি (মমতা) শেকলহীন দানবের মতো, তাকে দমন করার জন্য দয়া করে ২০০০ সালের প্রথম দিকের বিরাট রূপটা দেখান মোদিজী।’
তার পরপরই বিতর্কিত মন্তব্য করার দায়ে সাসপেন্ড করা হয় বলিউড অভিনেত্রীর টুইটার অ্যাকাউন্টটি। সঙ্গে বিবৃতি দিয়ে ট্যুইটারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘আমরা বারবার জানিয়েছি কোনও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অনলাইনে অশান্তির বাতাবরণ সৃষ্টি করা হলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নেব। এই অ্যাকাউন্টটি একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আমাদের হেটফুল কনডাক্ট (ঘৃণা ছড়ানো) পলিসি ও অ্যাবিউসিভ বিহেবিয়ার (খারাপ ব্যবহার) পলিসি না মানার জন্য। আমরা নিশ্চিত করতে চাই টুইটারের সব ব্য়বহারকারীদের জন্যই এক নিয়ম মেনে চলি আমরা।’